ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে নোঙর করা তেলবাহী একটি জাহাজের ইঞ্জিনরুমে বিস্ফোরণে জাহাজের মাস্টারের মৃত্যু হয়েছে।
এ ছাড়া বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়েছেন আরও সাতজন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে জাহাজে বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটে।
ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম একজনের মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।
মৃত ওই ব্যক্তির নাম কামরুজ্জামান। তার বাড়ি গোপালগঞ্জে। তিনি জাহাজের সুকানি ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা একজনের মরদেহ উদ্ধার করেছি। সেই সঙ্গে আরও সাতজনকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের অবস্থা ভালো নয়।’
বিস্ফোরণের পর জাহাজ থেকে তেল খালাসের চেষ্টা করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ছবি: নিউজবাংলাঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে জাহাজের সুকানি আজিম হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পাম্প রুমে ৮ জন কাজ করছিল, রুমে ঢুকে দেখি কামরুল নামের ইঞ্জিনমিস্ত্রীর নিথর দেহ পড়ে আছে, আরও ৭ জন দগ্ধ হয়ে কাতরাচ্ছে। এরই মধ্যে জাহাজের অন্যান্য স্টাফরা ছুটে আসে। আমরা তখন ৯৯৯ নম্বরে ফোন করি। দ্রুত পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেন এবং হতাহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ঝালকাঠির কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা একটি লাশ উদ্ধার করেছি। এবং দগ্ধ ৭ জনকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছি।’
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) শরীফ ইকবাল বলেন, ‘ঝালকাঠিতে বার্ন ইউনিট না থাকায় দগ্ধ ৭ জনকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
রোগীদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পরে তাদের ঢাকা মেডিক্যালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিট ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বরিশালের সহকারী পরিচালক কোবাদ আলী সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিস্ফোরণে তলা ফেটে ৮ লাখ লিটার ডিজেল ভর্তি জাহাজটিতে পানি উঠতে থাকায় সেটি আস্তে আস্তে নিমজ্জিত হতে থাকে। দ্রুত তেল অপসারণ করা না হলে নদীর পানিতে ভেসে যাবে সব তেল। তবে এই ফাটল বন্ধ করা আমাদের সাধ্যের বাইরে।’
দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজটি পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী, পুলিশ সুপার ফাহিতা ইয়াসমিন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবেকুন্নাহার।
এ ছাড়া পুলিশ ও সিআইডি কর্মকর্তারা জাহাজ পরিদর্শন করেছেন।
দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত জাহাজের তেল অপসারণের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
পদ্মা অয়েল কোম্পানির ঝালকাঠি ডিপো সুপার (ডিএস) আখের আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জাহাজের তেল যেহেতু আমরা এখনো গ্রহণ করিনি, সেহেতু এই তেলের দায়দায়িত্ব জাহাজ কর্তৃপক্ষের। তবে আমরা আমাদের পাম্প মেশিন দিয়ে সহযোগিতা করেছি। জাহাজের পেছনের অংশের তেল সরিয়ে সামনের অংশের চেম্বারে নেয়া হচ্ছে।’
বিস্ফোরণে নিহত কামরুজ্জামানের মরদেহ ঝালকাঠি সদর থানায় নেয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য দুপুরেই সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান।