জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থিত ভাষা শহীদদের স্মরণে নির্মিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। অরক্ষিত শহীদ মিনারটি সারা বছরই থাকে অপরিচ্ছন্ন। ফেব্রুয়ারি মাস এলেই নড়ে বসে কর্তৃপক্ষ। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের এক-দুদিন আগে করা হয় পরিষ্কার।
সরেজমিনে দেখা যায়, শহীদ মিনারের চারপাশে থাকা রেলিংগুলোর বেশিরভাগ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। শহীদ মিনারের ভেতরে শিক্ষার্থীরা আড্ডা দেন। যেকোনো কিছু খেয়ে তার উচ্ছিষ্ট, খাবারের প্যাকেট, প্লাস্টিকের বোতল ফেলে যান।
সিঁড়ির টাইলস বেশ কয়েক জায়গায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে। দীর্ঘদিন কোনো যত্ন না নেয়ায় মিনারের সাদা রং উঠে কালো হয়ে গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, এটি আর সংস্কার করা সম্ভব নয়। নতুন ক্যাম্পাসে তারা নতুন শহীদ মিনার স্থাপন করবে।
দেশের অন্য যেকোনো শহীদ মিনারের চেয়ে ডিজাইনে আলাদা এই শহীদ মিনার। সাইনবোর্ড না থাকায় সাধারণ স্থাপত্য ভেবে জুতা পায়ে আড্ডা দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থী ও বহিরাগতদের।
শহীদ মিনারটির এমন অবস্থায় দুঃখ প্রকাশ করে সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ রহমান বলেন, ‘মাতৃভাষার রক্ষার্থে শহীদ হওয়া একমাত্র জাতি আমরা। এ সব শহীদদের স্মৃতি বিজড়িত শহীদ মিনারের এমন শোচনীয় অবস্থা আমাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক সংগঠন শহীদ মিনার পরিচ্ছন্ন রাখার অঙ্গীকার করলেও শহীদ দিবসের সময় ছাড়া এই অঙ্গীকার বাস্তবায়িত হয় না।’
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শিবলী নোমান বলেন, ‘শহীদরা হলেন আমাদের গর্ব। তাদের স্মরণে নির্মিত এই স্তম্ভ অযত্নে রাখা খুবই লজ্জার বিষয়। আমরা চাই শহীদ মিনারসহ ক্যাম্পাসের পরিবেশ সবসময় যেন পরিচ্ছন্ন রাখা হয়।’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ উন্নয়ন ও পরিচ্ছনতা কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ আবদুল কাদের নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শহীদ মিনার অপরিষ্কার হওয়ার বিষয়টি দেখেছি। কিন্তু শুধু ঝাড়ু দিয়ে ময়লা উঠছে না। গতকাল পরিবেশ উন্নয়ন এবং পরিচ্ছন্নতা কমিটির মিটিং করেছি। এই বিষয়টা আলোচনা হয়েছে, কাজ হয়ে যাবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অনেক শিক্ষার্থীই জুতা পায়ে বেদিতে উঠে। অনেক বহিরাগতও আসে। আমরা কয়েকজনকে সতর্কও করেছি। এরপর কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। সাইনবোর্ডও দ্রুতই লাগানো হবে।’