সম্পদ বিবরণীতে মিথ্যা তথ্য ও আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ অর্থ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
কুষ্টিয়ার বিশেষ বিচারক আশরাফুল ইসলামের আদালতে জামিন আবেদন করেন ওই প্রকৌশলী। বিচারক জামিন নাকচ করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কুষ্টিয়া পৌরসভার ওই প্রকৌশলীর নাম রবিউল ইসলাম।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন দুদকের আইনজীবী আল মুজাহিদ হোসেন মিঠু।
তিনি জানান, গত ২৮ সেপ্টেম্বর দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুষ্টিয়ার উপপরিচালক নীল কমল পাল বাদী হয়ে রবিউল ইসলাম ও তার স্ত্রী কামরুন্নাহারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে মামলা করেন।
মামলায় বলা হয়, দুদকে জমা দেয়া সম্পদ বিবরণীতে কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম ৩৬ লাখ ২ হাজার ৬৪১ টাকা সম্পদের মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৫২ লাখ ১৯ হাজার ৫৭৩ টাকার সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখার অপরাধ করেছেন তিনি। অন্যদিকে তার স্ত্রী কামরুন্নাহার স্বামীর অবৈধ অর্থকে বৈধ করার কাজে সহায়তা করেছেন।
এ মামলায় রবিউল ও তার স্ত্রী কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক কামরুন্নাহার অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে ছিলেন।
দুদকের ওই আইনজীবী জানান, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী রবিউল ইসলাম বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়ার আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন।
একই মামলায় আগামী ১৪ নভেম্বর কামরুন্নাহারের জামিন শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা রয়েছে বলেও জানান এই আইনজীবী।
এদিকে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রবিউল ও কামরুন্নাহারের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার আরও একটি মামলা করেছেন কুষ্টিয়ায় দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তা নীল কমল।
মামলার এজাহারে বলা হয়, কামরুন্নাহারের স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে মোট ৯১ লাখ ৭৩ হাজার ৫৯৯ টাকার সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক। এর মধ্যে অনুসন্ধান করে তার গ্রহণযোগ্য আয়, চাকরির বেতন-ভাতা ও রেমিট্যান্স প্রাপ্তি বাবদ ৫২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৪৭ টাকার তথ্য পাওয়া যায়।
বাকি ৩৯ লাখ ৩৪ হাজার ৬৫২ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে।
এ ছাড়া কামরুন্নাহার আয়কর রিটার্নে পারিবারিক ও দান মিলিয়ে মোট ব্যয়ের হিসাবে ৬৫ লাখ ৯৬ হাজার ২৯২ টাকা দেখিয়েছেন, যার মধ্যে স্বামীকে ৫০ লাখ টাকা দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ আছে।
এজাহারে এ বিষয়ে বলা হয়েছে, কামরুন্নাহারের সম্পদ অর্জনের প্রদর্শিত বৈধ উৎস ছাড়া অন্য কোনো আয় না থাকার পরও নিজের ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থকে বৈধ করতে স্ত্রীর কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা উপহার গ্রহণের মিথ্যা তথ্য দেন রবিউল। অবৈধ সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখতে সহায়তা করার কারণে রবিউলকে সহযোগী আসামি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা বলে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের বিষয়ে রবিউল সন্তোষজনক কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়।