করোনার বছরে দারুণ আয় করা ওষুধ ও রসায়ন খাতের তিন কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মা, এসিআই ও এমকি ল্যাবরেটরিজ চলতি বছর আরও বেশি হারে আয় করতে পারছে।
গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের আয় পর্যালোচনা করলে এই বিষয়টি উঠে আসে। তিনটি কোম্পানিরই আয় আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে।
কেবল আয় নয়, গত জুন শেষে শেয়ার প্রতি যে পরিমাণ সম্পদ ছিল, তিন মাস পর প্রতিটি কোম্পানিরই সম্পদ বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার কোম্পানি তিনটির পরিচালনা পর্ষদের সভা শেষে এই হিসাব প্রকাশ করা হয়। আরেক নামি কোম্পানি ইবনেসিনাও এর আগে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি আয় করার বিষয়টি প্রকাশ করে।
গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরেও এসব কোম্পানি আগের বছরের তুলনায় বেশি আয় করতে পেরেছিল।
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস
কোম্পানিটি এবার প্রথম প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি ৩ টাকা ২৮ পয়সা মুনাফা করেছে। আগের বছরের একই সময়ে এই আয় ছিল ২ টাকা ৪১ পয়সা।
বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকের পর এই বিষয়টি প্রকাশ করা হয়।
কেবল আয় নয়, সম্পদমূল্যও বেশ ভালো বেড়েছে কোম্পানিটির। গত জুনে সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ার প্রতি কোম্পানিটির সম্পদ ছিল ৮৩ টাকা ১ পয়সার। তিন মাস পর সেটি বেড়ে হয়েছে ৮৬ টাকা ৩১ পয়সা।
গত এক বছরে পুঁজিবাজারে যেসব কোম্পানির শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে, তার একটি এই কোম্পানিটি।
ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে ৩ কোটি ৪০ লাখ করোনার টিকা আমদানিতে মধ্যস্ততা করা বেক্সিমকো ফার্মা টিকাপ্রতি এক ডলার করে সরকার থেকে পাওয়ার কথা। তবে ভারত থেকে সব টিকা আসতে না পারায় পুরো আয় এই অর্থবছরে হয়নি কোম্পানিটির।
এই চুক্তির আলোচনা শুরু হওয়ার আগে আগে গত বছরের জুনে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৬০ টাকার ঘরে ছিল। তবে চুক্তি হওয়ার পর তা ২০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়।
এর মধ্যে বহুজাতিক কোম্পানি সানোফি বাংলাদেশের প্রায় ৫৫ শতাংশ শেয়ার অধিগ্রহণ করে বেক্সিমকো ফার্মা। এই খবরে শেয়ারদর আরও বেড়ে এক পর্যায়ে ২৫৫ টাকা ৪০ পয়সা হয়ে যায়। পরে অবশ্য তা কিছুটা কমে হয়েছে ২২৭ টাকা ৬০ পয়সা।
এসিআই লিমিটেড
গত কয়েক বছর ধরে চাপে থাকা এই কোম্পানিটি গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরেই মুনাফায় ফিরতে পেরেছে। নতুন অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে মুনাফা বাড়ছে আরও।
কোম্পানি জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে শেয়ার প্রতি আয় করতে পেরেছে ৩ টাকা ৯৩ পয়সা। গত অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় ছিল ১ টাকা ৫৪ পয়সা।
টানা দুই বছর বড় অঙ্কের লোসকান দেয়া কোম্পানিটি গত অর্থবছরে শেয়ার প্রতি সাড়ে ৫ টাকা মুনাফা করতে পারে। তার আগের বছর শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ১৬.৭৮ টাকা। তারও আগের বছর লোকসান ছিল ১৩ টাকা ৫১ পয়সা।
কোম্পানিটির সম্পদও বেড়েছে। গত ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য ছিল ১৬২ টাকা ৬৫ পয়সা। সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৬ টাকা ১৭ পয়সা।
একমি ল্যাবরেটরিজ
এই কোম্পানিটি জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রথম প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি ২ টাকা ৭৭ পয়সা আয় করতে পেরেছে। আগের বছর একই সময়ে এই আয় ছিল ১ টাকা ৯৬ পয়সা।
গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ার প্রতি ৭ টাকা ৪২ পয়সা আয় করা কোম্পানিটি আগের বছর একই সময়ে আয় করেছিল শেয়ার প্রতি ৬ টাকা ৮৫ পয়সা।
এই কোম্পানিটিরও সম্পদ বেড়েছে। গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ার প্রতি সম্পদ ছিল ৯৫ টাকা ৪ পয়সা। তিন মাস পর সেটি বেড়ে হয়েছে ৯৭ টাকা ৮৩ পয়সা ।