ডায়াবেটিস সনাতন একটি রোগ হলেও প্রযুক্তির সাহায্যে আধুনিকতম চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হচ্ছে একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড ডিজিটাল স্বাস্থ্য সেবা অ্যাপ হেলথ্এইডের মাধ্যমে। এর মাধ্যমে প্রযুক্তির সাহায্যে সহজেই চিকিৎসা ও শরীরের অবস্থা জানতে পারবেন ডায়াবেটিস রোগীরা। তাছাড়া এই অ্যাপের মাধ্যমে ভিডিও কল করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারবেন তারা।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের বলরুমে ডায়াবেটিস সামিটে বাংলাদেশের অন্যতম ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান একমি ফার্মাসিউটিক্যালস ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড ডিজিটাল স্বাস্থ্য সেবা অ্যাপ হেলথ্এইডের উদ্বোধন করে।
ইব্রাহিম জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডিসিইসির ডায়াবেটিস ও এন্ডোক্রাইন ডিজিজ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ইমেরিটাস হাজেরা মাহতাবের সভাপতিত্বে সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের মার্কেটিং বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক মো. এ কে আজাদ খান। সেমিনারে বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বারডেম একাডেমীর পরিচালক প্রফেসর মো. ফারুক পাঠান, ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সিনিয়র কনসালটেন্ট প্রফেসর ডা. এস এম আশরাফুজ্জামান, বারডেমের এন্ডোক্রিনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফিরোজ আমিন, বারডেমের ইউনিট হেড ও সহকারী অধ্যাপক ডা. ফারিয়া আফসানা।
বিআইএইচএসের সহযোগী অধ্যাপক ও পরামর্শক ডায়াবেটিস ও এন্ডোক্রিনোলজি ডা. নাজমুল কবীর কোরেশীর সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের, সেলস ও ডিস্ট্রিভিশন বিভাগের নির্বাহী পরিচালক মো. ফেরদৌস খানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এছাড়া সেমিনারে যোগ দেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত এন্ডোক্রিনোলজিস্ট ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞরা এবং ডায়াবেটিসকে পরাজিত করার বিষয়ে তাদের মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি শেয়ার করেন।
সেমিনারের বারডেম একাডেমীর পরিচালক প্রফেসর মো. ফারুক পাঠান বলেন, ‘এক্সেস টু ডায়াবেটিস কেয়ার- এই প্রতিপাদ্য নিয়ে আমরা এবারের ডায়াবেটিস দিবসে সচেতনতা শুরু করেছি। দেখা যায়, অসচেতনতার কারণে পুরো বিশ্বের প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষ ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়। একই সঙ্গে আমাদের দেশে রোগীর সংখ্যাও ভয়াবহ। আমরা স্বল্প মূল্যে এই রোগের চিকিৎসার জন্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছি। সেই সঙ্গে আশা করবো আমাদের সঙ্গে দেশের সকল ঔষধ কোম্পানিগুলো এগিয়ে আসবে।’
ডায়াবেটিস এখন একটি মহামারি রোগ। এই রোগের অত্যধিক বিস্তারের কারণেই সম্প্রতি এমন ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। প্রতিটি পরিবারকে ডায়াবেটিস সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। এ বিষয়ে সরকার, চিকিৎসক, গবেষক, শিক্ষক, ধর্মগুরু, সমাজকর্মী, সাংবাদিকসহ সবাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের তথ্য অনুযায়ী প্রতি পাঁচজনের মাঝে একজন ডায়াবেটিস সম্পর্কে অবহিত। তাছাড়া বিশ্বে এখনও ৭৫ শতাংশের বেশি পরিবারের সদস্যদের ডায়াবেটিসের তীব্রতা, নিয়ন্ত্রণ ও তার ভূমিকা নিয়ে সচেতন করা বাকি। একমির ডিজিটাল স্বাস্থ্য সেবা হেলথ্এইড অ্যাপের নানা তথ্য, গৃহীত কৌশল ও সমাধানগুলোর সঠিক চিকিৎসা এবং জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগীদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যাকে কমিয়ে স্বাভাবিক জীবনের দিকে নিয়ে যেতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের চালু করা ডিজিটাল স্বাস্থ্য সেবা হেলথ্এইড অ্যাপের মাধ্যমে অনেক খ্যাতনামা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ নেয়া যাবে। এর ফলে দেশের যে কোনও প্রান্ত থেকে ঘরে বসেই যেকোন চিকিৎসাসেবা নিতে পারবেন রোগীরা। ইতোমধ্যে বিশ্বমানের এবং দেশের শীর্ষ মানের ওরাল অ্যান্টি-ডায়াবেটিক ওষুধ তৈরির জন্য পুরো বিশ্বেই সুনাম অর্জন করেছে একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড।
সেমিনারের প্রধান অতিথি বক্তব্যে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক মো. এ কে আজাদ খান বলেন, সময়োপযোগী একটি সেমিনার করার জন্য ধন্যবাদ জানাই একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডকে। আমাদেরকে সবসময় সচেতন থাকতে হবে এই ডায়াবেটিস সম্পর্কে। কারণ দেশের অধিকাংশ মানুষই এই রোগে আক্রান্ত হয়। তবে এই রোগ থেকে পুরোপুরি মুক্ত না হলেও আমাদের সচেতনতাই সুরক্ষা দিবে। ফলে আমরা সবাই ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতন থাকবো।
অনুষ্ঠানে একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড-এর মার্কেটিং বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন বলেন, “ডায়াবেটিস রোগীদের জীবন সহজ করতে এবং পরামর্শকারী চিকিৎসকের সঙ্গে একটি সেতু তৈরি করতে আমরা ডিজিটাল স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী অ্যাপ হেলথ্এইড চালু করতে পেরে গর্বিত। বর্তমান ডিজিটালাইজেশনের এই যুগে আমরা সবাই জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহারে অভ্যস্ত।
‘আমাদের দিনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রযুক্তি ছাড়া আমরা দৈনন্দিন কার্যকলাপ কল্পনা করতে পারি না। একজন ডায়াবেটিস রোগীকে একটি নির্দিষ্ট নিয়মে লেগে থাকতে হয়, যেমন প্রতিদিনের স্ব-নিরীক্ষণ, সতর্কতার সঙ্গে ওষুধ খাওয়া এবং নিয়মিত রক্তে শর্করা, রক্তচাপ কমানো। আর এইসব করতে সার্বিক সহায়তা করবে আমাদের ডিজিটাল অ্যাপ। এছাড়াও একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড লাইফ স্টাইল পরিবর্তন, স্ব-নিরীক্ষণ এবং রোগীর ক্ষমতায়নের জন্য সচেতনতা বাড়াতে ক্রমাগত কাজ করে যাচ্ছে,’ যোগ করেন তিনি।