স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পরও বাংলাদেশের জন্য অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নতুন রাষ্ট্রদূত চালর্স হোয়াইটলে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করলে এ আহবান জানান মন্ত্রী।
এ সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সমন্বিতভাবে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের সবচেয়ে বড় গন্তব্য। বাংলাদেশ এই বাজার ধরে রাখতে চায়। এ জন্য এলিডিসি থেকে উত্তরণের পরও ইউরোপের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখতে হবে, তা না হলে কঠিন প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশকে বিনিয়োগের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ইইউ বাংলাদেশের উন্নয়নের অন্যতম আস্থাভাজন অংশীদারে পরিণত হয়েছে।
এ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন অর্থমন্ত্রী।
রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলে বলেন, আগামীতে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখার বিষয়ে তার সহযোগিতা ও সমর্থন থাকবে। এ ছাড়া আর্থসামাজিক, অবকাঠামো খাতে বাংলাদেশের প্রতি ইইউ-এর সমর্থন ও সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করে রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ‘২০০৫ সাল থেকে ২০০৯ সাল আমি যখন বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পলিটিক্যাল, ইকোনোমিক, ট্রেড, প্রেস এবং ইনফরমেশন বিভাগের প্রধান ছিলাম, তখনকার বাংলাদেশের তুলনায় বর্তমান বাংলাদেশের উন্নয়ন আমাকে অভিভূত করেছে।
অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে জাতিসংঘ প্রতিনিধির সাক্ষাৎ
বিকলে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বিদায়ী সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সেপ্পো।
এ সময় অর্থনৈতিক অগ্রগতি, করোনাকালীন অর্থনীতি পুনরুদ্ধার, কর্মসংস্থান, নারীর উন্নয়ন, ক্ষমতায়ন ও সমতা অর্জনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
জাতিসংঘ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনায় অর্থমন্ত্রী বলেন, অপ্রত্যাশিত অভিঘাত করোনা মহামারিকালে গত বছর যেখানে বৈশ্বিক অর্থনীতি ৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে, এমন ক্রান্তিকালেও বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশ শীর্ষ পাঁচ সহনশীল অর্থনীতির মধ্যে রয়েছে।
বাংলাদেশকে তার অভিষ্ট লক্ষ্যে নিতে জাতিসংঘ তার সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন অর্থমন্ত্রী।
মিয়া সেপ্পো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, নারীর কর্মসংস্থান ও নারী ক্ষমতায়নের প্রশংসা করেন এবং আগামীতে বাংলাদেশের সাথে জাতিসংঘের বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন।
তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে জাতিসংঘের দীর্ঘ কূটনৈতিক সুসম্পর্কের ধারাবাহিকতা উল্লেখ করে বলেন, জাতিসংঘ বাংলাদেশে নারী উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে জাতিসংঘ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে মিয়া সেপ্পো জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে চার বছরের কর্মকাল তার জীবনে উজ্জ্বল স্মৃতি হয়ে থাকবে। তিনি ঢাকায় অবস্থানকালে সার্বিক সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।