বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রশ্ন ফাঁস: চাকরি হারালেন জনতা-রূপালী ব্যাংকের ৪ কর্মকর্তা

  •    
  • ১১ নভেম্বর, ২০২১ ১৭:৩৬

বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হ‌লেন, রূপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার জানে আলম মিলন এবং জনতা ব্যাংকের গুলশান শাখার কর্মকর্তা শামসুল হক শ্যামল, সিনিয়র অফিসার এমদাদুল হক খোকন ও সোহেল রানা।

সরকারি পাঁচ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ও রূপালী ব্যাংকের চার কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

ব্যাংক দু‌টির সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৃহস্প‌তিবার নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হ‌লেন, রূপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার জানে আলম মিলন এবং জনতা ব্যাংকের গুলশান শাখার কর্মকর্তা শামসুল হক শ্যামল, সিনিয়র অফিসার এমদাদুল হক খোকন ও সোহেল রানা।

রূপালী ব্যাংকের জনসংযোগ কর্মকর্তা এহতেশামুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকায় গ্রেপ্তার রূপালীর একজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বুধবারই বরখাস্তের ব্যাপারে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয়। তবে, বরখাস্ত করার বিষ‌য়ে কিছু নিয়ম-নীতি থাকায় সংশ্লিষ্ট বিভাগ বৈঠক করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’

প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পৃথক অভিযানে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের তিন কর্মকর্তা এবং রূপালী ব্যাংকের এক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তেজগাঁও জোনাল টিম।

প্রথমে গ্রেপ্তার হন জনতা ব্যাংকের গুলশান শাখার কর্মকর্তা শামসুল হক শ্যামল ও রূপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার জানে আলম মিলন। এরপর জনতা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার এমদাদুল হক খোকন ও সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে, বুধবার একই অভি‌যো‌গে পূবালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে বরখাস্ত করা হয়। পূবালী ব্যাংকের ওই কর্মকর্তা ব্যাংকের রাজধানীর ইমামগঞ্জ শাখায় কর্মরত ছিলেন।

প্রশ্ন ফাঁসে জড়িতদের গ্রেপ্তার নিয়ে বুধবার ব্রিফিং করে গোয়েন্দা পুলিশ। সেখানে জানানো হয়, প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন এবং ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা আহ্‌ছানউল্লা ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে।

গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, কয়েকটি সরকারি ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা মিলে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন পরীক্ষার্থীদের কাছে ৫-১৫ লাখ টাকায় বিক্রি করেন। আগেভাগে যাদের প্রশ্নপত্র দেয়ার জন্য চুক্তিভুক্ত করা হয়, তাদের ‘গোপন বুথে’ নিয়ে প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করানো হয়। টাকা নিয়ে প্রশ্নপত্র পেয়েছে এমন ২ শতাধিক পরীক্ষার্থীর তালিকা পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির আওতায় ৬ নভেম্বর বিকেলে রাজধানীর বিভিন্ন কেন্দ্রে রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ ব্যাংকে অফিসার (ক্যাশ) নিয়োগের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ১ হাজার ৫১১টি পদের বিপরীতে এ পরীক্ষায় অংশ নেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৪২৭ চাকরিপ্রত্যাশী।

এর মধ্যে সোনালী ব্যাংক ১৮৩টি, জনতা ব্যাংক ৫১৬, অগ্রণী ব্যাংক ৫০০, রূপালী ব্যাংক ৫ এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে ৭টি পদ রয়েছে।

পরীক্ষার পরপরই প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। একাধিক চাকরিপ্রার্থীর দাবি, পরীক্ষা চলাকালীনই প্রশ্নের প্রিন্ট করা উত্তরপত্র ফেসবুকে পাওয়া যায়।

পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানিয়ে পরের দিন বাংলা‌দেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজ‌লে ক‌বি‌রের কা‌ছে স্মারকলি‌পি দেয় এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের একটি দল।

স্মারকলি‌পিতে পরীক্ষার্থীরা জানান, ৬ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত পাঁচ ব্যাংকের সম্মিলিত পরীক্ষা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে হয়েছে। পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর পরীক্ষা শুরুর আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাওয়া যায়।

পরীক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, বিভিন্ন কেন্দ্রে পরীক্ষার সময় শেষ হওয়ার পরেও পরীক্ষা দিতে দেয়া হয়েছে। পরীক্ষায় পর্যবেক্ষক কম ছিল। কেন্দ্রে কেন্দ্রে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পৌঁছাতে দেরি হয়েছে।

এ ছাড়া নানা অব্যবস্থাপনা ও চরম অনিয়ম ছিল বলে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেন পরীক্ষার্থীরা। ওই পরীক্ষা বাতিলসহ দ্রুত নতুন করে পরীক্ষা নেয়ার দাবি জানান তারা।

ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির দুই পরীক্ষা স্থগিত

প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ মেলায় ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির অন্তর্ভুক্ত তিন ব্যাংকের দুই পদের লিখিত পরীক্ষা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, সোনালী ও বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার (আইটি) এবং জনতা ও সোনালী ব্যাংকের অ্যাসিসটেন্ট ডাটাবেস অ্যাডমিনিস্ট্রেটর পদের পরীক্ষা অনিবার্য কারণে স্থগিত করা হয়েছে।

এর মধ্যে সিনিয়র অফিসার আইটি পদের পরীক্ষা ১৩ নভেম্বর এবং অ্যাসিসটেন্ট ডাটাবেস অ্যাডমিনিস্ট্রেটর পদের পরীক্ষা ২০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

পরীক্ষার পরবর্তী তারিখ ও সময়সূচি যথাসময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইট ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রকাশ করা হবে।

এ বিভাগের আরো খবর