জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে সহযোগিতা করার জন্য ওই মন্ত্রণালয়ে একজন প্রতিমন্ত্রী দেয়া যায় কিনা তা প্রধানমন্ত্রী বিবেচনা করতে পারেন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান।
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময় করার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তথ্য প্রতিমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয় ইউপি নির্বাচনে সহিংসতায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতা বা গাফিলতি দেখছেন কি-না। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি এভাবে বলতে চাই না। আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অত্যন্ত ভদ্রলোক, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। উনি দেশপ্রেমিক মানুষ। তিনি অত্যন্ত নিবেদিত প্রাণ বঙ্গবন্ধুর আদর্শে।’
মুরাদ বলেন, “তিনি প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত বিশ্বস্ত ও পছন্দের। আমি প্রধানমন্ত্রীর মুখে একাধিকবার বলতে শুনেছি যে, ‘আমার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনেক ভালো। কথা কম বলে এবং যখন কথা বলে অনেক হিসাব করে বলে।’ আমি এটার রাজসাক্ষী। অতএব তাকে নিয়ে কোনো সমালোচনা করার কোনো অধিকার আমি রাখি না।”
তিনি বলেন, ‘আমি শুধু এটুকু বলতে চাই, ওখানে বোধহয়…এত বড় মন্ত্রণালয়। আমাদের দেশটাতো ছোট না। সেখানে মনে হয় আরও কাউকে দিলে ভালো হলেও হতে পারে। এটুকু বলতে পারি, ওনাকে সহযোগিতা করা প্রয়োজন। শুধু ইউপি নির্বাচনে জন্য না। উনি দায়িত্বে সফল বলেই কিন্তু দ্বিতীয়বার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দেশের ইতিহাসে কিন্তু এরকম নাই।
‘ওনার এখন যে বয়স বা দায়িত্বের পরিধি এত বড় মন্ত্রণালয় সেখানে তাকে সাহায্য সহযোগিতা করার জন্য সাপোর্ট দেয়ার জন্য পরামর্শ দেবার জন্য…যেহেতু সামনে জাতীয় নির্বাচন, আমার মনে হয় প্রধানমন্ত্রী যদি এটি বিবেচনা করেন তাহলে ভালো হবে।’
আপনাকে যদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয় নেবেন কিনা, জানতে চাইলে মুরাদ হাসান বলেন, ‘আমাকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আমরা সংসদীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, রাষ্ট্রের নির্বাহী প্রধান প্রধানমন্ত্রী। তিনি সংসদ নেতাও বটে, আবার দলেরও প্রধান। উনি আমাদের মা। তিনি যা বলবেন তাই।
‘আমি এই কথার সরাসরি উত্তর দিতে পারব না। উনি যা বলবেন আমি তাই করবো, মাথা পেতে নেবো। উনি যদি বলেন, আগুনে ঝাপ দে মুরাদ, ঝাপ দেবো আমি। এর চেয়ে বেশি কিছু বলার নাই। আমাকে প্রতিমন্ত্রী বানিয়েছেন এতেই আমি সৌভাগ্যবান মনে করি নিজেকে।’
এ সময় ইউপি নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনায় দলীয় নেতাকর্মীদের সমালোচনাও করেন প্রতিমন্ত্রী মুরাদ। বলেন, ‘টেলিভিশনের টিকে তাকানো যাচ্ছে না। যে হানাহানি, মারামারি, রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ইউপি নির্বাচন নিয়ে অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আমি একজন মানুষ প্রথম, মন্ত্রী বড় পরিচয় নয়। আমি মানবতায় বিশ্বাস করি।
‘আমি বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশের মুরাদ, একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, আমার কাছে খুব খারাপ লাগে, কষ্ট লাগে। মনে হয় তাহলে কি আমরা ব্যর্থ হচ্ছি। না ব্যর্থ হতে তো আমরা জন্মাই নাই, এটা আমাদের মানসিকতার সমস্যা।’
মুরাদ আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী দেশে নেই, নির্বাচন হচ্ছে। আমাদের কী দায়িত্বশীল হওয়া উচিত না? আমাদের দলের নেতাকর্মীদের এই কমনসেন্সটা কবে গ্রো করবে? একটা মেম্বার, না হলে কি হবে? না খেয়ে মারা যাবে? মেম্বার হলেই বা কি হবে? বঙ্গবন্ধু, তার কন্যার চেয়েও বেশি কাজ করে ফেলবেন একটা ইউনিয়নে?
‘আমি হাত জোর করে অনুরোধ করছি, এই দাঙ্গা-হাঙ্গামা কইরেন না। আমাদের দল আওয়ামী লীগের কালচার এটা না। জাতির পিতা এই চেতনায় বিশ্বাস করতেন না। এটা চলতে পারে না।’