জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার নির্ধারিত নতুন ভাড়ার বেশি নিলে বাসগুলোকে ডাম্পিংয়ের পাশাপাশি এগুলোর রুট পারমিট বাতিল করা হবে।
রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনালে বৃহস্পতিবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে এ কথা জানান সড়ক পরিবহন সচিব মো. নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘ডিজেলের দাম বাড়ার পর ডিজেলচালিত বাসগুলোর জন্য নতুন ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এখন আর বাড়তি ভাড়া নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। সে জন্য বিআরটিএ ও মেট্রোপলিটন পুলিশের সমন্বয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মনিটর করা হচ্ছে।’
এ কার্যক্রম চলবে জানিয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পেলে আপাতত আর্থিক জরিমানা ও বাড়তি ভাড়ার টাকা যাত্রীদের ফেরত দেয়া হচ্ছে। এরপরও বাড়তি ভাড়া নিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘আমরা ওই বাসকে ডাম্পিং করাসহ রুট পারমিট বাতিল করব।’
চলছে সমন্বিত অভিযান
নতুন ভাড়া কার্যকরে ব্যবস্থা নিতে কাজ করছে বিআরটিএ, পুলিশ, পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা।
সকালে মহাখালী বাস টার্মিনালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম শুরু করেন বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
প্রথমে টার্মিনালের কাউন্টারগুলোতে নতুন ভাড়ার তালিকা যাচাই করা হয়। পরে সিটি সার্ভিসের বাসগুলো পরীক্ষা করে দেখা হয়। এগুলোর মধ্যে সিএনজিচালিত বাসে বিআরটিএর পক্ষ থেকে স্টিকার জুড়ে দেয়া হয়। বাড়তি ভাড়া আদায় করায় ৬টি বাসকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
মহাখালী বাস টার্মিনালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করেন বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাজিদ আনোয়ার।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া আদায়ের জন্য ৬টি বাসকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একটি বাস যাত্রীর কাছ থেকে ৩৩ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা নিয়েছে। যাত্রীকে ১৭ টাকা ফেরত দিয়ে ওই বাসকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’
সাজিদ আরও জানান, মক্কা ট্রান্সপোর্ট নামের একটি পরিবহনের তিনটি বাসের বিরুদ্ধে বাড়তি ভাড়া নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের জরিমানা করা হয়েছে।
একাধিকবার নিয়ম অমান্য করা হলে সর্বোচ্চ সাজার বিধান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আইন অনুযায়ী পরবর্তী সময়ে আমরা তাদের বাস ডাম্প করা ও রুট পারমিট বাতিল করতে পারব।’
কখন সে ব্যবস্থা নেয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা কিছুদিন মনিটর করে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেব।’
কী বলছে মালিক সমিতি
ভ্রাম্যমাণ আদালতের সঙ্গে থাকা ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মো. আজমল উদ্দীন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দূরপাল্লার বাসে কোনো ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। আমরা মহাখালী বাস টার্মিনালের প্রতিটি কাউন্টারে নতুন ভাড়া তালিকা পেয়েছি। তালিকা অনুযায়ী টিকিট বিক্রি হচ্ছে।
‘কিছু অনিয়ম পাওয়া যাচ্ছে সিটি সার্ভিসের বাসগুলোর ক্ষেত্রে। তারা
কেউ কেউ বাড়তি ভাড়া আদায় করছে। আমরা মালিক সমিতির পক্ষ থেকে কোন কোন কোম্পানির কতগুলো বাসের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, সেই তালিকা তৈরি করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘তালিকা ধরে আমরা তাদের কাউন্টার বন্ধ করে দেব। সেই সঙ্গে বিআরটিএকে সুপারিশ করব যেন তাদের রুট পারমিট বাতিল করা হয়। কিছু কিছু শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের দায় পুরো পরিবহন সেক্টর নেবে না।’