বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভোট নিতে প্রকাশ্যে হুমকি, ব্যবস্থা কম

  •    
  • ১০ নভেম্বর, ২০২১ ২২:৩৬

গত তিন সপ্তাহের প্রচারে নজিরবিহীন নানা বক্তব্য উঠে এসেছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বা তার পক্ষের নেতাদের কাছ থেকে। কোনো এলাকায় তারা জনসভায় মাইকে ঘোষণা দিয়েছেন, ভোট দিতে হবে প্রকাশ্যে, কোথাও বলেছেন, নৌকা মার্কায় ভোট না দিলে কেন্দ্রে যাওয়ার দরকার নেই, কোথাও বলেছেন, তাদের ভোট না দিলে এলাকায় নামাজ পড়তে দেয়া হবে না। একটি এলাকায় এক নেতা একে-৪৭-এর চেয়ে বড় কিছু নিয়ে আসার হুমকি দিয়েছেন।

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রচারে বেশ কয়েকটি এলাকায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

রাজনীতিতে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির বর্জনের মধ্যে এই ভোটে দলটির নেতারা প্রার্থী হয়েছেন স্বতন্ত্র হিসেবে। তবে বেশির ভাগ এলাকাতেই নৌকা মার্কার প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দলের প্রতীক না পেয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে লড়া ক্ষমতাসীন দল বা তার সহযোগী সংগঠনের নেতারাই।

তিন সপ্তাহের প্রচার শেষে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে ভোট হবে ৮৪৮ ইউনিয়ন পরিষদে। এরই মধ্যে প্রচার শেষ হয়েছে। কেন্দ্রে কেন্দ্রে এখন যাচ্ছে ভোটের সরঞ্জাম।

গত তিন সপ্তাহের প্রচারে নজিরবিহীন নানা বক্তব্য উঠে এসেছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বা তার পক্ষের নেতাদের কাছ থেকে। কোনো এলাকায় তারা জনসভায় মাইকে ঘোষণা দিয়েছেন, ভোট দিতে হবে প্রকাশ্যে, কোথাও বলেছেন, নৌকা মার্কায় ভোট না দিলে কেন্দ্রে যাওয়ার দরকার নেই, কোথাও বলেছেন, তাদের ভোট না দিলে এলাকায় নামাজ পড়তে দেয়া হবে না। একটি এলাকায় এক নেতা একে-৪৭-এর চেয়ে বড় কিছু নিয়ে আসার হুমকি দিয়েছেন।

এসব ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে এমন নয়। কোথাও কোথায় তাদের সতর্ক করা হয়েছে, কোথাও কোথাও বক্তব্যের ব্যাখ্যা পেয়ে সন্তুষ্ট নির্বাচন করার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা।

ক্ষমতাসীন দলের বহু নেতার হুমকিসংবলিত এসব বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখনও রয়ে গেছে। যদিও যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের কেউ কেউ দাবি করছেন, তাদের বক্তব্য কাটছাঁট করে বিকৃত করা হয়েছে। তারা অপপ্রচারের শিকার। কেউ কেউ আবার নিজেদের বক্তব্যের পক্ষে সাফাই গাইছেন।

অবশ্য কেবল বক্তব্য নয়, ভোটে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টায় এখন সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত অন্তত সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে শত শত। একটিতে প্রার্থীদের অজান্তে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের ঘটনায় সেই উপজেলায় ভোট স্থগিত হয়েছে। একটি পৌরসভায় ভোট থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য করার অভিযোগে একজন বিষপান করেছেন। আরও নানা ঘটনা ঘটছে।

এসব ঘটনায় নির্বাচন কমিশন কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, জানতে চাইলে কমিশনের যুগ্ম সচিব (নির্বাচন) আতিয়ার রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সহিংসতা রোধে সব জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইজিপি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে চাহিদাপত্র দেয়া হয়েছে। তারপরও কোথাও যদি কোনো বড় ধরনের ঘটনা ঘটে, সে জন্য কমিশন প্রস্তুত আছে।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন জেলা প্রশাসন ও রিটার্নিং কর্মকর্তাদের যেকোনো ধরনের অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ ও যাচাইয়ের নির্দেশসহ কমিশনকে তাৎক্ষণিকভাবে জানানোরও নির্দেশ দিয়েছে। ইসি এসব বিষয়ে সজাগ আছে।’

যশোরের ঝিকরগাছায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট না দিলে ভোটের দিন কেন্দ্রে না গিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে গরু-মুরগি খেতে যেতে বলেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম।

সদর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আমির হোসেনের নির্বাচনি জনসভায় ৫ নভেম্বর তিনি বলেন, ‘নৌকা মার্কায় ভোট না দিলে ভোটের মাঠে আসার দরকার নেই এবং এলে প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারতে হবে। যদি নৌকায় ভোট না দেয়ার ইচ্ছা থাকে, তাইলে আত্মীয়ের বাড়ি গিয়ে মুরগি-গরু খান, শান্তিতে থাকেন।’

মনিরুলের এমন বক্তব্যের অডিও ক্লিপসহ যশোর জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেন ওই ইউপিতে আনারস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল বারিক। তিনি যুবলীগের নেতা।

বক্তব্যের পরপর নৌকার প্রার্থী আমির হোসেন বলেছিলেন, ‘নেতা কী বলেছেন সেটা তিনি ভালো জানেন। আমি খেয়াল করিনি।’

এ বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, জানতে চাইলে মঙ্গলবার নিউজবাংলাকে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অপূর্ব কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘অনেকগুলো অভিযোগ পেয়েছি। এগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’

ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দেয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন তিনি বলেন, ‘এ অভিযোগের তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।’

কক্সবাজারের উখিয়ার একটি ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে ভোট না দিলে কবর দিতে দেয়া হবে না বলে হুমকি দেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহ আলম।

এই বক্তব্য ভাইরাল হলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী থানায় তার বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের লিখিত অভিযোগও করেন। নির্বাচন কমিশন থেকে বক্তব্যের ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠিও দেয়া হয়।

ঘটনাটি ঘটে হলদিয়াপালং ইউনিয়নে। সেখানে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে লড়া যুবলীগের নেতা ইমরুল কায়েস চৌধুরী।

১ নভেম্বর রাতে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মনির মার্কেট এলাকায় নিজের প্রচার অফিসের উদ্বোধন করে নৌকায় ভোট না দেয়ার পরিণতি সম্পর্কে স্মরণ করিয়ে দেন প্রার্থী।

হলদিয়াপালং ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. শাহ আলম। ছবি: নিউজবাংলা

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, শাহ আলম বলছেন, ‘কী অইবা? চিহ্নিত অইবা। হবরস্থান চৌধুরীপাড়া অইব দে। আইত ন পারিবা। আর হবরস্থানত আই হবর দিত ন দিয়্যুম। হবরস্থান আঁর, আঁই দিত ন দিয়্যুম এডে।'

অর্থাৎ ‘(ভোট না দিলে) কী হবে? চিহ্নিত হবে। কবরস্থান চৌধুরীপাড়ায় হবে। এখানে আসতে পারবে না। আর এখানকার কবরস্থানে কবর দিতে দেব না। কবরস্থান আমার। এখানে আমি কাউকে কবর দিতে দেব না।’

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বাড়ি চৌধুরীপাড়ায়। শাহ আলমের বাড়ি কুলালপাড়া এলাকায়। এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি বুঝিয়েছেন, তার এলাকার যে ভোটার তার প্রতিদ্বন্দ্বীকে ভোট দেবে, তাদের কবর চৌধুরীপাড়ায় দিতে হবে। শাহ আলম তার নিজের এলাকায় হতে দেবেন না।

শাহ আলম আরও বলেন, ‘সোজা হতা, বাংলা হতা। চৌধুরীপাড়াত জনগুই পড়িব লাশ-ইবা। মসজিদত আই না পারিবা। আর বেগ্গুন ঐক্যবদ্ধ। এই পাঁচজন, আটজন, দশ ন, বেগ্গিন বন্ধ অই যাইব। চিহ্নিত গইজ্যুম, সমস্ত কিছু বন্ধ অই যাইব।’

অর্থাৎ ‘সোজা কথা, বাংলা কথা। চৌধুরীপাড়ায় এই লাশটাকে চলে যেতে হবে। মসজিদেও আসতে পারবে না। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ। এই পাঁচ, আট, দশজনের সবকিছু বন্ধ করে দেয়া হবে। সবাইকে চিহ্নিত করে রাখা হবে। সবকিছু বন্ধ হয়ে যাবে।’

এমন বক্তব্যের বিষয়ে শাহ আলম শুরুতে ব্যাখ্যা না দিলেও পরে দাবি করেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা হয়রানি করতে তার ভিডিও এডিট করে ভাইরাল করে দিয়েছে।

এ ধরনের বক্তব্যকে নির্বাচনি আরচণবিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন বলছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ইরফান উদ্দিন। আওয়ামী লীগের এই নেতাকে কারণ দর্শাতে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে হুমাইপুর ইউনিয়নে নৌকার বাইরে কাউকে ভোট দিতে না দেয়ার হুমকি দিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা। নৌকাকে জেতাতে প্রয়োজনে একে-৪৭ অস্ত্রসহ সব ধরনের শক্তি খাটানোর হুমকিও দিয়েছেন তিনি।

হুমকি দেয়া আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল্লাহ আল মামুন বাজিতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

৫ নভেম্বর বিকেলে বাজিতপুরের হুমাইপুর ইউনিয়নের টান গোসাইপুর গ্রামে হুমাইপুর ইসলামিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার মাঠে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় নৌকার চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রফিকুল ইসলাম ধনু মিয়ার পক্ষে তিনি এ হুমকি দেন।

পরে সেই জনসভার ৭ মিনিট ৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

বক্তব্যের শুরুতে তিনি বলেন, ‘আপনারা যারা মেম্বার পদপ্রার্থী হয়েছেন, আপনাদের কাউকেই নৌকার বাইরে ভোট দেয়ার সুযোগ দেয়া হবে না।’

মঞ্চের টেবিলটা দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘নৌকার ভোট হবে এই রকম টেবিলের ওপরে, ওপেন। আপনারা যারা বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে মেম্বার প্রার্থী হয়েছেন, আপনারা আপনাদের জয়ের চেষ্টা করে মেম্বার প্রার্থী হন, মহিলারা মহিলা মেম্বার প্রার্থী হন, আমাদের কোনো আপত্তি নাই।

‘আমাদের নেতা-কর্মীরা কোনো বাধা দেবে না। কিন্তু আপনাদের এজেন্টের বলে দিবেন নৌকার ভোট কোনো কাইত্ব্যের (গোপনে) ভেতরে হবে না, নৌকার ভোট হবে টেবিলের মধ্যে সবার সামনে। এখানে যদি কোনো মেম্বার প্রার্থী বা তাদের এজেন্ট বিরোধিতা করেন, আমরা তাৎক্ষণিক সেই প্রার্থীর এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেব।

‘আমরা সেদিন শুধু হুমাইপুরের শক্তি নিয়ে আসব না। আমাদের একে-৪৭ নাই, কিন্তু প্রয়োজনে সব নিয়ে আসব।’

আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘প্রশাসন আমাদের, পুলিশ বাহিনী আমাদের, সরকার আমাদের। আর কিছু কি বলার দরকার আছে? আমি কি আপনাদের খারাপ কিছু কইছি? কিন্তু কইলে এইডে আফনেরার লাইগ্যেই কইছি।’

সেই বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ার পর আল মামুন এখন দেখা দিচ্ছেন না। ফোনও ধরছেন না।

ওই এলাকায় তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নেতা গতবারের জয়ী মামুন মিয়ার অবশ্য ভোটের পরিবশ নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। যদিও অন্য একজন প্রার্থী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

জনসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন বাজিতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন। ছবি: নিউজবাংলা

কিশোরগঞ্জের পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সূত্র জানায়, বাজিতপুর পৌর শহরের আলোচিত সাচ্চু হত্যা মামলায় পিবিআই ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর মামুনকে গ্রেপ্তার করে। মামলাটিতে প্রায় চার মাস কারাভোগের পর জামিনে ছাড়া পান তিনি।

সম্প্রতি আদালতে মামলাটির অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পিবিআই। অভিযোগপত্রে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে আওয়ামী লীগ নেতার নাম আছে।

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে নৌকার প্রার্থীকে খোলাখুলি ভোট দেয়ার নির্দেশনা দিয়ে আলোচিত হয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হাবিবুর রহমান পবন।

রামগঞ্জ উপজেলার ৩ নম্বর ভাদুর ইউনিয়নে ২৮ নভেম্বরের ভোটের প্রস্তুতি হিসেবে ৭ নভেম্বর রাতে দলীয় এক সভায় তিনি বলেন, ‘সবাইকে নৌকার ভোট ওপেনে মারতে হবে। এর বাইরে কোনো কথা নাই। মেম্বারদের ভোট গোপনে হবে। মাইন্ড ইট, এর বিকল্প কেউ কোনো চিন্তা করবেন না। আমরা আগামী ২৮ তারিখে নৌকার মাঝি জাবেদকে জয়ী করে আনব।’

সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাবেদ হোসেন ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহিদ হোসেন ভূঁইয়া এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী রাসেল হোসেন।

বর্তমান চেয়ারম্যান জাহিদ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে উপজেলা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’

যুবলীগ নেতা হাবিবুর রহমান পবন বলেন, ‘আমার বক্তব্য এডিট করে প্রতিপক্ষের লোকজন প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে।’

অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু তাহের বলেন, ‘এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাইনি। ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ৩ নম্বর ভাদুর ইউনিয়নে নির্বাচনি প্রচারে অংশ নিচ্ছেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হাবিবুর রহমান পবন। ছবি: ফেসবুক

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পাশাপাশি কুষ্টিয়ার মিরপুর পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হকের একটি বক্তব্য ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর এলাকায় তোলপাড় হচ্ছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মোশারফপুরে পৌর এলাকায় নির্বাচনি সভায় তিনি ভোটারদের বলেন, ‘আপনাদের মধ্যে যাতে দূরত্ব না বাড়ে। সন্দেহ সৃষ্টি না হয়, তাই আপনারা সব ওপেন ভোট দেন। কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরের ভোট ভেতরে গিয়ে দেবেন। আর মেয়র ভোটটি সরাসরি দিয়ে দেবেন।’

এই বক্তব্যের ব্যাখ্যার বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘ভোটারদের বলেছি প্রকাশ্যে দিলে দেবেন, আমার কোনো আপত্তি নেই। বাধ্য করে ভোট নেব না। তারা অগ্রিম ভোটটা দিতে পারলে খুশি হতো।’

ভিডিও দেখার পর এ বিষয়ে কমিশনে লিখিত অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক। তিনি বলেন, ‘আইন লঙ্ঘন করায় তার বিরুদ্ধে মামলা এবং অনৈতিক প্রচেষ্টার জন্য ব্যবস্থা নেয়া উচিত।’

বিএনপি নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী রহমত আলী রব্বান বলেন, ‘নৌকার প্রার্থী ওপেন ভোট মারার কথা বলছেন। এটা বন্ধ না হলে মানুষ ভোট দিতে আসবে না।’

কী ব্যবস্থা নিয়েছেন- জানতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাস জানান, অভিযোগ পেয়ে তারা এনামুল হককে সতর্ক করেছেন।

এ বিভাগের আরো খবর