বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শহরের ৩০০ সেবা এখন ইউনিয়নে

  •    
  • ১০ নভেম্বর, ২০২১ ২২:৩৩

শুধু হরিয়ান ইউনিয়নই নয়, দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদেই এখন রয়েছে ইউনিয়ন ডিজিটাল কেন্দ্র। তথ্য-প্রযুক্তির নানা সুযোগ-সুবিধাসংবলিত এই কেন্দ্র থেকে দেয়া হচ্ছে প্রায় ৩০০ ধরনের সেবা।

রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিয়ানপুর ইউনিয়নের মো. মোস্তাকিম আলী। রাজমিস্ত্রি বাবার সন্তান মোস্তাকিম সম্প্রতি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের চাকরির জন্য আবেদন করেছেন। এ জন্য তাকে তার গ্রাম থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরের শহরে যেতে হয়নি। গ্রামের পাশে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার থেকেই তিনি চাকরির আবেদন ফরম পূরণ করেছেন।

সোমবার হরিয়ান ইউনিয়ন পরিষদে কথা হয় মোস্তাকিমের সঙ্গে। তিনি জানান, চাকরির আবেদনের পর শারীরিক পরীক্ষার জন্য তাকে ডাকা হয়েছে। তাই নাগরিকত্ব সনদপত্র নিতেই তিনি ইউনিয়ন পরিষদে এসেছিলেন। পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে তার মাত্র ৩০ টাকা খরচ হয়েছে।

স্ত্রীর জন্মসনদ বাংলার পরিবর্তে ইংরেজিতে করিয়ে নিতে ওই ইউনিয়ন পরিষদে এসেছিলেন মো. রাজিব। তিনি বলেন, ‘আধাঘণ্টার মধ্যেই তার কাজ হয়ে গেছে। এ জন্য তাকে ফি দিতে হয়েছে ৫০ টাকা।’

শুধু হরিয়ান ইউনিয়নই নয়, দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদেই এখন রয়েছে ইউনিয়ন ডিজিটাল কেন্দ্র। তথ্য-প্রযুক্তির নানা সুযোগ-সুবিধাসংবলিত এই কেন্দ্র থেকে দেয়া হচ্ছে প্রায় ৩০০ ধরনের সেবা। ঘরের কাছেই এসব সেবা পাওয়ায় একদিকে যেমন ভোগান্তি কমিয়েছে, অন্যদিকে খরচও বাঁচিয়ে দিয়েছে।

নানাবিধ সুবিধার মধ্যে অনলাইনে পাসপোর্টের আবেদন ও ফি জমাদান, জমির পর্চা উত্তোলন, ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান, ই-নামজারি আবেদন ও ফি প্রদান, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন, চাকরির আবেদন, বাস-ট্রেন ও বিমানের টিকিট ক্রয়, বিদেশ থেকে পাঠানো রেমিট্যান্স উত্তোলন, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন ও ফি জমাদান, পল্লী বিদ্যুৎ বিল প্রদান, বিদ্যুৎ সংযোগ/মিটারের জন্য আবেদন, পণ্য ক্রয়, পরীক্ষার ফলাফল জানা, ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট ও চিকিৎসা পরামর্শ গ্রহণ, জন্ম-মৃত্যু সনদ, অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স লার্নার আবেদন, অনলাইনে টেলিমেডিসিন সেবা উল্লেখযোগ্য।

ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার উদ্যোক্তা শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘কয়েক শ ধরনের সেবা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে পাওয়া যায়। অনেক সেবা সম্পর্কে মানুষ এখনও জানেই না। প্রতিদিন বিভিন্ন সেবা নিতে ৬০-৭০ জন আসেন।’

তবে ইন্টারনেট গতি আরেকটু বাড়লে কাজ আরও সহজ হবে বলেও জানান তিনি।

এই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মফিদুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, ‘ইউনিয়নে এত ধরনের সেবা পাওয়া যায় যে মানুষ তা কল্পনা করতে পারবে না। প্রতিদিন দুজন উদ্যোক্তা এখানে মানুষকে সেবা দেন। সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন তারা এখানে উপস্থিত থাকেন, যেন মানুষকে হয়রানির মধ্যে পড়তে না হয়।’

চেয়ারম্যান জানান, বিভিন্ন সেবার জন্য ফি নির্ধারণ করে দেয়া আছে। যেমন- জন্মনিবন্ধনের জন্য ৫০ টাকার বেশি নিতে পারবে না।

তার মতে, সেবাকেন্দ্রটি না থাকলে মানুষকে ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে যেতেই ৫০ থেকে ১০০ টাকা খরচ করতে হতো।

প্রত্যন্ত অঞ্চলে ডিজিটাল এই সেবা পৌঁছে দেয়ার বিষয়ে তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকল্প তুলে ধরেন। তার আলোকে ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে ডিজিটাল করতে ১৩ বছর ধরে কাজ করেছে সরকার। ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে তথ্য-প্রযুক্তির বিভিন্ন সেবা মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে গেছে।’

সরকারের ডিজিটাল সেবার বিষয়ে জানাচ্ছেন তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক

প্রতিমন্ত্রী জানান, সরকার দেশকে এমন ডিজিটালাইজড করতে চায়, যাতে মানুষ সব ধরনের সেবা তার হাতে থাকা মোবাইলেই পাবেন। অর্থাৎ সরকারি সেবার জন্য মানুষকে কোথাও যেতে হবে না। সরকারই মানুষের কাছে গিয়ে হাজির হবে।

পলক বলেন, ‘এমনকি দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় যেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই সেখানেও সোলার প্যানেলের মাধ্যমে সেবা দেয়া হচ্ছে। তা ছাড়া দেশের দুর্গম এলাকা যেখানে কোনোভাবেই ইন্টারনেট পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না, সেখানেও সোলার প্যানেল এবং বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর মাধ্যমে এই সেবা পৌঁছে দিতে কাজ করছে সরকার।

এ বিভাগের আরো খবর