নওগাঁয় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ইয়াবা সেবন করতে দেখা গেছে।
বিএমডিএর পত্নীতলা জোনের সহকারী কোষাধ্যক্ষ রফিকুল ইসলামের ইয়াবা সেবনের ছবি এসেছে নিউজবাংলার কাছে। তাতে দেখা যায়, রাতে একটি বদ্ধঘরে ইয়াবা সেবন করছেন তিনি। এতে তাকে সহায়তা করছেন আরেকজন।
সরকারি দপ্তরটিতে প্রায় আট বছর সহকারী কোষাধ্যক্ষের পদে থাকা রফিকুল নিজেও ইয়াবা সেবনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে তার দাবি, এটি আগের ছবি। কয়েকজনের পাল্লায় পড়ে মাদকটি নিয়েছিলেন তিনি। তবে এখন আর ইয়াবা সেবন করেন না।
দপ্তরটির একাধিক কর্মচারী অবশ্য নিউজবাংলাকে জানান, রফিকুল দীর্ঘদিন ধরেই মাদক সেবন করে আসছেন। তার চলাফেরাও সন্দেহজনক। তাকে দেখলেই বোঝা যায়, তিনি নিয়মিত মাদক সেবন করেন।
তার বিরুদ্ধে কেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেয়নি, তারাই ভালো বলতে পারবেন- এমন মন্তব্য করে তারা জানান, অফিসের কর্মচারী হয়ে তারা তো রফিকুলকে সরাসরি কিছু বলতে পারেন না। তবে অফিসের অনেকেই জানেন, তিনি মাদক গ্রহণ করে থাকেন।
বিএমডিএর কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম এ বিষয়ে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি আর ইয়াবা সেবন করি না। আমার মনে হয়, আপনার কাছে যে ছবি আছে সেটা কিছু দিন আগের। পরিচিত কয়েকজনের পাল্লায় পড়েছিলাম। তারা আমাকে একপ্রকার জোর করেই ইয়াবা সেবন করাইছে।’
যারা তাকে ইয়াবা সেবনে বাধ্য করেছেন, তাদের নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তাদের নাম আপনাকে বলতে পারব না। আর এটা নিয়ে আপনি সংবাদ প্রকাশ না করলে খুশি হব।’
সরকারি দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থেকেও কীভাবে মাদক সেবন করলেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তিনি আর ইয়াবা সেবন করেন না, আর করবেনও না। এ সময় তার সঙ্গে দেখা করার কথা বলে ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
বিএমডিএর পত্নীতলা জোনের সহকারী প্রকৌশলী ইন্তেখাফ আলম বলেন, ‘আমি যত দূর জানি রফিকুল মাদক গ্রহণ করত। তবে আমার জানামতে, এখন আর করে না। তবুও আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। যদি সে মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকে, তবে নিয়ম অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
নওগাঁ মাদকবিরোধী সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি হাফিজুর রহমান বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে যখন সরকারি-বেসরকারি সংগঠনসহ সমাজের সচেতন মহল একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে, তখন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তার মাদক গ্রহণ সত্যিই ব্যথিত করে।
‘একজন মাদকসেবী কীভাবে এমন পোস্টে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে। মাদক গ্রহণ করলে তো তার কাজকর্ম বা আচরণ স্বাভাবিক থাকে না। সেই দপ্তরের যারা প্রধান তারা কী করে বুঝলাম না।’