বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জেট ফুয়েলের দাম বাড়ল লিটারে ৭ টাকা, এক বছরে ৬৭%

  •    
  • ১০ নভেম্বর, ২০২১ ১৯:৫৪

এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহেদুল আলম বলেন, ‘মহামারির কারণে পুরো এভিয়েশন খাতই কিন্তু বিপর্যস্ত অবস্থায় আছে। যেখানে এই খাত সরকারের বেশি সহযোগিতা আশা করে, সেখানে এভাবে বারবার জ্বালানির (জেট ফুয়েল) দাম বাড়লে এটা সমন্বয় করতে গিয়ে এয়ারলাইনসগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শেষ পর্যন্ত তো এই খরচের বোঝা চাপবে জনগণের ওপরেই। যাত্রীরাই এতে হবে ক্ষতিগ্রস্ত।’

গত এক বছর ধরে প্রায় প্রতি মাসেই একটু একটু করে বাড়ছে এভিয়েশন ফুয়েল বা জেট ফুয়েলের দাম। গত বছরের অক্টোবরেও প্রতি লিটার জেট ফুয়েল পাওয়া যেত ৪৬ টাকায়। সবশেষ নভেম্বর মাসে এই জ্বালানির দাম দাঁড়িয়েছে প্রতি লিটার ৭৭ টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে প্রতি লিটারে দাম বেড়েছে ৩১ টাকা বা ৬৭ শতাংশ।

এয়ারলাইনসগুলোকে জেট ফুয়েল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল লিমিটেডের তথ্য বলছে, গত বছরের অক্টোবরে জেট ফুয়েলের দাম ছিল লিটারপ্রতি ৪৬ টাকা। ডিসেম্বরে ২ টাকা বাড়িয়ে এটি হয় ৪৮ টাকা। আবার এ বছরের জানুয়ারিতে প্রতি লিটার জেট ফুয়েল ৫৩ টাকায় সরবরাহ করেছে পদ্মা অয়েল। ফেব্রুয়ারিতে দাম ছিল ৫৫ টাকা, মার্চে ৬০ টাকা এবং এপ্রিলে ৬১ টাকা।

মে মাসে এক টাকা কমে প্রতি লিটার জেট ফুয়েল সরবরাহ করা হয়েছে ৬০ টাকায়। জুনে আবারও দাম বেড়ে হয় ৬৩ টাকা, জুলাই মাসে ৬৬ টাকা, আগস্ট মাসে ৬৭ টাকা এবং অক্টোবরে দাম হয় ৭০ টাকা। নভেম্বর মাস থেকে প্রতি লিটার জেট ফুয়েল ৭৭ টাকায় এয়ারলাইনসগুলোকে সরবরাহ করছে পদ্মা অয়েল।

এয়ারলাইনসগুলো বলছে, এভাবে ঘন ঘন জেট ফুয়েলের দাম বাড়লে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে পুরো এভিয়েশন খাত। এতে বাজার বিদেশি এয়ারলাইনসের দখলে চলে যাওয়ার আশঙ্কাও করছে তারা।

বেসরকারি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের জনসংযোগ বিভাগের মহাপরিচালক কামরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যেকোনো রুটের অপারেটিং কস্টের ৪০ ভাগই হচ্ছে ফুয়েল কস্ট। এটা যদি গত এক বছরে ৬৭ শতাংশেরও বেশি বেড়ে থাকে, তাহলে এটা সমন্বয় করতে হবে ভাড়া থেকেই। এতে যাত্রীদের ওপর সরাসরি একটি প্রভাব পড়ে। যাত্রী প্রবৃদ্ধির ওপরও প্রভাব পড়বে।

‘করোনার সময় অন্য দেশগুলো যেখানে এয়ারলাইনসকে টিকিয়ে রাখতে বিভিন্ন রকম সুযোগ সুবিধা দিয়েছে, সেখানে দেশে এভাবে বারবার ফুয়েলের দাম বৃদ্ধি কতটুকু যৌক্তিক, এটা আমার জায়গা থেকে বলাটা মুশকিল। তবে এটা সরকারের বিবেচনায় থাকা উচিত।’

তিনি বলেন, ‘এটার প্রভাব যাত্রীদের ওপরেই পড়বে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ অন্য কোথাও সমন্বয়ের কোনো সুযোগ নেই। এয়ারলাইনসের টিকে থাকতে গেলে এটা ভাড়ার সঙ্গেই সমন্বয় করতে হবে। একসময় আমাদের সর্বনিম্ন ভাড়া ছিল ২ হাজার ৫০০ কিন্তু এবার ভাড়া বৃদ্ধির আগেই সেটি হয়েছে ৩ হাজার ৬০০ টাকা। এখন যে আবার ৭ টাকা লিটারে বাড়ল, এটাও কিন্তু ভাড়াতেই প্রভাব ফেলবে।

‘যদিও এখনও এটা করা হয়নি, কিন্তু এটা না করে উপায়ও নেই। এভিয়েশন খাতের টিকে থাকার জন্যই এটা বড় হুমকি। কারণ আমাকে প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে বিদেশি এয়ারলাইনসের সঙ্গে। সেখানে (অন্য দেশগুলোতে) যদি ফুয়েলের দাম না বাড়ে, তাহলে আমরা তো প্রতিযোগিতা করতে পারব না। এতে বাজার চলে যাবে বিদেশি এয়ারলাইনসের দখলে।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, শেষ পর্যন্ত জেট ফুয়েলের বাড়তি দামের বোঝা পড়বে যাত্রীদের ওপরেই। এতে দেশি-বিদেশি সব রুটের যাত্রার ব্যয় বেড়ে যাবে বলে মত তাদের।

এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহেদুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মহামারির কারণে পুরো এভিয়েশন খাতই কিন্তু বিপর্যস্ত অবস্থায় আছে। যেখানে এই খাত সরকারের বেশি সহযোগিতা আশা করে, সেখানে এভাবে বারবার জ্বালানির (জেট ফুয়েল) দাম বাড়লে এটা সমন্বয় করতে গিয়ে এয়ারলাইনসগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শেষ পর্যন্ত তো এই খরচের বোঝা চাপবে জনগণের ওপরেই। যাত্রীরাই এতে হবে ক্ষতিগ্রস্ত।

‘আমাদের দেশে কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ডমিস্টিক ট্রাভেল অনেক বেড়েছে। ইন্টারন্যাশাল ট্রাভেলেও অতি প্রয়োজনেই মানুষ যাচ্ছে। এখন তো বিনোদনের জন্য ট্রাভেল তেমন একটা হচ্ছে না। মেডিক্যাল আর এডুকেশনের জন্যই মূলত ট্রাভেলটা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘এখনই আমরা দেখছি আন্তর্জাতিক রুটগুলোতে ভাড়া অনেক বেড়েছে। যেখানে ২০ হাজার টাকায় টিকিট পাওয়া যেত, সেখানে ৪০ বা ৫০ হাজার টাকাও টিকিটের দাম উঠছে।

‘সেখানে তেলের দাম সমন্বয় করতে গেলে আবার ভাড়া বাড়বে, এতে সন্দেহ নেই। আমি মনে করি, এটা সরকারের পুনর্বিবেচনা করা উচিত।’

এ বিভাগের আরো খবর