পুঁজিবাজারে উত্থানের এক বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ-আইসিবি খুব একটা ভালো করতে পারেনি। আগের বছরের তুলনায় আয় বাড়লেও সার্বিক বিচারে তা খুব একটি বেশি নয়।
গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরের হিসাব পর্যালোচনা করে বুধবার বিনিয়োগকারীদের জন্য ১১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে পরিচালনা পর্ষদ। অর্থাৎ প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে লভ্যাংশ মিলবে এক টাকা ১০ পয়সা।
১০০ টাকারও বেশি শেয়ার মূল্য কোম্পানিটির। এই হিসেবে লভ্যাংশের ইল্ড দাঁড়ায় ১ শতাংশেরও কম।
কোম্পানিটি ২০২০ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত শেয়ার প্রতি আয় করেছে ১ টাকা ৪৩ পয়সা। আগের বছর শেয়ার প্রতি আয় ছিল ৭৪ পয়সা।
এই এক বছরের পুঁজিবাজারের উত্থান বিবেচনায় নিলে এই আয় বৃদ্ধিকে নগণ্যই বলা যায়।
২০১৯ সালের জুলাইয়ের প্রথম কর্মদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক ছিল ৫ হাজার ৩৮৪.৯২ পয়েন্ট। আর ২০২০ সালের জুনের শেষ কর্মদিবসে সূচক কমে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৯৮৯.০৮ পয়েন্ট।
অর্থাৎ ওই অর্থবছরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক কমে এক হাজার ৩৯৫ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট। এই সময়েও কোম্পানিটির আয় খুব একটা কমেনি এমন নয়। ২০১৯ সালে শেয়ার প্রতি আয় যেখানে ছিল ৮৬ পয়সা, সেখান থেকে পরের বছর তা কমে ১২ পয়সা।
গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে আইসিবির আর্থিক বিবরণীর সংক্ষিপ্তসার ও লভ্যাংশের ঘোষণা
কিন্তু ২০২০ সালের জুলাই থেকে চলতি বছর জুন পর্যন্ত পুঁজিবাজার ছিল উত্থান পর্বে। ২০২০ সালের জুলাইয়ের প্রথম কর্মদিবস অর্থবছর শুরুর দিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক ছিল ৩ হাজার ৯৮৬.৭৩ পয়েন্ট। আর ২০২১ সালের জুনে তা দাঁড়ায় ৬ হাজার ১৫০.৪৮ পয়েন্ট। অর্থাৎ এই এক বছরে সূচক বাড়ে ২ হাজার ১৬৩.৭৫ পয়েন্ট।
এই পুরো বছরে সময় শেয়ার মূল্য বাড়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। এ কারণে তালিকাভুক্ত ব্যাংক, বিমা, মিউচ্যুয়াল ফান্ড বা অন্যান্য কোম্পানি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে আর্থিকভাবে বেশ লাভবান হয়েছে। কিন্তু সূচক বৃদ্ধির এই সুফল আইসিবির আর্থিক বিবরণীতে পড়েনি।
আইসিবি এই এক বছরে আগের বছরের তুলনায় শেয়ারে আয় বাড়াতে পেরেছে কেবল ৬৯ পয়েন্ট।
এই এক বছরে শেয়ার প্রতি সম্পদও খুব একটা বেড়েছে এমন নয়। ২০২০ সালের জুন শেষে সম্পদ ছিল ৫৪ টাকা ১২ পয়সার। এক বছর পর সেটি বেড়ে হয়েছে ৫৪ টাকা ৯৮ পয়সা।
এই লভ্যাংশ সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১ ডিসেম্বর। অর্থাৎ যারা লভ্যাংশ নিতে চান, তাদেরকে সেদিন শেয়ার ধরে রাখতে হবে। লভ্যাংশ চূড়ান্ত করতে বার্ষিক সাধারণ সভা ডাকা হয়েছে আগামী ২৮ ডিসেম্বর।
আইসিবির এবারের লভ্যাংশ গত বছরের চেয়ে ১ শতাংশ বেশি। তবে আগের বছর ৫ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়ার পর শেয়ার দরে উত্থানের কারণে বিনিয়োগকারীরা আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন।
অবশ্য সাম্প্রতিক উত্থানের পর দর সংশোধনে আইসিবির বিনিয়োগকারীরা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখেও পড়েছেন।
গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৮০ টাকা থেকে ১৭৪ টাকা পর্যন্ত উঠানামা করেছে। অক্টোবরের শুরুতে এই সর্বোচ্চ দরে উঠার পর সংশোধনে ৫০ টাকারও বেশি দর হারায় কোম্পানিটি। গত ৮ নভেম্বর শেয়ারদর ১১৬ টাকা ৯০ পয়সায় নেমে আসে। তবে এরপর টানা দুই দিন বেড়ে দর দাঁড়িয়েছে ১২৬ টাকা ৭০ পয়সা।