বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ডাস্টবিনে নয়, যত্রতত্র আবর্জনার স্তূপ

  •    
  • ১০ নভেম্বর, ২০২১ ১৮:৪০

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সোহেল রানা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কিছু পুকুর রয়েছে। এর বেশির ভাগ ময়লা-আবর্জনায় ভর্তি। ডাস্টবিনও যথেষ্ট নেই। ক্যাম্পাসের অসুন্দর জায়গাগুলোসহ পুকুরগুলো পরিষ্কার করা প্রয়োজন। প্রশাসনের উচিত হবে আরও কিছু ডাস্টবিন রাখা এবং সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সাইনবোর্ড লাগানো।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বর্জ্য ব্যবস্থাপনার চিত্র এতটাই নাজুক যে ক্যাম্পাসের যত্রতত্র জমিয়ে রাখা হয়েছে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। প্রায় ৭৫০ একর জায়গাজুড়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

দেশের অন্যতম সৌন্দর্যমণ্ডিত এই ক্যাম্পাস প্রাকৃতিক রূপ-বৈচিত্র্যে সুশোভিত। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন অনেক অসুন্দর জায়গা রয়েছে, যা দৃষ্টিগোচর হয়। যেটি সব সৌন্দর্যবোধকে নিমেষেই ম্লান করে দেয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবন ও হল ঘুরে দেখা গেছে, ডাস্টবিন থাকার পরও ময়লা স্তূপ করে রাখা হচ্ছে। গত ১৭ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল খুলে দেয়া হয়। গত দেড় বছর এই হলগুলো বন্ধ থাকায় হলের প্রতিটি কক্ষ ময়লা-আবর্জনার স্তূপে পরিণত হয়েছে।

মতিহার হলের গেটের পাশে ময়লার স্তূপ।

শিক্ষার্থীরা এই আবর্জনাগুলো যে যেখানে পারছে সেখানেই ফেলছেন। কেউ রুমের সামনে, কেউ হল গেটের পাশে, আবার কেউ ডাস্টবিনে নিয়ে এলেও তার এক পাশে রেখে চলে যাচ্ছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও যত্রতত্র ময়লা রাখতে দেখা যায়। ফলে পুরো ক্যাম্পাসের বেশ কিছু স্থানে ময়লার স্তূপ জমেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হলের কথাই ধরা যাক। এই হলের গেটের সামনেই রাস্তা। তার পাশেই ডাস্টবিন। সেখানে দেখা যায়, ঠিকমতো অপসারণ না করায় ডাস্টবিন থেকে ময়লা উপচে পড়ে আছে। এ অবস্থায় ডাস্টবিনের পাশেই ময়লা-আবর্জনা স্তূপ করে রাখতে দেখা যায়।

শহীদ জিয়াউর রহমান হলের ভেতরে ঢুকে সিঁড়ি দিয়ে দ্বিতীয় তলায় উঠতেই এক পাশে আবর্জনার স্তূপ চোখে পড়ে। বিভিন্ন রুমের সামনে ও খালি জায়গাগুলোতেও সৌন্দর্যবোধকে নষ্ট করার মতোই ময়লার স্তূপ লক্ষণীয়।

ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থানসংলগ্ন পুকুরের পাড়সহ বিভিন্ন জায়গায় জন্মদিন, পিকনিক উদযাপিত হয়। এসব অনুষ্ঠানস্থলে ডাস্টবিন থাকার পরও সেগুলো ব্যবহার করছেন না কেউই।

মাদার বখশ্ হলের পাশেও রয়েছে এমন ময়লার স্তূপ।

এমনকি পুকুরের মধ্যেও ফেলা হচ্ছে প্লাস্টিকের প্লেট, গ্লাস, চিপসের প্যাকেটসহ অপচনশীল সব আবর্জনা। এ অবস্থার জন্য সবার সচেতনতার অভাব ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে ১০টি বড় ও ২৫টি ছোট ডাস্টবিন নির্মাণে ব্যয় হয় ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা। ২০১৯ সালে শুধু বড় আকারের ২০টি ডাস্টবিন নির্মাণ করা হয়। যেখানে ব্যয় হয় ১৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা।

কথা হয় মাদার বখশ্ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মারুফ হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলে ক্যাম্পাসের সুন্দর পরিবেশকে নষ্ট করছে অনেকেই। হল কর্তৃপক্ষের যারা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে নিয়োজিত তারাই ক্যাম্পাসের ময়লা-আবর্জনা যেখানে সেখানে রাখছেন।’

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সোহেল রানা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কিছু পুকুর রয়েছে। এর বেশির ভাগ ময়লা-আবর্জনায় ভর্তি। ডাস্টবিনও যথেষ্ট নেই। ক্যাম্পাসের অসুন্দর জায়গাগুলোসহ পুকুরগুলো পরিষ্কার করা প্রয়োজন।

‘প্রশাসনের উচিত হবে আরও কিছু ডাস্টবিন রাখা এবং সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সাইনবোর্ড লাগানো।’

রাবি স্টুয়ার্ড শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার সরদার মো. সোহরাব হোসেন বলেন, ‘ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে যে ময়লা-আবর্জনা দিনেরটা দিনেই পরিষ্কার করার চেষ্টা করছে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। এরপরও থেকে যায়। আমাদের লোকবলের সংকট আছে।

‘এত বড় ক্যাম্পাসের পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব নিতে হলে কমপক্ষে ৫৫-৬০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মীর প্রয়োজন। যেখানে আছেন মাত্র ৩৪ জন। তাদের মধ্যেও অনেকে আবার বিভিন্ন দপ্তর ও বিভাগের কাজের সঙ্গে জড়িত।’

এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘আমাদের অনেক শিক্ষার্থীরাও ডাস্টবিনে ময়লা-আবর্জনা না রেখে যত্রতত্র ফেলছে। ক্যাম্পাস সুন্দর ও পরিষ্কার রাখতে শিক্ষার্থীদের সচেতনতাই বড় শক্তি। বহিরাগতরা আসছেন প্রতিনিয়ত, তারাও অজ্ঞতাবশত ক্যাম্পাস নোংরা করছেন।

সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ক্যাম্পাসের বিশেষ জায়গাগুলোতে ডাস্টবিন ব্যবহারের নির্দেশনাসংবলিত সাইনবোর্ড স্থাপন করা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

এ বিভাগের আরো খবর