গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী ব্রিজের একটি স্ল্যাবের অংশবিশেষ ধসে পড়েছে।
এতে করে রাজধানীর প্রবেশপথে যান চলাচলে ধীরগতি ও যানজট দেখা দিয়েছে।
তুরাগ নদীর ওপর (পূর্ব পাশের) পুরোনো ব্রিজটির ডেক্স স্ল্যাবের কিছু অংশ মঙ্গলবার গভীর রাতে ধসে পড়ে। সকালে বিআরটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ভাঙা অংশে লোহার পাটাতন দিয়ে সাময়িক সংস্কার করে যান চলাচল ফের শুরু করে। মেরামতের পর যান চলাচল শুরু হলেও ধীর গতি দেখা দিয়েছে। থেমে থেমে যানজটও সৃষ্টি হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ব্রিজের পূর্ব পাশের অংশে একটি স্ল্যাব ভেঙে লোহা বেরিয়ে আছে। এর পাশেই ব্রিজের একটি দেয়াল হেলে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ওই অংশে বাঁশ দিয়ে ঘেরাও করে রাখা হয়েছে। আর স্ল্যাবের ভাঙা অংশের ওপর লোহার শিট বা পাটাতন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে।
ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল করছে বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন পরিবহন। অপরদিকে ব্রিজের নিচের অংশে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙা অংশ দিয়ে গাড়ি চলাচল করায় ঢালাই ভেঙে পড়ে স্তূপ হয়ে আছে। ব্রিজের ওপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচলের সময় গুড়মুড় করে শব্দ হচ্ছে। এ ছাড়া ব্রিজটির পিলারের বেশ কিছু জায়গায় ফাটল রয়েছে।
বিআরটি প্রজেক্টের দায়িত্বরত শ্রমিক সোহেল জানান, রাতে ভারী যানবাহন চলাচল করে বেশি। এর ফলে ভোররাতে ব্রিজের ওপরের স্ল্যাব ভেঙে পড়ে। পরে বাঁশ ও লাল কাপড় বেঁধে দিয়ে এক লেনে গাড়ি চলাচল করে।
বলাকা বাসের চালক মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘গাড়ি নিয়ে ব্রিজে উঠলেই বুক ধড়ফড় করে। একটা আতঙ্কের মধ্য দিয়ে গাড়ি চালাই।’
পথচারী রবিউল ইসলাম বলেন, ব্রিজটি অনেক আগে থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ। ব্রিজের পিলারের নিচে মাটি নেই। তাই দ্রুত সংস্কার না করলে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘বুধবার সকাল থেকেই ওই পথে যানবাহন চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। অফিস টাইমে গাড়ির অতিরিক্ত চাপের কারণে মহাসড়কে গাড়ির লম্বা লাইন সৃষ্টি হয়।
‘পরে বিআরটি প্রকল্পের লোকজন গিয়ে মেরামত করলে দুই লেনে যানবাহন চলাচল শুরু করে। তবে যান চলাচলে ধীরগতি রয়েছে।’
অপরদিকে টঙ্গী ব্রিজটি বিআরটি প্রজেক্টের আওতাধীন জানিয়ে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি গাজীপুর সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফ উদ্দিন।
এ বিষয়ে বিআরটি প্রকল্পের (ব্রিজ বিভাগ) প্রকল্প পরিচালক মহিরুল ইসলাম খান বলেন, ‘পুরোনো ওই ব্রিজটিতে ডেস্ক স্ল্যাব ড্যামেজ থাকায় হঠাৎ করে একটি স্ল্যাবের কিছু অংশ ভেঙে পড়ে।
‘পরে ভাঙা অংশে লোহার পাটাতন দিয়ে মরামত করে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এখন ব্রিজটিতে গাড়ি চলাচলে কোনো বড় ধরনের ঝুঁকি নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিআরটি প্রজেক্টের আওতায় পুরোনো টঙ্গী ব্রিজটি ভেঙে ১০ লেনের ব্রিজ নির্মাণের কাজ চলছে। এরই মধ্যে পশ্চিম পাশে ৫ লেনের ব্রিজটির নির্মাণকাজ প্রায় শেষের দিকে।
‘এটি খুলে দেয়ার পর পূর্ব পাশের ব্রিজটি ভেঙে আরও ৫ লেনের ব্রিজ নির্মাণকাজ শুরু হবে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে পুরোনো ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি ভেঙে নতুন ব্রিজ নির্মাণকাজ শুরু হবে। তাই এ সময়ে আমরা পুরোনো ব্রিজটিতে বড় কোনো সংস্কারে যাচ্ছি না।’