বর্তমান বাস্তবতায় জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো যৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বুধবার অর্থনৈতিক ও ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মন্ত্রী বলেন, দাম যখন কম থাকে তখন সবাই এর সুফল পান। দাম বাড়লে জনগণকে একটু চাপ সহ্য করতে হবে।
তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে তার সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী এর পরিষ্কার জবাব দেননি।
তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব কিছু ক্ষমতা থাকে। তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে জ্বালানি মন্ত্রণালয় সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করেছে। তবে প্রয়োজন হলে নিশ্চয়ই অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করবে।’
করোনাভাইরাসের কারণে এমনিতেই সাধারণ মানুষ কষ্টে আছে। তেলের দাম বৃদ্ধিতে সেই কষ্ট আরও বাড়বে কি না, তা জানতে চাওয়া হয় অর্থমন্ত্রীর কাছে।
জবাবে তিনি বলেন, ‘জনগণকে কিছু চাপ তো মেনে নিতে হবে। জ্বালানি তেলে সরকার অনেক ভতুর্কি দিচ্ছে। দাম বাড়িয়ে তা কিছুটা সমন্বয় করা হয়েছে।
‘সরকার টাকা নিয়ে রেখে দেয় না। সামাজিক নিরাপত্তাসহ নানা ধরনের জনকল্যাণ কাজে ব্যয় করে। সরকার টাকা প্রিন্ট করে না; আয় করে ব্যয় করে।’
মুস্তফা কামাল আরও বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী হিসেবে আমার দায়-দায়িত্ব আছে। সরকার চালাতে প্রচুর রাজস্ব দরকার। আমাকে তো এসব বিষয় বিবেচনা করতে হবে।’
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) কীভাবে দাম বৃদ্ধি করেছে, তা বিচার-বিশ্লেষণ করে আগামী সভা শেষে এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলবেন বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ দেখিয়ে গত ৩ নভেম্বর দেশে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ায় সরকার। লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়। সে হিসাবে দাম এক লাফে বেড়েছে ২৩ শতাংশ।
প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর পর সরকার জ্বালানি তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করে। ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল সরকার জ্বালানি তেলের দাম কমিয়েছিল।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পরই বাসের ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনে নামেন মালিকরা। তাদের আকস্মিক ধর্মঘটের মুখে সরকার বাস ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা দেয়।
সরকারের সঙ্গে মালিকপক্ষের সমঝোতা অনুযায়ী, দূরপাল্লার বাস ভাড়া ২৭ শতাংশ এবং মহানগরে ২৬ দশমিক ৫০ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। এই বাড়তি ভাড়া কার্যকর হয়েছে শুধু ডিজেলচালিত বাসের ক্ষেত্রে। সিএনজিচালিত পরিবহনের ভাড়া আছে আগের মতোই।