দেশের ই-কমার্স খাতকে সাম্প্রতিক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি থেকে মুক্ত করতে কার্যকর সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ গঠিত কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা হচ্ছে বুধবার।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে এ প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।
ডিজিটাল কমার্স সেল প্রধান ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ও আমদানি) এএইচএম সফিকুজ্জামান মঙ্গলবার নিজ দপ্তরে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
সফিকুজ্জামান বলেন, ‘ই-কমার্স সেক্টর নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গঠিত কমিটির শেষ এবং ফাইনাল মিটিং ছিল আজ। কমিটির প্রস্তুতি ও নির্দিষ্ট সময়সীমা অনুযায়ী আগামীকালের (বুধবার) মধ্যেই আমরা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে ই-কমার্স সেক্টর সংক্রান্ত চূড়ান্ত ফাইন্ডিংস প্রতিবেদন উপস্থাপন করব।’
তিনি বলেন, ‘আমরা টার্ম অফ রেফারেন্সের (টিওআর) আলোকে ফাইন্ডিংস প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দাখিলকৃত প্রতিবেদনে টিওআর অনুযায়ী ই-কমার্স সেক্টরকে শৃঙ্খলায় আনতে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানকে ইউবিআইডি দেয়ার ওপর জোর দেয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে সবাইকে ইউনিক বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নাম্বারের (ইউবিআইএন) আওতায় আনা হবে।
‘অলরেডি এ সংক্রান্ত হার্ডকপি এবং সফট কপি চূড়ান্ত হয়েছে। এখন এর অ্যাপ ডেভেলপমেন্টের কাজ চলছে, যা করছে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন বিভাগ (এটুআই)। আশা করছি আমরা খুব শিগগিরই এটার কাজ চালু করতে পারব।’
ডিজিটাল কমার্স সেলের প্রধান বলেন, ‘দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হচ্ছে প্রচুর টাকা গেটওয়ে সিস্টেমে আটকে আছে। চলতি বছরের ৩০ জুনের পর হিসাব অনুযায়ী ২১৪ কোটি টাকার বেশি আটকে আছে। এ ছাড়া ৩০ জুনের আগে হিসাব অনুযায়ী পাওনা আছে ৫১২ কোটি টাকা।
‘গেটওয়েতে আটকা এসব টাকা ফেরত দেয়ার বিষয়ে অলরেডি সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ ও সিআইডিকে চিঠি দেয়া হয়েছে। এরপর আরও একটি মিটিং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব কীভাবে টাকাটা ফেরত দেয়া যায়, এ নিয়ে ওই মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডার সবাই ছিল। প্রক্রিয়াটি এখন মামলা-মোকাদ্দমার মধ্যে রয়েছে। এ কারণে এ সমস্যার সমাধানে আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে এ বিষয়ে একটি মতামত চাওয়া হয়েছে।
‘আইন মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত মতামত পেলেই যেগুলো মামলা মোকাদ্দমার মধ্যে নেই সেগুলো ফেরত দেয়া শুরু হবে, তবে মামলা-মোকাদ্দমায় জড়িত হিসাবগুলো কীভাবে ফেরত দেয়া যায়, সে নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘ই-কমার্স সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে রেগুলার মামলা হয়েছে চারটি। মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত ১১ মামলার ইনভেস্টিগেশন চলছে।’
ইভ্যালি সংক্রান্ত অপর এক প্রশ্নের জবাবে ডিজিটাল কমার্স সেলের প্রধান বলেন, ‘ইভ্যালির বিষয়টি এখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেখছে না। এ বিষয়ে আদালত কর্তৃক গঠিত একটি বোর্ড রয়েছে। ওই বডি ইভ্যালির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
‘ই-কমার্স নিয়ে এখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে। সেটি কোনো একটি একক প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে নয়। গোটা ই-কমার্স সেক্টরকে কীভাবে একটি শৃঙ্খলার মধ্যে আনা যায়, সে কাজটি করছে।’