চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের এলএ শাখা থেকে প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় তিন কোটি টাকা উত্তোলনের চেষ্টার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে অভিযান চালিয়ে সোমবার বিকেল ৫টার দিকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন। এর আগে রোববার রাতে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের পক্ষ থেকে থানায় একটি মামলা করা হয়।
চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ মমিনুল হাসান বলেন, জোহুরা নামের এক নারীকে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার বাবা ওসমান গনি ও এলএ শাখার চেইনম্যান নেজামুল করিমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জোহুরা একটি রেজিস্টার্ড পাওয়ার অব অ্যাটর্নির বিপরীতে এলএ শাখা থেকে ২ কোটি ৮৬ লাখ টাকার চেক অবৈধভাবে তোলার আবেদন করেন। ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময় তিনি পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দাতাদের সঙ্গে তার সম্পর্কের বিষয়টি পরিষ্কার করতে ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে তাদের চেনেন না বলেও স্বীকার করেন।
এরপর জেলা প্রশাসকের নির্দেশে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে পাওয়ার দাতাদের ঠিকানায় অনুসন্ধান করা হয়। পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি দলিলে উল্লেখ করা ঠিকানায় আবুল কালাম শামসুদ্দিন ও আবু হেনা মোস্তফা কামাল নামে দুজনের সন্ধান পাওয়া যায়। তারা জানান, কাউকেই তারা তাদের জমির ক্ষতিপূরণ উত্তোলনের জন্য ক্ষমতা দেননি।
অধিকতর অনুসন্ধানের জন্য আবুল কালাম শামসুদ্দিন ও আবু হেনা মোস্তফা কামালকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ডেকে আনা হয়। তখন পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি দলিলটি দেখে তারা বলেন, দলিলে তাদের নামের বিপরীতে যে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দেয়া হয়েছে, সেটি তাদের নয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তারা প্রতারণার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ করেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ক্ষতিপূরণের আবেদনকারী জোহুরা একটি প্রতারক সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত। প্রতারণা করে তারা পাওয়ার অফ অ্যাটর্নির দলিলটি চট্টগ্রাম সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে রেজিস্ট্রি করে। এরপর সে দলিলের বিপরীতে ক্ষতিপূরণের আবেদন করে চক্রটি। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান বলেন, ‘এ প্রতারণার সঙ্গে যারাই যুক্ত তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। এর আগেও জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে অভিযান চালিয়ে দালাল চক্রের চারজনকে আটক করে শাস্তি দেয়া হয়েছিল।’