চার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায় পড়া শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালতে আলোচিত মামলাটির রায় পড়া শুরু হয়।
রায় উপলক্ষে আদালত চত্বরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে।
সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মামলার অন্যতম আসামি ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতিকে (বাবুল চিশতি) কাশিমপুর কারাগার থেকে একটি প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে আনা হয়। আদালতে উপস্থিত রয়েছেন আর ছয় আসামি।
এর আগে ২১ অক্টোবর একই আদালতে রায় ঘোষণার তারিখ থাকলেও বিচারক ছুটিতে থাকায় এবং রায় প্রস্তুত না হওয়ায় তা পিছিয়ে যায়।
ফলে আলোচিত মামলাটির রায় ঘোষণার জন্য ফের নতুন তারিখ ঠিক করে আদালত।
এর আগে গত ৫ অক্টোবর মামলাটির রায় ঘোষণার তারিখ থাকলেও সেদিনও বিচারক ছুটিতে থাকায় সেটি পিছিয়ে দেয়া হয়।
আসামিপক্ষের আইনজীবী শাহীনুর ইসলাম অনি নিউজবাংলাকে জানান, মামলার শুনানিতে ২১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হলেও সাক্ষীরা তাদের জবানবন্দিতে মামলার ঘটনা প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছেন। এ ছাড়া জেরার সময় সাক্ষীরা তাদের বক্তব্যের সত্যতা প্রমাণ করতে পারেননি।
তাই রায়ে আসামিরা ন্যায়বিচার বা খালাস পাবেন বলে প্রত্যাশা তার।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে দুদকের প্রধান আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল জানান যে, আসামিদের অপরাধ প্রমাণে তারা সক্ষম হয়েছেন, তাই তাদের সর্বোচ্চ সাজা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী নিউজবাংলার এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষ এখন পর্যন্ত নিশ্চিত মঙ্গলবার রাখা তারিখেই আলোচিত মামলাটির রায় ঘোষণা করা হবে।’
গত ২৪ আগস্ট মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। মামলার অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্ত ২১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত।
গত বছরের ১৩ আগস্ট একই আদালত ১১ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
ফারমার্স ব্যাংক থেকে ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ২০১৯ সালের ১০ জুলাই দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন। মামলা তদন্ত করে একই বছরের ৯ ডিসেম্বর চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের পরিচালক বেনজীর আহমেদ।
আসামিদের মধ্যে ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতী (বাবুল চিশতী) কারাগারে, ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক এমডি এ কে এম শামীম, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল হক, সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান এবং একই এলাকার বাসিন্দা নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা জামিনে আছেন।
এ ছাড়া সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, ফারমার্স ব্যাংকের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, রণজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী রায় পলাতক রয়েছেন।