স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে আলোচনা শেষে পণ্যবাহী যানবাহন মালিকদের ডাকা ধর্মঘট স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক-শ্রমিক নেতারা।
সোমবার রাত পৌনে ৮টার দিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠকটি শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। রাত প্রায় ১০ টার দিকে ধর্মঘট স্থগিতের ঘোষণা আসে।
বৈঠকে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে জননিরাপত্তা, যোগাযোগ ও জ্বালানি সচিবের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বিআরটিএর চেয়ারম্যানও।
আন্দোলনকারীদের পক্ষে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী।
বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক ও শ্রমিকদের দাবি যৌক্তিক। এ কারণে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, এফবিসিসিআইকে অনুরোধ করবো তাদের সেবার যৌক্তিক ভাড়া নির্ধারণ করতে।
‘আমাদের সঙ্গে মালিক শ্রমিকরা আলোচনা করে এখন থেকেই ধর্মঘট স্থগিত করেছেন। এখন থেকেই পরিবহন চলবে।’
ট্রাক ধর্মঘট নিয়ে মালিক-শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। ছবি: নিউজবাংলা
এ সময় বাংলাদেশে সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেন, ‘আমরা মূলত এখানে ডিজেলের বাড়তি দাম প্রত্যাহারের দাবি নিয়ে এসেছিলাম। এ নিয়ে অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। যেভাবে বাস ও লঞ্চের ভাড়া সমন্বয় করা হয়েছে আমরা আশা করবো একই ভাবে আমাদের ভাড়াও সমন্বয় করা হবে।’
‘এ কারণে সারা দেশের ট্রাক মালিক কাভার্ড ভ্যান, প্রাইমুভার মালিক-শ্রমিকদের অনুরোধ করবো এখন থেকেই আপনারা যান চলাচল চালু করুন।’
কত শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির দাবি করছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘৩০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করা হলে সেটি হবে যৌক্তিক।’
এ সময় সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক সমিতির মহাসচিব তাজুল ইসলাম বলেন, ‘যমুনা ও মুক্তারপুর সেতুর বর্ধিত টোল প্রত্যাহার এবং দেশের সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলো পণ্য পরিবহন যানের ওপর যে টোল নেয় তা বন্ধ করার দাবি সরকার মেনে নিয়েছেন।’
এর আগে, ডিজেলের বাড়তি দাম প্রত্যাহারসহ তিন দফা দাবিতে পণ্যবাহী যানবাহন মালিকদের ডাকা ধর্মঘটে সৃষ্ট সংকট নিরসনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক শুরু হয়।
গত বুধবার মধ্যরাত থেকে ডিজেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৮০ টাকা নির্ধারণ করে সরকার। এর প্রতিক্রিয়ায় পরদিন থেকেই পণ্যবাহী ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান বন্ধ করে দেন মালিকরা। শুক্রবার শুরু হয় সড়ক পরিবহন ধর্মঘট। শনিবার থেকে লঞ্চ চলাচলও বন্ধ করে দেয়া হয়।
এর মধ্যে বাস ও লঞ্চমালিকদের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে বসে রোববার ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করে সরকার। এরপর ধর্মঘট থেকে সরে আসেন বাস ও লঞ্চ মালিকরা। তবে ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান মালিকদের সঙ্গে কোনো বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়নি।
রোববার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ট্রাক মালিক সমিতির নেতারা এক ব্রিফিংয়ে ধর্মঘট অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।
তাদের দাবিগুলো ছিলো জ্বালানি তেলের (ডিজেল ও কেরোসিন) বর্ধিত মূল্য প্রতি লিটারে ১৫ টাকা প্রত্যাহার, যমুনা ও মুক্তারপুর সেতুর বর্ধিত টোল প্রত্যাহার এবং দেশের সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলো পণ্য পরিবহন যানের ওপর যে টোল নেয় তা বন্ধ করা।