গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানের অনিয়মে পুরো ই-কমার্স খাত হুমকির মুখে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন উদ্যোক্তারা।
রাজধানীর একটি হোটেলে সোমবার ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে তাদের পক্ষ থেকে এ মন্তব্য করা হয়।
ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের সংগঠন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সাত বছর পূর্তি উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এতে বলা হয়, ই-কমার্সের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসা পদ্ধতির কারণে এমন বিপদ এসেছে। এ খাতের ১ হাজার ৬২২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০ থেকে ১২টির বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। তার মানে এই নয় যে, সব প্রতিষ্ঠানই সমস্যা।
একাধিক বক্তা বলেন, করোনায় ঝুঁকি নিয়ে এ খাতের কর্মীরা সেবা দিয়ে গেছে। ২০২২ সালের মধ্যে আরও ৫ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চায় ই-ক্যাব।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলেন, ই-কমার্স ব্যবসায় তরুণ উদ্যোক্তাদের ব্যাংক ঋণ পেতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। ১৫০ কোম্পানি ঋণের জন্য আবেদন করলেও মাত্র ১৩টি ঋণ পায়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ই-ক্যাবের সহসভাপতি সাহাব উদ্দিন শিপন।
তিনি বলেন, ‘করোনাকালীন এ খাত সেবা দিয়ে যে আস্থা তৈরি করেছে, সেটা কোনোভাবে নষ্ট হতে দিতে চায় না ই-ক্যাব। নীতিমালা মেনে ব্যবসা করে মানসম্পন্ন সেবা দিয়ে আবারও প্রবৃদ্ধিতে ফিরতে চাই।’
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, ‘এখনও এ খাত লাভের মুখ দেখেনি। গেল দুই বছরে প্রায় ২০০টি কোম্পানির লাইসেন্স যাচাই-বাছাই করে সদস্য করেনি ই-ক্যাব। আর বর্তমানে ৫৬টি কোম্পানি ই-ক্যাবের সদস্য হতে আবেদন করেছে। সেগুলো যাচাই করা হচ্ছে।’
পরিচালক আশীষ চক্রবর্তী বলেন, ‘ই-কমার্স একটা বাজে সময় পার করছে। পেমেন্ট গেটওয়েতে গ্রাহকদের যে টাকা আটকে আছে, সেটা ফেরত দেয়ার উপায় বের করতে আমরা চেষ্টা করছি।
‘এস্ক্রো পদ্ধতি এখনও ডিজিটাল হয়নি। সেটা ডিজিটাল করার জন্য কাজ করছি।’
ই-ক্যাবের জেনারেল ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম শোভনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ই-ক্যাবের অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল হক অনু, যুগ্ম সম্পাদক নাসিমা আক্তার নিশা, পরিচালক জিয়া আশরাফ, আসিফ আহনাফ ও সাঈদ রহমান।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ, ধামাকা শপিং, কিউকমের পর সম্প্রতি এই ব্যবসা সংশ্লিষ্ট ২৩ প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব চেয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
এর মধ্যে রয়েছে দারাজ ডটকম ডটবিডি ও এর বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান আলিবাবা, প্রিয়শপ ডটকম, গেজেট মার্ট ডটকম, ব্রাইট হ্যাশ, ওয়াল মার্ট, আকাশনীল, বাড়িদোকান ডটকম, টিকটিকি, ইনফিনিটি মার্কেটিং লিমিটেড, এনেক্স ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ও অ্যামস বিডির মতো প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের যাবতীয় লেনদেন তথ্য চাওয়া হয়েছে।