শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর আগেই সিলেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাডহক ভিত্তিতে ১৭২ জনকে নিয়োগের ঘটনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পর এবার তদন্তে নেমেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।
রোববার এ সংক্রান্ত একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে সংস্থাটি। ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের ওই কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, ইউজিসির সচিব ফেরদৌস জামান ও উপপরিচালক মৌলি আজাদ (সদস্যসচিব)।
এ বিষয়ে ইউজিসির সচিব ফেরদৌস জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সিলেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাডহক ভিত্তিতে ১৭২ জনকে নিয়োগের ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১৬ নভেম্বর তদন্ত কমিটি সিলেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ইউজিসি থেকে কয়টি পদ অনুমোদন দিয়েছি, তারা কতজনকে নিয়োগ এবং বেতন দিয়েছে এটাই তদন্তে দেখব। আমরা যখন পদ অনুমোদন করি, তখন সুস্পষ্ট ভাবে বলে দিই যে, রাজস্ব খাতের নিয়ম মেনে উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পরীক্ষা নিয়ে নিয়োগ নেয়ার। সিলেট মেডিক্যালের নিয়োগে এ নিয়মের ব্যতয় ঘটেছে কি না এটাই আমরা দেখবে।’
এর আগে ১ নভেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের কমিটি সিলেটে আসেন। ২ নভেম্বর তারা মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কার্যালয়ে গিয়ে উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেন।
তদন্ত কমিটির কার্যক্রম শুরুর তথ্য নিশ্চিত করেছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক হিমাংশু লাল রায়।
দেশের চতুর্থ এই মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা ২০১৮ সালে। তবে এখনও এর নিজস্ব ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ শুরু হয়নি। শুরু হয়নি নিজস্ব শিক্ষা কার্যক্রমও। এ অবস্থায় উপচার্যের বিশেষ ক্ষমতা বলে অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়েছে ১৭২ কর্মকর্তা-কর্মচারী।
এই বিপুলসংখ্যক জনবলের বসার জায়গাও নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কার্যালয়ে। নেই তেমন কোনো কার্যক্রমও। অর্থের বিনিময়ে ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে তাদের নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এ নিয়ে ২৫ অক্টোবর নিউজবাংলায় ‘বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস-শিক্ষার্থী কিছুই নেই, জনবল প্রায় ২০০’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এই প্রতিবেদন প্রকাশের পরই তোলপাড় শুরু হয়। এরপর তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগের কথা স্বীকার করে সিলেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেছিলেন, ‘জরুরি প্রয়োজন মেটাতে অ্যাডহক ভিত্তিতে শখানেক লোক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বেশির ভাগই কর্মচারী পদে নিয়োগ পেয়েছেন। যথাযথ নিয়ম মেনেই তাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে।’