ফটো সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা তিনটি মামলায় অভিযোগ গঠন করেছে আদালত।
এই অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে মামলাগুলোর বিচারকাজ শুরু হলো।
সোমবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানা, হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর থানায় করা মামলা তিনটিতে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন।
মামলার অভিযোগ শুনানিতে সাংবাদিক কাজল আদালতে হাজির ছিলেন।
তার পক্ষে ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন।
শুনানিতে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক কাজল একজন গুনি ফটো সাংবাদিক, সে ষড়যন্ত্রের শিকার। তাই এই মামলায় ন্যায়বিচার পাওয়ার স্বার্থে তাকে অব্যাহতি দেয়ার প্রার্থনা করছি।’
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে নজরুল ইসলাম শামীম অভিযোগ গঠনের আবেদন করেন।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত সাংবাদিক কাজলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তাকে পড়ে শোনান।
এরপর তার কাছে জানতে চান, তিনি দোষী না নির্দোষ। এ সময় কাজল নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার চান। পরে আদালত তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেয়।
কাজলের আরেক আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাহেদুর রহমান নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানান।
যুব মহিলা লীগ নেত্রী পাপিয়াকে জড়িয়ে সামাজিক মাধ্যমে লেখালেখি করায় গত বছর ৯ মার্চ রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় কাজলসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শেখর।
পরে ১০ ও ১১ মার্চ রাজধানীর হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরও দুটি মামলা হয় কাজলের বিরুদ্ধে।
মামলার পর গত বছর ১০ মার্চ সন্ধ্যায় রাজধানীর হাতিরপুলের ‘পক্ষকাল’ অফিস থেকে বের হওয়ার পর সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল নিখোঁজ হন।
১১ মার্চ চকবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার স্ত্রী জুলিয়া ফেরদৌসি নয়ন। পরে ১৮ মার্চ রাতে কাজলকে অপহরণ করা হয়েছে অভিযোগ এনে চকবাজার থানায় মামলা করেন তার ছেলে মনোরম পলক।
ঢাকা থেকে নিখোঁজের ৫৩ দিন পর গত বছরের ২ মে রাতে যশোরের বেনাপোলের ভারতীয় সীমান্ত সাদিপুর থেকে অনুপ্রবেশের দায়ে ফটো সাংবাদিক ও দৈনিক পক্ষকালের সম্পাদক শফিকুল ইসলাম কাজলকে আটক করে বিজিবি।
পরদিন অনুপ্রবেশের দায়ে বিজিবির করা মামলায় আদালতে সাংবাদিক কাজলের জামিন মঞ্জুর হলেও পরে কোতোয়ালি মডেল থানায় ৫৪ ধারায় অন্য এক মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
প্রায় সাড়ে আট মাস কারাভোগের পর গত বছর ২৫ ডিসেম্বর জামিনে মুক্তি পান কাজল।
পরে তিন মামলায় কাজলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়।