তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান বলেন, ‘আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মতো কথা বলব, আমরা বিড়ালের মতো কথা বলার জন্য জন্মগ্রহণ করিনি।’
রোববার ৭ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধা-সৈনিক হত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন। রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ওই আলোচনা সভার আয়োজন কর মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ডা. মুরাদকে কেউ দাবায়া রাখতে পারবে না। আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মতো কথা বলব, আমরা বিড়ালের মতো কথা বলার জন্য জন্মগ্রহণ করিনি। আমরা পিতা একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিলেন, কোনও দিন বেঈমানি করেন নি। আমরা বেঈমান না।’
বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে কোনও অপোষ হবে না বলেও এ সময় নিজের অনড় অবস্থান তুলে ধরেন ডা. মুরাদ। বলেন, ‘আমরা বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে আপোষ করি না।’
কিছুদিন আগে ৭২ এর সংবিধানে ফিরে যাওয়া নিয়ে বক্তব্যে দিয়ে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়া সরকারের এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি কি অন্যায় করেছি। আমি বলেছি, ৭২ এর সংবিধানে ফিরে যেতে হবে। যে সংবিধান ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত। সেটাই আমাদের পবিত্র সংবিধান। কি অন্যায় করলাম আমি। আমার কথায় বিএনপি-জামায়াতের কলিজায় খোঁচা লেগেছে। তোমাদের কলিজায় খোঁচা দিতে আমার বুক কাঁপে না।’
বিএনপি-জামায়াতের উদ্দেশে এ সময় তিনি বলেন, ‘আসো, লড়াই করতে চাও, আসো। কোথায় করবা ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর না ময়মনসিংহে। ১৪ হাত মাটির নিচে চলে যাবা। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে এসো না।’
তিনি বলেন, ‘জিয়া পরিবার বাংলাদেশেকে ধবংস করছে। খুনি জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর মূল হত্যাকারী।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান আসো, লন্ডনে গেছো কেনো? সাহস থাকলে দেশে আসো। তারেক রহমানের গ্যাংকে বাংলার মাটি থেকে চিরতরে বিতাড়িত করা হবে এ শপথ আমরা আজকে গ্রহণ করলাম।’
আলোচনা সভায় মুক্তিযোদ্ধা হত্যার দায়ে জিয়াউর রহমানের বিচারসহ উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিশন করার দাবী জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশে জিয়ার নামে কোনও ফলক থাকবে না।’
আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজ নেতাদেরও সমালোচনা করেন সরকারের এই প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যারা ব্যবসা খুইলে বসছেন। ভাল হয়ে যান। দু:সময়ের নেতাদের আমরা চিনি। নতুন নতুন হাইব্রীড নেতারা দলের ক্ষতি করবে, ঘুষ খাবে, দুর্নীতি করবে, এই স্বাধীন বাংলাদেশে তা করতে দেয়া হবে না।’
আলোচনায় নিজ বক্তব্যে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘জিয়াউর রহমান মরে গেছে বলে কি আমরা তাকে ছেড়ে দেব? আমরা তো তাকে ছেড়ে দিতে পারি না। তার অবশ্যই বিচার করতে হবে।’
তিনি দাবি করে বলেন, ‘তিনটি তদন্ত কমিশন করতে হবে। একটি হলো বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়া গ্যাংদের কী ভূমিকা ছিল সেটা বের করতে, জেলহত্যায় জিয়া গ্যাংদের কি ভূমিকা ছিল তার জন্য একটি আর একটি হলো- জিয়া যে দুই হাজারের বেশি মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেছে প্রহসনের বিচারের নামে তা খতিয়ে দেখতে।’
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের উপদেষ্টা ভাস্কর শিল্পী রাশা ও মুক্তিযুদ্ধমঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল।