বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এসি ল্যান্ডের বিরুদ্ধে নারী কর্মচারীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ

  •    
  • ৭ নভেম্বর, ২০২১ ১৮:০৯

ভুক্তভোগী ওই নারী অভিযোগ করেন, এসি ল্যান্ড নাজমুল আ. সালামকে তার রুম থেকে বের হতে বলেন। সালাম রুম থেকে বের হয়ে সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় এসি ল্যান্ড ওই নারী স্টাফকে সরকারি জমি পাইয়ে দেয়ার কথা বলে প্রকাশ্যে দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরেন। এ ছাড়া তিনি শরীরের স্পর্শকাতর জায়গাতেও হাত দেন। একপর্যায়ে ওই নারীর পোশাক খোলার চেষ্টা করলে তিনি দ্রুত হাত ছাড়িয়ে চিৎকার করে কক্ষ থেকে বের হয়ে যান।

উপজেলা পরিষদে মজুরিভিত্তিক (মাস্টার রোল) নিয়োগ পাওয়া এক নারী কর্মচারীকে ধর্ষণচেষ্টা ও যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে বরগুনার আমতলী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত ইউএনও মো. নাজমুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

ইতোমধ্যে এ ঘটনার বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই নারী।এতে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীর স্বামী আমতলী উপজেলা পরিষদে মজুরিভিত্তিক নিয়োগ পেয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ছিলেন। তিনি মারা যাওয়ার পরে ২০১৬ সালে তার স্ত্রী ওই নারীকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের দৈনিক মজুরিভিত্তিক মালি পদে নিয়োগ দেয়া হয়।

অভিযোগে বলা হয়েছে, এ বছরের মার্চে নাজমুল ইসলাম আমতলী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে যোগ দেন। একই বছরের জুলাইয়ে ইউএনও আসাদুজ্জামান বদলি হওয়ার তিন মাস পর নাজমুল ইসলাম আমতলী উপজেলার ভারপ্রাপ্ত ইউএনওর দায়িত্ব পালন করেন।

ওই নারী অভিযোগ করেছেন, ইউএনওর দায়িত্বে থাকা এসি ল্যান্ড নাজমুল ইসলাম কারণে-অকারণে তাকে অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে বাজে প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় প্রায়ই শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিয়ে যৌন হয়রানি করেন। পরে ওই নারীর ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করে দিনে-রাতে অন্তত ১০ থেকে ১৫ বার কল দিয়ে বিরক্ত করতেন। পরে বিষয়টি তিনি অফিসের অন্য কর্মকতা ও কর্মচারীদের জানান।

অভিযোগে বলা হয়েছে, সদ্য যোগদান করা ইউএনও এ কে এম আবদুল্লাহ বিন রশীদ ছুটিতে থাকায় সহকারী কমিশার (ভূমি) নাজমুল ইসলাম বর্তমানে ইওএনওর দায়িত্ব পালন করছেন। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে নাজমুল অফিসে আসেন। তখন ভুক্তভোগী ওই নারী কর্মচারী উপজেলা পরিষদের কম্পিউটার অপারেটর আ. সালামের রুমে বসে ছিলেন।

ওই নারী অভিযোগ করেন, এ সময় এসি ল্যান্ড নাজমুল সেখানে গিয়ে আ. সালামকে তার রুম থেকে বের হতে বলেন। সালাম রুম থেকে বের হয়ে সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় এসি ল্যান্ড ওই নারী স্টাফকে সরকারি জমি পাইয়ে দেয়ার কথা বলে প্রকাশ্যে দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরেন। এ ছাড়া তিনি শরীরের স্পর্শকাতর জায়গাতেও হাত দেন। একপর্যায়ে ওই নারীর পোশাক ছিঁড়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালান এসি ল্যান্ড। এ সময় দ্রুত হাত ছাড়িয়ে চিৎকার করে কক্ষ থেকে বের হয়ে যান ওই নারী কর্মচারী।

অভিযোগে বলা হয়েছে, অফিসে থাকা অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী সেখানে এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন। এ সময় ভিকটিমের চাকরি বাতিল ও মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা দেয়ার ভয় দেখিয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা পরিষদের কয়েকজন কর্মচারী জানান, মজুরিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া ওই নারী কর্মচারীর সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রকাশ্যে এই ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছেন। এটি তারা ও পরিষদে সেবা নিতে আসা অনেকেই দেখেছেন।ভুক্তভোগী ওই কর্মচারী বলেন, ‘আমি এ ঘটনার বিচার চেয়ে নির্বাহী অফিসার স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। নাজমুল ইসলাম আমাকে এখন বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।’এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘এটা আমার বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র। আমাকে হেয় করতে এটা করা হচ্ছে।’সদ্য যোগ দেয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম আব্দল্লাহ বিন রশিদ বলেন, ‘আমি ছুটিতে ঢাকায় অবস্থান করছি। তবে ওই নারীর লিখিত অভিযোগের বিষয়টি আমি জেনেছি। অফিসে ফিরে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে।’বরগুনার জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। প্রকৃত ঘটনা জেনে তদন্ত করে সত্যতা পেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর