সারাদেশের মতো কুড়িগ্রামেও জমে উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের পোস্টার-লিফলেট চারদিকে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের পোস্টার, ফেস্টুন, লিফলেটে ছেয়ে গেছে পাড়া-মহল্লা ও হাট-বাজার।
তবে সেসব নির্বাচনী প্রচার সামগ্রী ছাপানোর ক্ষেত্রে আইনি বিধি-বিধান মানা হচ্ছে না। অনুমোদনহীন প্রেস থেকে নির্বাচনী সামগ্রী ছাপানোর কারণে বৈধ প্রেস মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
ছাপাখানা ও প্রকাশনা (ঘোষণা ও নিবন্ধন) আইন-১৯৭৩ অনুযায়ী ডিক্লারেশন প্রাপ্তি ব্যতিরেকে যে কোন প্রতিষ্ঠানের মুদ্রণ কাজ করা দণ্ডনীয় অপরাধ। আর নির্বাচন কমিশনের বিধি অনুযায়ী সব নির্বাচনী পোস্টার-লিফলেটে মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানের নাম-ঠিকানা ও মুদ্রণের তারিখ থাকতে হবে। অথচ কুড়িগ্রামে বিভিন্ন কম্পিউটার প্রিন্টের দোকান, স্ক্রিন প্রিন্টের দোকানে পোস্টার, লিফলেটসহ অন্যান্য নির্বাচনী প্রচার সামগ্রী ছাপানো হচ্ছে। আর আইনবহির্ভূতভাবে তাতে উল্লেখ করা হচ্ছে বৈধ ছাপাখানার নাম।
বিধি অনুযায়ী একজন প্রার্থীর পোস্টার ৬০ বাই ৪৫ সেন্টিমিটার ও সাদা-কালো হতে হবে। প্রার্থীর ছবি ৬০ বাই ৪৫ ও ভোটার স্লিপ ১২ বাই ৮ সেন্টিমিটার থাকতে হবে। কিন্তু কুড়িগ্রামে ইউপি নির্বাচনে এসব মানা হচ্ছে না।
চর ভুরুঙ্গামারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী এনামুল ইসলাম রোকন বলেন, ‘বিধি না মেনে অনেক প্রার্থী পোস্টার ছাপিয়েছে। আমার পোস্টার ছোট, প্রতিদ্বন্দ্বীদেরটা বড়। ভোটের প্রচারে এর প্রভাব পড়ছে।’
জয়মনিরহাট ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম রব্বানী তালুকদার বাদল বলেন, ‘আমি পোস্টার পাচ্ছি বিভিন্ন মাধ্যম থেকে। আমি নিজে কোন পোস্টার ছাপাচ্ছি না। পোস্টার জনগণ দিচ্ছে। কোথা থেকে দিচ্ছে আমি সঠিক জানি না।’
ভুরুঙ্গামারী উপজেলার প্রিন্টিং ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, ‘আমি একজন চেয়ারম্যান ও ৭/৮জন মেম্বারের পোস্টার ছাপানোর কাজ পেয়েছি। আর আমি তো পোস্টার ছাপিয়ে আনছি রংপুর থেকে। পোস্টারের ডিজাইন করে দেয়ায় তারা আমাদের নাম ব্যবহার করছে।’
কুড়িগ্রাম প্রেস মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মাহফুজার রহমান বলেন, ‘বৈধভাবে কুড়িগ্রাম সদরে ১২টি এবং নাগেশ্বরী উপজেলায় একটি ছাপাখানা ও প্রকাশনা রয়েছে। নিয়মিতভাবে সরকারকে ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়ে আসছেন জেলার প্রেস মালিকরা। করোনা দুর্যোগে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়লেও সরকারি কোন অনুদান জোটেনি তাদের ভাগ্যে। ইউপি নির্বাচনে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন থাকলেও অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে তা পূরণ হচ্ছে না।’
ভুরুঙ্গামারী উপজেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ইউএনও দীপক কুমার দেব শর্মা বলেন, ‘বৈধ ছাপাখানা থেকে প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী সামগ্রী ছাপাবেন এমনটাই প্রত্যাশা। তবে কোন প্রার্থী নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গ এবং বৈধ ছাপাখানা থেকে নির্বাচনী প্রচার সামগ্রী না ছাপলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’