বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তিন শ কোম্পানির দরপতনে সূচক ৪৮ কর্মদিবসের সর্বনিম্ন

  •    
  • ৭ নভেম্বর, ২০২১ ১৫:০৪

দুই সপ্তাহ আগে বাজারে টানা ৭ কর্মদিবস পতনের মধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি অংশীজনদের ডেকে জরুরি বৈঠক করার সময়ও সূচকের অবস্থান এতটা নিচে নামেনি। সে সময় সূচক ৬ হাজার ৮৮৫ পয়েন্ট নামার পর ঘুরে দাঁড়ায়। এবার সেই অবস্থানকেও ছাড়িয়ে গেল।

আবারও বড় দরপতন দেখল দেশের পুঁজিবাজার। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে এক দিনেই কমল তিন শতাধিক কোম্পানির শেয়ার দর।

বড় মূলধনি ১০টি বড় কোম্পানি মিলে ৫০ পয়েন্ট সূচক বাড়ালেও ঢালাও দরপতনের কারণে সার্বিকভাবে সূচক কমে গেছে ৫০ পয়েন্ট।

পুঁজিবাজারে অব্যাহত দরপতনে সূচক নেমে এসেছে গত আগস্টের শেষ সপ্তাহের অবস্থানে। ৪৮ কর্মদিবস আগে গত ২৯ আগস্ট সূচক ছিল ৬ হাজার ৮২৩ পয়েন্ট। তার চেয়েও কমে গেল রোববার।

গত সপ্তাহের রবি থেকে বুধবার পর্যন্ত ১৬৪ পয়েন্ট সূচক পতনের পর বৃহস্পতিবার ৮ পয়েন্ট বাড়ে। নতুন সপ্তাহে বাজার ঘুরে দাঁড়াবে, এমন প্রত্যাশার কথা বলাবলি হচ্ছিল।

সকালে লেনদেন শুরুই হয় সূচক বেড়ে। আধা ঘণ্টায় সূচক ৪৪ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হচ্ছিল, অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৯৫০ পয়েন্টে। সর্বোচ্চ অবস্থান থেকে ৯৫ পয়েন্ট হারিয়ে লেনদেন শেষ হয় ৬ হাজার ৮৫৫ পয়েন্টে।

দুই সপ্তাহ আগে বাজারে টানা ৭ কর্মদিবস পতনের মধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি অংশীজনদের ডেকে জরুরি বৈঠক করার সময়ও সূচকের অবস্থান এতটা নিচে নামেনি। সে সময় সূচক ৬ হাজার ৮৮৫ পয়েন্ট নামার পর ঘুরে দাঁড়ায়।

দিনে সূচকের সর্বোচ্চ আর সর্বনিম্ন অবস্থানের মধ্যে পার্থক্য ৯৫ শতাংশ

লেনদেন অবশ্য কিছুটা বেড়েছে। তবে দিনের শুরুর দিকে যে হারে শেয়ার কেনাবেচা হচ্ছিল, শেষভাবে সূচক কমতে থাকার পর তার গতি কমে যায়। প্রথম এক ঘণ্টায় তিন শ কোটি টাকার কাছাকাছি শেয়ার হাতবদল হয়। পরে সাড়ে চার ঘণ্টায় তা ১ হাজার ১৪৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকায় দাঁড়ায়।

টানা চার কর্মদিবস পতনের পর ঘুরে দাঁড়ানোর দিন বৃহস্পতিবার লেনদেন ছিল ১ হাজার ৬৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা।

সূচকের পতনে প্রধান ভূমিকায় ছিল লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট, আইসিবি, বেক্সিমকো ফার্মা, রবি, ইউনাইটেড পাওয়ার, ফরচুন সুজ, ওরিয়ন ফার্মা, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্‌ল ও পাওয়ার গ্রিড।

এই ১০টি কোম্পানির কারণেই সূচক থেকে হারিয়ে গেছে ৪১.০৬ পয়েন্ট।

সূচক সবচেয়ে বেশি কমেছে এই ১০টি কোম্পানির কারণে

অন্যদিকে টানা পতন থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে পরপর দ্বিতীয় দিন উত্থান হয়েছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর। টানা বাড়তে থাকা বেক্সিমকো লিমিটেডের দর বেড়েছে আরও।

এই দুটি বড় মূলধনি কোম্পানি ছাড়াও এনআরবিসি, ডেল্টা লাইফ, ন্যাশনাল লাইফ, গ্রামীণফোন, জেনেক্সিল, বিকন ফার্মা, সাউথবাংলা ব্যাংক, বার্জার পেইন্টের দর বৃদ্ধির কারণে সূচকে তাও কিছু পয়েন্ট যোগ হয়েছে।

এর মধ্যে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো একাই সূচক বাড়িয়েছে ২৯.০৭ পয়েন্ট। সব মিলিয়ে ১০টি কোম্পানি বাড়িয়েছে ৫০.৮৩ পয়েন্ট। এই ১০টি কোম্পানি না থাকলে সূচকের আরও বড় পতন হতে পারত।

দিন শেষে বেড়েছে কেবল ৪৯টি কোম্পানির দর, বিপরীতে ৩০৩টি কোম্পানির দর কমে যায়। ২৫টি কোম্পানি দর ধরে রাখতে পারে।

এই ১০টি কোম্পানির কারণে সূচকে ৫০ পয়েন্ট যোগ হয়েছে

লেনদেনে শীর্ষ ১০

লেনদেনে যথারীতি সেরা বেক্সিমকো লিমিটেড। এই একটি কোম্পানিরই ২২২ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হওয়া এনআরবিসির ৮৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে। মোট লেনদেনের ১৯.৪৪ শতাংশই হয়েছে কেবল একটি কোম্পানিতে।

আলিফ, ফরচুন, ওরিয়ন ফার্মা, আইএফআইসি, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, মালেক স্পিনিং, লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট ও ডেল্টা লাইফ সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০টি কোম্পানি।

বেক্সিমকোতে ব্যাপক হারে লেনদেনের সুবাদে সব খাতকে ঠেলে উঠে এসেছে বিবিধ খাত। খাতটিতে লেনদেন হয়েছে ২৩০ কোটি টাকারও বেশি।

গত কয়েক দিন টানা শীর্ষ স্থান ধরে রাখা বস্ত্র খাত দ্বিতীয় অবস্থানে নেমে এসেছে। হাতবদল হয়েছে ১৮০ কোটি টাকার কাছাকাছি।

তৃতীয় অবস্থানে ছিল ব্যাংক খাত। লেনদেন হয়েছে দেড় শ কোটি টাকারও বেশি।

চতুর্থ স্থানে থাকা প্রকৌশল ও পঞ্চম স্থানে থাকা খাদ্য ও আনুষঙ্গিকে লেনদেন ছিল ৫০ কোটি টাকার কিছুটা বেশি।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে লেনদেন টেনেটুনে ৪০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। সাধারণ বিমা খাত তাও পারেনি। কদিন আগে দিনে আড়াই শ থেকে তিন শ কোটি টাকা লেনদেন হওয়া আর্থিক খাত টেনেটুনে ৩০ কোটি টাকা পার করেছে। জীবন বিমা ও সিমেন্ট খাতও তাই হয়েছে।

লেনদেনের প্রায় ২০ শতাংশ হয়েছে কেবল বেক্সিমকো লিমিটেডে

দাম বৃদ্ধিতে শীর্ষ ১০

সবচেয়ে বেশি ১০ শতাংশ দাম বেড়েছে নতুন তালিকাভুক্ত সেনাকল্যাণ ইন্সুরেন্স কোম্পানির। ১০ টাকায় তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির দর ১০ শতাংশ বা ১ টাকা বেড়েছে। তবে লেনদেন হয়েছে খুবই কম। মাত্র ৪১০টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

এই কোম্পানিটি বাদে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ব্যাংক খাতের এনআরবিসি, যার দর বেড়েছে ৯.৩১ শতাংশ। এক দিনে এর চেয়ে বেশি দাম বাড়া সম্ভব ছিল না।

অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ডেল্টা লাইফের দর ৪.২১ শতাংশ, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর দর ৩.৬০ শতাংশ, জেনেক্সিল ইনফোসিসের দর ৩.৩৩ শতাংশ, কাট্টালি টেক্সটাইলের দর ২.৬৮ শতাংশ, রহিমা ফুডের দর ২.৫৬ শতাংশ, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দর ২.৫১ শতাংশ, নিউলাইন টেক্সটাইলের দর ২.৪৩ শতাংশ এবং সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের দর বেড়েছে ২.৪১ শতাংশ।

যেসব কোম্পানির দর বেড়েছে তার মধ্যে দুটি ছাড়া তৃতীয়টির দর ৫ শতাংশও বাড়েনি। ৩ শতাংশের বেশি বেড়েছে ২টির দর, ২ শতাংশের বেশি বেড়েছে ৬টির দর, ১ শতাংশের বেশি বেড়েছে ১২টির দর।

দরপতনে শীর্ষ ১০

অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি ৭.৮৬ শতাংশ দর হারিয়েছে বস্ত্র খাতের স্টাইলক্রাফট। সংকটে থাকা কোম্পানিটি উৎপাদন চালু, শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধের ঘোষণা দেয়ার পর মাস দুয়েক আগে শেয়ার দর প্রায় ২০০ টাকায় চলে যায়। কিন্তু শ্রমিকরা বকেয়ার জন্য বিক্ষোভ করছেই। আর লোকসানে থাকায় কোম্পানিটি লভ্যাংশও দিতে পারেনি। এরপর থেকে শেয়ার দর কমছেই।

কোম্পানিটির সবশেষ দর দাঁড়িয়েছে ১১৭ টাকা ১০ পয়সা।

এ ছাড়া শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ২৫ পয়সা আয় করে ২০ পয়সা লভ্যাংশ ঘোষণা করা বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম ৭.৫৭ শতাংশ, স্বল্প মূলধনি ফার্মা এইড ৭.৪২ শতাংশ, লোকসানের কারণে লভ্যাংশ না দেয়ার ঘোষণা দেয়া সেন্ট্রাল ফার্মা ৭.০৫ শতাংশ, আরামিট ইন্ডাস্ট্রিজ ৭ শতাংশ, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল ৬.৭৩ শতাংশ, শেয়ারে ১০ পয়সা লভ্যাংশ ঘোষণা করা স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক ৬.৪৪ শতাংশ, বঙ্গজের দর ৬.৪ শতাংশ, দেশবন্ধুর দর ৬.২৫ শতাংশ এবং ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্সের দর ৬.১৭ শতাংশ কমেছে।

সব মিলিয়ে ৫টি কোম্পানির শেয়ার দর ৭ শতাংশের বেশি, ৬টির দর ৬ শতাংশের বেশি, ১১টির দর ৫ শতাংশের বেশি, ১৮টির দর ৪ শতাংশের বেশি, ৩৬টির দর কমেছে ৩ শতাংশের বেশি, ৬৫টি কোম্পানির দর কমেছে ২ শতাংশের বেশি।

এ বিভাগের আরো খবর