মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে র্যাবের সঙ্গে ‘গোলাগুলিতে’ নিহত দুইজনের ছবি দেখে পরিচয় শনাক্ত করেছে তাদের পরিবার।
স্বজনরা নিউজবাংলাকে জানান, নিহতরা হলেন তোফায়েল মিয়া ও শহীদ মিয়া। তাদের বাড়ি উপজেলার চৈত্রঘাট এলাকায়।
তারা কমলগঞ্জের যুবলীগ নেতা নাজমুল হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আজির উদ্দিন।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘পরিবারের সূত্রে তাদের পরিচয় নিশ্চিত হয়েছি। তারা এজাহারের কত নম্বর আসামি তা বলতে পারছি না, তবে তারা আসামি।’
মামলার এজাহারে তোফায়েলের নাম ২ নম্বর ও শহীদের নাম ৮ নম্বর আসামি হিসেবে তালিকাভুক্ত।
তবে এ বিষয়ে র্যাব বা পুলিশ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরিচয় নিশ্চিত করে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
শ্রীমঙ্গলের মিরতিঙ্গা চা-বাগানের পাশে রোববার ভোরের দিকে গোলাগুলির এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন র্যাব-৯-এর ব্যাটালিয়ান কমান্ডার বসু দত্ত চাকমা।
তিনি জানান, ভোররাতে চা-বাগান এলাকায় ওই দুজন র্যাবের টহল দলের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি চালান। আত্মরক্ষায় র্যাবও পাল্টা গুলি করে। পরে ঘটনাস্থল থেকে দুজনের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ভোররাতে চা-বাগান এলাকায় ওই দুজন র্যাবের টহল দলের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি চালায়। আত্মরক্ষায় র্যাবও পাল্টা গুলি করে। পরে ঘটনাস্থল থেকে দুজনের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
কমলগঞ্জের রহিমপুর ইউনিয়নের চৈত্রঘাট বাজার এলাকায় গত ৩১ অক্টোবর দুপুরে নিজ বাড়ির সামনে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন নাজমুল। সিলেটের একটি হাসপাতালে নেয়া হলে সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি মারা যান।
যুবলীগ নেতা নাজমুল হাসানকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়
এ ঘটনার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ফেসবুকে ভাইরাল হয়। তাতে দেখা যায়, কালো একটি মাইক্রোবাসে আসা ৯ ব্যক্তি নাজমুলকে ধাওয়া দেয়। একপর্যায়ে নিজ বাড়ির সামনে এসে মাটিতে পড়ে যান তিনি। তখন নাজমুলকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে যায় ওই ৯ জন।
সিসিটিভি ক্যামেরাটি নাজমুলের অফিসে লাগানো ছিল।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নাজমুল ফেসবুক লাইভে জানিয়েছিলেন, হামলাকারীদের মধ্যে চারজনকে চিনতে পেরেছেন। তারা হলেন স্থানীয় তোফায়েল, রাসেল, মাসুদ ও তোফাজ্জল।
তিনি দাবি করেন, ইউপি নির্বাচনে সদস্য পদে লড়তে চাওয়ায় তার ওপর হামলা হয়েছে। মৃত্যু হলে খুনিদের যেন সাজা হয় সেই দাবিও জানিয়েছিলেন নাজমুল।
নাজমুলের মৃত্যুর পর তার বড় ভাই শামছুল হক গত সোমবার তোফাজ্জলকে প্রধান আসামি করে ১৪ জনের নাম উল্লেখসহ ১৮/১৯ জনের নামে মামলা করেন।
এজাহারভুক্ত ৩ আসামিসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে গত বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ জাকারিয়া।
তিনি বলেন, এই মামলায় জুয়েল মিয়া ও আমির হোসেন নামে দুই আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জুয়েলের সঙ্গে যুবলীগ নেতা নাজমুলের বিরোধ ছিল। ২০২০ সালে নাজমুলের হামলায় তিনি পঙ্গু হয়ে যান বলে অভিযোগ রয়েছে।
তিনি জানান, গ্রেপ্তার করা হয়েছে মামলার প্রধান আসামি তফাজ্জুল আলী ও তার দুই সহযোগীকে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তফাজ্জুল হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকারও করেছেন।
এসপি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে তফাজ্জুল বলেছেন যে নাজমুলকে হত্যা করতে তিন মাস আগে থেকেই রেকি করা হচ্ছিল।