বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শিক্ষার্থীদের ইউনিফর্ম নিয়ে অধ্যক্ষের কাণ্ড

  •    
  • ৭ নভেম্বর, ২০২১ ০০:৩৮

বরগুনা সরকারি কলেজে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির বাণিজ্য বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত সাজ্জাদ ইসলাম রাকিব ভিডিওটি ফেসবুকে পোস্ট করে লিখেন, ‘বরগুনা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের হয়রানি করা হচ্ছে। একজন কলেজের প্রিন্সিপাল কীভাবে পারেন, রাস্তায় বসা ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে এমন দুর্ব্যবহার করতে? এর সুষ্ঠু ও ন্যায়বিচার চাই আমরা।’

বরগুনা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ মতিউর রহমান শিক্ষার্থীদের মারধর করছেন এমন একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। কলেজের সামনের সড়কেই তিনি শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত তোলেন। পরে এই মারধরের ভিডিও ওই কলেজেরই কয়েকজন শিক্ষার্থী ফেসবুকে পোস্ট করলে তা ভাইরাল হয়ে যায়।

ভিডিওতে দেখা যায়, কলেজের সামনের সড়কে বেশকিছু শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে আছেন। এ সময় অধ্যক্ষ মতিউর রহমান তাদের বলেন, ‘কালকে ইউনিফর্ম পরে তারপর আসবা।’

এ সময় এক শিক্ষার্থী কিছু একটা বলতে চাইলে তাকে থামিয়ে দিয়ে অধ্যক্ষ বলেন, ‘কোনো কথা নাই, ইউনিফর্ম বলছি আমি ইউনিফর্ম। সব চলে যাও, বাসায় যাও! আবার দাঁড়ায়ে আছ কেন? সোজা বাসায় যাবা।’

এ সময় এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘একদিনের মধ্যে সব জোগাড় করে ক্যামনে?’

জবাবে অধ্যক্ষ বলেন, ‘ছয় মাস আগে আমি বলছি। যাও, বাসায় যাও।’

শিক্ষার্থীরা চলে যেতে উদ্যত হলে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘স্যার এটা বাড়াবাড়ি হয়ে যায়।’

এ কথা শুনেই অধ্যক্ষ হঠাৎ দৌড়ে ওই শিক্ষার্থীকে পেছন থেকে শার্ট ধরেন। পরে ওই শিক্ষার্থীকে তিনি ধাক্কা মারতে মারতে সামনের দিকে নিয়ে যান।

ভিডিওটি ফেসবুকে যারা পোস্ট করেছেন তাদের মধ্যে বরগুনা সরকারি কলেজের উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সাজ্জাদ ইসলাম রাকিবও একজন।

তিনি বলেন, ‘প্রথমে অধ্যক্ষ মতিউর রহমান আতাউল্লাহ নামে এক শিক্ষার্থীকে ধাক্কা ও চড় থাপ্পর দিয়ে লাঞ্ছিত করেন। পরে বিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রকে মারধর করার সময় ভিডিও ধারণ করি। তিনি কী কাণ্ড করেছেন তা ভিডিওতেই আপনারা দেখেছেন। শুধু মারধরই না, পরে ওই ছাত্রকে তিনি তার কক্ষে নিয়ে কলেজে বিশৃঙ্খলার অভিযোগ এনে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ আসার পর সহপাঠীদের অনুরোধে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।’

ধারণকৃত ভিডিওতে মারধরের শিকার ওই শিক্ষার্থীর নাম না জানা গেলেও কয়েকজন শিক্ষার্থী নিশ্চিত করেছেন, তিনি বিজ্ঞান বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত।

বরগুনা সরকারি কলেজে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির বাণিজ্য বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত সাজ্জাদ ইসলাম রাকিব ভিডিওটি ফেসবুকে পোস্ট করে লিখেন, ‘বরগুনা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের হয়রানি করা হচ্ছে। একজন কলেজের প্রিন্সিপাল কীভাবে পারেন, রাস্তায় বসা ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে এমন দুর্ব্যবহার করতে। এর সুষ্ঠু ও ন্যায়বিচার চাই আমরা। এভাবে ছাত্রসমাজ অপমানিত হতে থাকলে এক সময় ছাত্রসমাজ বলে কিছুই থাকবে না। সুস্থভাবে বাঁচতে চাই আমরা। দুর্নীতিমুক্ত কলেজ চাই।’

রাকিব জানান, তাদের সবারই কলেজ নির্ধারিত রঙের শার্ট পরা ছিল। কিন্তু কয়েকজনের ইউনিফর্মে নির্ধারিত রঙের প্যান্ট ছিল না।

তিনি দাবি করেন, মূলত স্থানীয় ইসলামিয়া বস্ত্রালয়কে ইউনিফর্ম তৈরির জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন অধ্যক্ষ। কিন্তু সেখানে খরচ বেশি, তাই অনেকেই বাইরে থেকে ইউনিফর্ম তৈরি করেছেন। এতেই ক্ষেপেছেন অধ্যক্ষ।

ইসলামিয়া বস্ত্রালয় থেকে অধ্যক্ষ কমিশন নেন, এমন অভিযোগও করেন রাকিব।

শিক্ষার্থীরা জানান, প্রথমে অধ্যক্ষের মারধরের শিকার শিক্ষার্থীর নাম আতাউল্লা। তিনি উচ্চ মাধ্যমিক বাণিজ্য বিভাগে অধ্যায়নরত।

আতাউল্লাহ বলেন, ‘সহপাঠী ও বাইরের লোকজনের সামনে প্রিন্সিপ্যাল স্যার আমার গায়ে হাত তুলেছেন। এমনকি চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের দিয়েও লাঞ্ছিত করিয়েছেন। আমি তার আচরণে ব্যাথিত।’

শনিবার রাতে অধ্যক্ষের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘মূলত কলেজের ডিসিপ্লিন বজায় রাখার জন্য আজ আমরা কলেজ গেটে দাঁড়াই। বহিরাগতদের শনাক্ত করতে শিক্ষার্থীদের ইউনিফর্ম ও আইডি কার্ডের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে গেলে কিছু শিক্ষার্থী মিছিল শুরু করে। পরে তাদের বাধা দিতে গিয়েই এমনটা হয়েছে।’

পুলিশ ডাকা প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীকে পরিপূর্ণ ইউনিফর্মে কলেজে আসতে বলার জন্য রুমে ডাকা হয়। পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।’

নির্দিষ্ট দোকান থেকে শিক্ষার্থীদের ইউনিফর্ম বানানো ও ব্যাগ-জুতা কেনা বাধ্যতামূলক কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এমন কোনো নির্দেশ আমি দেইনি।’

এ বিভাগের আরো খবর