ফরিদপুরের নগরকান্দার কাইচাইল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে আগুন দেয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার সকালে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে।
এর আগে শুক্রবার রাতে ইউনিয়নের নতুন বাজারে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে নৌকায় আগুন দিলে ঘটনার সূত্রপাত হয়।
স্থানীয় লোকজন জানান, নৌকায় আগুন দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সকালে কালীবাড়ী বাজারে নৌকার প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী কবির হোসেন ঠান্ডু এবং নৌকার প্রার্থী মোস্তফা হোসেন খানের কর্মী জাহিদ হোসেন আহম্মদসহ দুই পক্ষের ১০ জন আহত হন।
আহতদের ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
দুপুরে দুই পক্ষের সমর্থকরা ঢাল, বল্লম, সড়কি, রামদা, লাঠি নিয়ে ইউনিয়নের পোড়াদিয়া বাজার, কালীবাড়ী বাজার, জিয়াকুলী, বাবুর কাইচাইলসহ বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এলাকাবাসী জানান, এখনও দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকায় বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে।
কাইচাইল ইউপি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক মোস্তফা হোসেন খান বলেন, ‘কাইচাইল ইউনিয়নের নতুন বাজারে আমার একটি নির্বাচনি কার্যালয় আছে। সেখানে বাঁশ ও কাপড় দিয়ে একটি নৌকা তৈরি করে রেখেছি।
‘শুক্রবার রাতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী কবির হোসেন ঠান্ডু মিয়ার কর্মীরা ওই নৌকা আগুনে পুড়িয়ে ফেলেছে। তাদের উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।’
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও কাইচাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন ঠান্ডু মিয়া বলেন, ‘আমার কোনো কর্মী নৌকায় আগুন দেয়নি। আমাকে ফাঁসাতে ষড়যন্ত্র করে নিজেরাই নৌকায় আগুন দিয়েছে। এ ধরনের নোংরা রাজনীতির তীব্র নিন্দা জানাই।’
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) সুমিনুর রহমান জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, নগরকান্দা উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের মধ্যে আটটিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে আট ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন ১১ জন।
২৬ অক্টোবর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা কেউ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াননি। তারা ইউনিয়নগুলোতে শক্ত অবস্থান নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বিএনপি-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নীরবে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
১১ নভেম্বর উপজেলার নয়টি ইউনিয়নে ভোট।
নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন মিয়া বলেন, দলের নির্দেশ অমান্য করে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করবেন না। ব্যত্যয় ঘটলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’