বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কী হবে রায়হান-ফরহাদের

  •    
  • ৬ নভেম্বর, ২০২১ ১৭:৩০

দাদি মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘রায়হান তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। এখন তার লেখাপড়া করানো দূরের কথা তিনবেলা খেতে দেয়া আমাদের পক্ষে কঠিন। বয়সের কারণে আমি এবং তাদের দাদাও কোনো কাজ করতে পারি না। এখন তাদেরকে কীভাবে বুঝিয়ে রাখব, কে দেখাশোনা করবে তাও জানি না।’

হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে গলায় ওড়না পেঁচানো স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। যদিও কীভাবে এ ঘটনা ঘটেছে এখনও তা জানতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশের ধারণা তারা দুজনে আত্মহত্যা করেছেন।

মা বাবাকে হারিয়ে কান্না থামছে না অসহায় দুই শিশু সন্তানের। তাদের ভবিষৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় দাদা-দাদি।

চুনারুঘাটের নরপতি গ্রামের আব্দুর রউফ ও আলেয়া দম্পতির মরদেহ শুক্রবার দুপুরে উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনার আগে বাবা-মার মরদেহের পাশে বসিয়ে সন্তানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন হবিগঞ্জের চুনারুঘাট সার্কেলের এএসপি মহসিন আল মুরাদ। এ ঘটনায় তার দায়িত্ববোধ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে উঠে আসার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান খন্দকার ফারজানা রহমান এবং হবিগঞ্জের আইনজীবী শাহ্ ফখরুজ্জামান বলেছেন, দায়িত্বশীল কোনো পুলিশ কর্মকর্তা এই কাজটি করতে পারেন না।

যদিও মহসিন আল মুরাদের দাবি, শিশুটিকে সেখানে বসিয়ে কেবল নাম-পরিচয় জিজ্ঞেস করছিলেন। বাকি কথা বাইরে নিয়ে এসে বলেছেন। তবে অল্প সেই কথাইবা এমন পরিস্থিতিতে কেন বলতে হবে, তার ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।

বাবা-মায়ের মরদেহের পাশে বসিয়ে সন্তানকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন চুনারুঘাটের সার্কেল এএসপি মহসিন মুরাদ। ছবি: নিউজবাংলা

এ নিয়ে কথা বলতে শুক্রবার জেলা পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি। পরে খুদে বার্তা দেয়া হলে তিনি ফিরতি বার্তায় জানান, তিনি ব্যস্ত; পরে কথা বলবেন।

ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার দুপুরে মরদেহ দুটি পরিবারে কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

রউফ ও আলেয়া দম্পতির ১০ বছরের ছেলের নাম রায়হান আহমেদ ও ছোট ছেলে ফরহাদ মিয়ার বছর পাঁচ বছর।

রায়হান ও ফরহাদ বর্তমানে দাদা-দাদির কাছে রয়েছে। অর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে তাদের ভরণপোষণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।

শিশুদের দাদা আবুল হোসেনের বয়স প্রায় ৫৬ এবং দাদি মোয়ারা বেগমের বয়স ৪৫ বছর। বার্ধক্যজনিত কারণে দুজনেই বাড়ির বাইরে কোনো কাজ করতে পারেন না। শিশুদের বাবা আব্দুর রউফ রিকশা চালিয়ে সংসার চালাতেন। তবে তাদের মা সৌদিআরব থাকলেও তিনি বাড়িতে কোনো টাকা পয়সা দিতেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। এমন কী তিনি টাকা কোথায় রেখেছেন বা কী করেছেন সে বিষয়েও কেউ কোনো তথ্য জানে না।

দাদি মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘রায়হান তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। এখন তার লেখাপড়া করানো দূরের কথা তিনবেলা খেতে দেয়া আমাদের পক্ষে কঠিন। বয়সের কারণে আমি এবং তাদের দাদাও কোনো কাজ করতে পারি না। এখন তাদেরকে কীভাবে বুঝিয়ে রাখব, কে দেখাশোনা করবে তাও জানি না।’

শিশুদের দাদা আবুল হোসেন বলেন, ‘চারপাশে এখন শুধু অন্ধকার। একদিকে ছেলে ও ছেলের বউয়ের চলে যাওয়া, অন্যদিকে নাতি-নাতনির ভবিষ্যৎ। কী করব কিছু বুঝতে পারছি না।’

এ ঘটনায় মৃত আব্দুর রউফের বাবা আবুল হোসেন বাদী হয়ে চুনারুঘাট থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।

চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী আশরাফ জানান, এখনও এ ঘটনার কোন রহস্য উদঘাটন সম্ভব হয়নি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে এলে বিস্তারিত জানা যাবে।

এ বিভাগের আরো খবর