ধর্মঘটের কারণে যাত্রীদের চাপ সামাল দিতে চট্টগ্রাম থেকে শনিবার ছেড়ে যাওয়া বিভিন্ন ট্রেনে ১০টি অতিরিক্ত বগি যোগ করেছে রেলওয়ে। প্রয়োজনে আরও যোগ করা হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার রতন কুমার চৌধুরী শনিবার বেলা ৩টার দিকে নিউজবাংলাকে বলেন, ধর্মঘট থাকার কারণে ট্রেনে যাত্রীর চাপ বেড়েছে। যাত্রী দ্বিগুণ হয়েছে। কোনো ট্রেন খালি যাচ্ছে না। টিকিট না পেয়ে অনেকেই ফেরত যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, যাত্রীর চাপ থাকায় শনিবার চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যাওয়া বিভিন্ন ট্রেনে ১০টি অতিরিক্ত বগি যোগ করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরও যোগ করা হবে।
করোনার কারণে এখন স্ট্যান্ডিং (দাঁড়ানো) টিকিট বন্ধ রয়েছে। যাত্রীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় স্ট্যান্ডিং টিকিট চালু করা হবে কিনা জানতে চাইলে রতন কুমার চৌধুরী বলেন, ‘স্ট্যান্ডিং টিকিট চালুর কোনো নির্দেশনা আমরা পাইনি।’
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের তথ্য মতে, শনিবার চট্টগ্রাম থেকে মোট ৮টি ট্রেন ঢাকাসহ বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাবে। এই ৮টি ট্রেনে সাড়ে ৫ হাজার যাত্রী পরিবহনের সুযোগ আছে।
জ্বালানির দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে পরিবহন মালিকরা শুক্রবার থেকে বাস-ট্রাক চালানো বন্ধ রেখেছে। ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে রোববার বৈঠক ডেকেছে বিআরটিএ, তার আগ পর্যন্ত বাস-ট্রাক নামছে না সড়কে। এই পরিস্থিতিতে দূরগামী যাত্রীরা ট্রেনমুখো হওয়ায় চাপ সামলাতে হচ্ছে রেল বিভাগকে।
চট্টগ্রামে দিনমজুরের কাজ করেন ভৈরবের বাসিন্দা রায়হান মিয়া। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাড়িতে মা অসুস্থ। তাই জরুরি বাড়ি যেতে হচ্ছে। সাধারণত বাসে বাড়ি যাই। কিন্তু এখন বাস বন্ধ। তাই বাধ্য হয়ে ট্রেন ধরতে আসছি। কিন্তু এখানে টিকিট নাই। সকাল থেকে স্টেশনে আছি। টিকিট পাব কিনা জানি না।’
অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়ে যাওয়া যারা স্টেশনে এসেছেন তাদের বেশিরভাগই টিকিট না নিয়ে ফিরে গেছেন। অনেকে বেশি দামে টিকিট কেনার অভিযোগ করেছেন।
চট্টগ্রামে এসেছেন ঢাকার ব্যবসায়ী সোহেল হোসেন বাদশা। কিন্তু বাস বন্ধ থাকায় ২ দিন ধরে তিনি চট্টগ্রামে আটকে আছেন। শনিবার রাত ১১টার ঢাকাগামী তূর্ণা এক্সপ্রেসের একটি টিকিট তিনি কালোবাজার থেকে কিনতে পেরেছেন।
সোহেল হোসেন বাদশা বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে নন-এসি বগির টিকিটের দাম ৩৪৫ টাকা। কিন্তু আমাকে কিনতে হয়েছে এক হাজার টাকা দিয়ে। আমাদের হাত-পা বাঁধা। বাধ্য হয়ে কিনতে হচ্ছে।’
যদিও স্টেশনের ম্যানেজার রতন কুমার চৌধুরীর দাবি, এখন টিকিট কালোবাজারি নেই। রেলওয়ে টিকিট অনলাইনে বিক্রি করে। আর জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি হয় বিধায় একজনের পক্ষে একাধিক টিকিট সংগ্রহে রাখা সম্ভব নয়।
তবে আশার কথা হচ্ছে, ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর পরিবহন মালিক গ্রুপ। সংগঠনের সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলাল শনিবার দুপুর ১টার দিকে নিউজবাংলাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, রোববার সকাল ৬টা হতে চট্টগ্রাম মহানগরীতে গণপরিবহন চলবে। রাস্তা বন্ধ করে সিএনজি অটোরিকশা ও ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলে বাধা দিয়ে, রাজনৈতিকভাবে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে একটি পক্ষ। সে জন্য ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।