পুরান ঢাকার লালবাগের বাসিন্দা বাদল মিয়া। কাজ করেন ইমামগঞ্জে হার্ডওয়্যারের পাইকারি দোকানে।
প্রতিদিন রিকশায় করে বাসা থেকে কর্মস্থলে যান বাদল, তবে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে চলা পরিবহন ধর্মঘটে দ্বিতীয় দিনের মতো হেঁটে লালবাগ থেকে ইমামগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হন তিনি।
যাওয়ার পথে বাদল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এতকাল ধইরা ৩০-৪০ টাকায় যাইতাছি। হালায় অহন কয় অরে নাকি ১২০ ট্যাকা দিতে হইব। হাঁইটা যাইতাছি। হালায় ট্যাকা লাগব না।’
ওই সময় ক্ষোভ প্রকাশ করে বাদল বলেন, ‘দ্যাশের সরকার ত্যালের দাম বাড়াইবার আর সময় পায় নাইক্যা?’
গত ৩ নভেম্বর মধ্যরাত থেকে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানো হয়। এরপরই শুক্রবার সকাল থেকে গণপরিবহন মালিকরা তেলের দাম কমানো অথবা ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে ধর্মঘট শুরু করেছেন।
এই ধর্মঘটের ভুক্তভোগী বাদলের মতো কর্মজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
পুরান ঢাকায় শনিবার সকাল থেকে বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, মোড়ে মোড়ে যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করছেন অফিসগামীরা। কোনো ইজিবাইক, অটোরিকশা বা লেগুনার দেখা পেলেই ধাক্কাধাক্কি করে চড়ে বসার চেষ্টা করছেন তারা।
গণপরিবহন সংকটে এমন ভোগান্তিতে পড়া কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়েছে নিউজবাংলার। তাদের একজন নবাবপুর রোডের আবদুল আজিজ লেনের বাসিন্দা অজিফা খানম। তিনি মিরপুরের কালশীতে একটি বুটিকস কারখানার সুপারভাইজার হিসেবে কর্মরত।
অজিফা নিউজবাংলাকে জানান, প্রতিদিন ভোর সাড়ে ৪টায় ঘুম থেকে ওঠেন। বাসাবাড়ির দৈনন্দিন কাজ সেরে নাশতা বানিয়ে কর্মস্থলে যেতে সকাল ৮টা বেজে যায়।
পরিবহন ধর্মঘটে ঘুম থেকে রাত কয়টায় উঠলে কর্মস্থলে যেতে পারবেন, সে প্রশ্ন করেছেন কর্মজীবী এ নারী।
পুরান ঢাকার হাজারীবাগ, কামরাঙ্গীরচর, ঝাউচর, বউবাজার, বিডিআর ১ ও ২ নম্বর গেট, লালবাগ কেল্লা, পলাশী, চকবাজার, সোয়ারীঘাট, বাবুবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় কর্মজীবী নারী-পুরুষকে হেঁটে কর্মস্থলে যেতে দেখা গেছে।
বাবুবাজার ব্রিজের পাশে চাউলের আড়তদার আমিন উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। পরিকল্পনা করে দাম বাড়ানো যেত। তাহলে মানুষ এতটা ভোগান্তিতে পড়ত না।’