বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আগাম সবজির সবুজে হাসছে চাষি

  •    
  • ৬ নভেম্বর, ২০২১ ১০:১৬

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোর আঞ্চলিক কৃষি অফিসের উদ্যান বিশেষজ্ঞ ফয়েজ উদ্দিন বলেন, ‘মৌসুমের শুরুতে সবজির দাম একটু বেশি থাকে। এ সময় উৎপাদন কম হওয়ায় সবজির দাম বেড়ে যায়। এ ছাড়া বর্ষার কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় দাম একটু বেশি। মাসখানেক পরে উৎপাদন বাড়লে সবজির দাম স্বাভাবিক হবে।’

যশোরের বিস্তীর্ণ মাঠ এখন শীতকালীন সবজির সবুজে ঢাকা। সবজির জন্য বিখ্যাত এই জেলার মাঠগুলোতে যেদিকে চোখ যায় নানা সবজির সমারোহ।

এরই মধ্যে বাজারে ওঠা শুরু করেছে কিছু সবজি। দামও প্রায় দ্বিগুণ। এতে কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি।

ক্রেতারা অবশ্য পড়েছেন সংকটে। নতুন ওঠা সবজি কেনার ইচ্ছা থাকলেও দাম দ্বিগুণ হওয়ায় তা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার অনেকটাই বাইরে।

সবজি চাষিরা বলছেন, বর্তমানে অল্প পরিমাণে ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, টম্যাটো, পালংশাক বাজারজাত হচ্ছে। এগুলো মৌসুমের আগে চাষ করা হয়। চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ায় এ সবজির দাম বেশি। এ ছাড়া বর্ষার কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় দাম বেড়েছে। মাসখানেক পর আরও সবজি উঠলে দাম কমবে।

যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, চলতি বছরের অক্টোবর মাসের মাঝামাঝিতে রবি মৌসুম শুরু হয়েছে। এ সময় শীতকালীন সবজির আবাদ শুরু হয়। চলবে আগামী বছরের মার্চ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত।

যশোর সদরের কোদালিয়া গ্রামের চাষি কাওছার জানান, তিনি ২২ বিঘা জমিতে বাঁধাকপি লাগিয়েছেন। প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। সেই হিসাবে ২২ বিঘায় তার খরচ হয়েছে ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার হিসাবে ২২ বিঘায় পাবেন ১ লাখ ১০ হাজার পিস বাঁধাকপি।

তিনি আরও জানান, ফলন ভালো হলে ভালো দামে বিক্রি করতে পারবেন। প্রতি কেজি বাঁধাকপি ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে বিক্রি করতে পারলে ভালো লাভ থাকবে।

বাজারে আগাম পাওয়া বাঁধাকপির বিষয়ে বলেন, ‘বর্তমানে বাজারে যেসব বাঁধাকপি পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলো মৌসুমের আগে লাগানো। যে কারণে এসব বাঁধাকপি অপরিপক্ব ও সাইজে ছোট। এসব বাঁধাকপির দাম কম হওয়ার কথা, কিন্তু চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ায় এখন দাম বেশি।’

লেবুতলা ইউনিয়নের সবজি চাষি মোহন ঘোষ জানান, তিনি এবার তিন বিষা জমিতে ওল লাগিয়েছেন। এতে খরচ হয়েছে ২ লাখ টাকার মতো। ফলন ভালো হলে প্রতি বিঘায় তিনি ৮০ থেকে ৮৫ মণ ওল পাবেন।

সেই হিসাবে তিন বিঘায় তার উৎপাদন হবে ২৪০ মণ। কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হলে বীজ, সার, মজুরি ও পরিবহন খরচ বাদে তার লাখ খানিক টাকা লাভ হবে।তবে সবজির অতিরিক্ত দামে দিশাহারা নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা। সাধারণ সবজিও কিনতে পারছেন না তারা। শীনকালীন সবজির সঙ্গে সঙ্গে অন্য সবজির দামও বেড়েছে বাজারে।

যশোর তালতলা বাজারে সবজি কিনতে যাওয়া রিকশাচালক সুমন হোসেনের সঙ্গে কথা হয় নিউজবাংলা প্রতিবেদকের।

তিনি বলেন, ‘আমগোর কপালে সুখ নাই। যা কামাই তা সবই বাজার করতেই চলে যায়। রাত-দিন রিকশা চালিয়েও সংসার চলে না।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোর আঞ্চলিক কৃষি অফিসের উদ্যান বিশেষজ্ঞ ফয়েজ উদ্দিন বলেন, ‘মৌসুমের শুরুতে সবজির দাম একটু বেশি থাকে। এ সময় উৎপাদন কম হওয়ায় সবজির দাম বেড়ে যায়। এ ছাড়া বর্ষার কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় দাম একটু বেশি। মাসখানেক পরে উৎপাদন বাড়লে সবজির দাম স্বাভাবিক হবে।’

যশোর আঞ্চলিক কৃষি অফিসের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছর খুলনা বিভাগের ৬ জেলায় ৫৩ হাজার ৩৪৫ হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। ২ নভেম্বর পর্যন্ত সবজি চাষ হয়েছে ১৭ হাজার ৩২১ হেক্টর জমিতে।

এর মধ্যে যশোর জেলায় সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমিতে। এখন পর্যন্ত চাষ হয়েছে ৪ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে। ঝিনাইদহ জেলায় ১৩ হাজার ১০০ হেক্টর জমির লক্ষ্যমাত্রায় চাষ হয়েছে ৪ হাজার ৩২০ হেক্টরে।

মাগুরায় লক্ষ্যমাত্রা ৩ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমি। সবজি চাষ হয়েছে ৩৩০ হেক্টর জমিতে। কুষ্টিয়ায় ৬ হাজার ৮৮৫ হেক্টর জমির লক্ষ্যমাত্রায় চাষ হয়েছে ২ হাজার ৫১০ হেক্টরে।

চুয়াডাঙ্গায় শীতকালীন সবজি চাষ হয়েছে ৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৪৬০ হেক্টর। মেহেরপুরে ৪ হাজার ৫০০ হেক্টরের লক্ষ্যমাত্রায় চাষ হয়েছে ১ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে।কৃষি কর্মকর্তারা জানান, শীত মৌসুমের শুরুতে নানা ফসলের কারণে সব জমিতে সবজি চাষ শুরু হয় না। কিছুদিন পর অনেক জমিতে সবজি চাষ শুরু করবেন চাষিরা। গত বছর বিভাগে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০ হাজার ২৩ হেক্টর জমি। এ বছর চাষ হয় ৫১ হাজার ১২২ হেক্টর জমিতে।

এ বিভাগের আরো খবর