বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শীতের আমেজে সৈকতে ছুটছে মানুষ

  •    
  • ৬ নভেম্বর, ২০২১ ০৮:০৬

সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার বিপুলসংখ্যক পর্যটক ভিড় করেছেন কক্সবাজারে। ইতিমধ্যে সৈকতের কাছের আবাসিক হোটেলগুলোতে অবস্থান করছেন অনেকে। প্রতিদিনই বাড়ছে পর্যটকদের আনাগোনা।

দেশে শীতের আগমন বোঝা যায় নভেম্বরের শুরুতে। শরৎ-হেমন্তের শিশির ধীরে ধীরে রূপ নেয় কুয়াশায়। কমতে থাকে তাপমাত্রা।

বেশি গরমও নয়, শীতও নয়- এমন আবহাওয়া সৈকতে ঘোরার জন্য আদর্শ। গত বছর দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে পর্যটকরা যেতে পারেননি কক্সবাজার সৈকতে। তাই এ বছর নভেম্বরের শুরুতেই পর্যটন নগরীতে ছুটছে মানুষ।

সপ্তাহের অন্যদিন যাই হোক, শুক্র ও শনিবার বিপুলসংখ্যক পর্যটক ভিড় করছেন কক্সবাজারে। ইতিমধ্যে সৈকতের কাছের আবাসিক হোটেলগুলোতে অবস্থান করছেন অনেক পর্যটক। প্রতিদিনই বাড়ছে তাদের আনাগোনা।

করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল পর্যটন নগরী কক্সবাজারের হোটেল ও রেস্তোরাঁ। মৌসুমের শুরুতে পর্যটকদের এমন ভিড়ে হাসি ফুটেছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মুখে। করোনার সময়ের ক্ষতি কাটানোর আশা এখন তাদের বুকে।

কক্সবাজারের মূল এলাকার অধিকাংশ আবাসিক হোটেলেই এখন কোনো কক্ষ খালি নেই। হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, সরকারি নির্দেশনায় ৫০ শতাংশ আসন খালি রাখতে হবে। তবে পর্যটকদের এই চাপ সেই নিয়ম মেনে সামাল দেয়া সম্ভব নয়।

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে ঝিনুক ও অন্য কুটির শিল্পের পণ্য কেনায় ব্যস্ত ক্রেতারা। ছবি: নিউজবাংলা

হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম সিকদার বলেন, ‘মৌসুমের শুরুতে আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছি। এই সময়ে যে পরিমাণ পর্যটকের আগমন ঘটেছে, এতেই আমরা সন্তুষ্ট।

‘তবে ৫০ শতাংশ আসন খালি রেখে পর্যটক সামাল দেয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এ ছাড়া করোনা পরিস্থিতিও এখন ভালো। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি।’

সাইমন ব্লু-পার্ল হোটেলের তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, ‘শীতের আমেজ পাওয়ার পর থেকেই পর্যটকের আগমন বেড়েছে। অধিকাংশ কক্ষই এখন আগাম বুকিং হয়ে যাচ্ছে।

‘দীর্ঘ লকডাউনে আমরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। লকডাউনেই চলে গেছে চারটি ঈদ ও নববর্ষ। আমরা এই মৌসুমটা ভালোমতো ব্যবসা করতে চাই।’

পর্যটকদের ভিড় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই সংশ্লিষ্ট সবার ব্যবসা বেড়েছে।

মাংস ব্যবসায়ী আবদুর রহিম জানান, এরই মধ্যে তারা বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করেছেন বিভিন্ন হোটেল-মোটেল ও রেস্তোরাঁয়। ব্যবসা আবার শুরু হওয়ায় তারা খুশি।

সুগন্ধা পয়েন্টে ‘মালাই চা’ বিক্রেতা আজিজুল রহমান বলেন, ‘আমরা স্বল্প পুঁজি নিয়ে ব্যবসা করি। এখন ভালোই ব্যবসা হচ্ছে। প্রতিদিন লোক বাড়ছে পর্যটন এলাকায়।’

সুগন্ধা ঝিনুক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন জানান, শুধু সুগন্ধা পয়েন্টে ঝিনুক, খাবার, বার্মিজপণ্য, আচার, ডাবসহ বিভিন্ন পণ্যের প্রায় ৩০০ দোকান আছে। এসব ব্যবসার সঙ্গে প্রায় ১ হাজার ৫০০ মানুষ জড়িত।

কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকত সুগন্ধা পয়েন্টে পর্যটকদের আনাগোনা। ছবি: নিউজবাংলা

জেলা প্রশাসকের নির্দেশে গত ১৩ মার্চ থেকে বন্ধ ছিল এসব দোকানপাট। এতে কুটির শিল্পের পণ্য শামুকের ঝাড়বাতি, টুপি, হাতের ব্যাগ ও আচার নষ্ট হয়েছে অনেক। আচার ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে।

তিনি আরও জানান, দীর্ঘ পাঁচ মাস পর গত ১৯ আগস্ট থেকে এসব ব্যবসা পুনরায় চালু হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে পর্যটক আসায় তারা এখন আশার আলো দেখছেন।

কক্সবাজার চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে যারা সৈকত এলাকায় পর্যটকদের ওপর নির্ভরশীল।

‘তাদের এই ব্যবসাগুলো ছিল বিভিন্ন এনজিও থেকে কিস্তিনির্ভর। কিস্তি নিয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসা পরিচালনা করেন তারা। এখন লকডাউন নেই। সীমিত পরিসরে চালু হয়েছে পর্যটন ব্যবসা। আশা করি, ধীরে ধীরে কেটে যাবে তাদের এই সংকট।’

পর্যটক সমাগম বাড়ায় সৈকতে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও জেলা পুলিশ।

কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহীউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলার ওপরও নজদারি করা হচ্ছে।

‘এ ছাড়াও পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তিনটি বেসরকারি লাইফ গার্ড সংস্থার অর্ধশতাধিক প্রশিক্ষিত লাইফগার্ড কর্মী নিয়োজিত রয়েছেন।’

এ বিভাগের আরো খবর