ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে সুমি অধিকারী নামের এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। সুমির বাবা ও চাচার দাবি, হত্যা করে মরদেহ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছেন তার স্বামী। স্বামীর পরিবার বলছে, সুমি আত্মহত্যা করেছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে নিয়েছে পুলিশ।
উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের বাগুয়ান গ্রামে শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন সুমির স্বামী রনি অধিকারী ।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বাগুয়ান গ্রামের সৌদিপ্রবাসী নিত্য অধিকারীর ছেলে রনি অধিকারীর সঙ্গে মাগুরার শালিখা উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের ডা. মোহন অধিকারীর মেয়ে সুমি অধিকারীর বিয়ে হয় ১০ বছর আগে।
রনি ও সুমির রাহুল অধিকারী নামে সাত বছরের একটি ছেলে রয়েছে। রনি বেপরোয়া জীবনযাপন করতেন। এ নিয়ে কলহের জেরে সকালে ঘরে বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে সুমি আত্মহত্যা করেছেন বলে রনির পরিবার থেকে দাবি করা হয়েছে। আর সুমির পরিবার বলছে, তাদের মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে।
রনির চাচা চিত্ত অধিকারী বলেন, ‘সকালে সুমিকে ঘরে বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান প্রতিবেশী রিতা পাল। পরে দরজা ভেঙে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। পারিবারিক কলহের জেরে সুমি আত্মহত্যা করেছে বলে আমার ধারণা। তবে আমার ভাতিজার চলাফেরাও বেপরোয়া ছিল।’
বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক জ্ঞানব্রত শুভ্র জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ মরদেহ ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ মর্গে নিয়েছে।
সুমির বাবা ডা. মোহন অধিকারী বলেন, ‘আমার একমাত্র মেয়ে প্রতিনিয়ত তার স্বামীর নির্যাতন সহ্য করেও সংসার করছিল। আমরা জামাইয়ের যেকোনো আবদার মেটাতে তৎপর থাকতাম। কিন্তু জামাই মেয়েটিকে বাঁচতে দিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘রনি বেশ কিছুদিন সৌদিতে ছিল। প্রায় দুই বছর আগে বিদেশ থেকে চলে আসে। বিদেশ থেকে আসার পর থেকে আমার মেয়েকে টাকার জন্য চাপ দিত। তার চরিত্রও ভালো ছিল না।’
সুমির চাচা প্রহ্লাদ অধিকারী বলেন, ‘এর আগে ওই গ্রামের এক গৃহবধূকে রনি বাগিয়ে নিয়ে যায়। তারপরও ভাতিজিকে রনির বাড়িতে রেখেছি যে, সে ভালো হয় কি না। জামাই আমার ভাতিজিকে মেরে ঝুলিয়ে রেখেছে। সুমি আত্মহত্যা করতে পারে না। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।’
বোয়ালমারী থানার উপপরিদর্শক মামুন অর রশিদ জানান, সুমির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় রনি অধিকারী থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন এলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।