কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে এক ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) চেয়ারম্যান পদে লড়তে প্রার্থী হয়েছেন বাবা-ছেলে, আরেকটিতে স্বামী-স্ত্রী।
মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর যাচাই-বাচাই শেষে বৃহস্পতিবার তাদের বৈধ প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি শফিউল আলম শফি চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন।
সে সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তার ছেলে ফয়সাল শামীম।
এদিকে, উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী আমজাদ হোসেন বেপারী। তার বিপরীতে নির্বাচন করতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আমজাদের স্ত্রী মরিয়ম বেগম।
নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, ২ নভেম্বর ছিল মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন। চেয়ারম্যান পদে ভিতরবন্দ ইউনিয়নে বাবা-ছেলেসহ ৯ জন, আর বামনডাঙ্গা ইউনিয়নে স্বামী-স্ত্রীসহ ৮ জন নির্বাচনের মাঠে আছেন।
তবে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সুযোগ আছে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত।
ভিতরবন্দ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা শফিউল আলম শফি বলেন, ‘আমার তো শত্রুর অভাব নাই, প্রার্থীরা জানে, আমি ভোটে দাঁড়ালে জিতব, তাই নানা ফন্দি করে মনোনয়ন বাতিল করতে পারে, সে কারণে আমি ছেলেকেও প্রার্থী বানিয়েছি। যেহেতু আমার মনোনয়ন বৈধ হয়েছে, সে কারণে ছেলে ভোট করবে না। সে প্রত্যাহার করবে।’
চেয়ারম্যান প্রার্থী ফয়সাল শামীম বলেন, ‘গত নির্বাচনে ভোটার তালিকায় আমার বাবাকে মৃত দেখানো হয়েছে। এবারও যদি দেখায়, সে কারণে ভোটে দাঁড়াইছি। কিন্তু রোববার প্রত্যাহার করব।’
বামনডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন বলেন, ‘ভোটাররা আমাকে চায় যেন আমি চেয়ারম্যান হই। কিন্তু আমার অনেক শত্রু, তারা চায় আমার প্রার্থীতা বাতিল করতে। এজন্য আমার স্ত্রীর মনোনয়নপত্র নিয়েছি। যেহেতু টিকে গেছি, তাই স্ত্রীর মনোনয়নপত্র উইথড্রো করব।’
শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে বাবা-ছেলে ও স্বামী-স্ত্রীর ভোটের লড়াইয়ে থাকবে কী থাকবে না তা নিয়ে শুরু হয়েছে মুখরোচক আলোচনা।
উপজেলার ভিতরবন্ধ বাজারের পান দোকানদার হযরত আলী বলেন, ‘ওমরা বাপ বেটা ভোট করবের নোয়ায়, যদি শফি চেয়ারম্যান বাদ পড়ে তাইলে তো সোউগ শ্যাস, সেই জন্যে বেটাক দাঁড়ে দিচে, শুনবেনজি দুই জনে টিকছে। কিন্তু শামীম ভোট করবের নোয়ায়। এমনি এমনি ভোটোত খাড়া হইচে।’
বামনডাঙ্গা মালিয়নী গ্রামের বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এমনি ভোটোত দাঁড়াইচে। শুনবেনজি ভাবি বসি যাইবে। আমজান চেয়ারম্যান ভোট করবে। খালি ম্যানষক হাসাইল।’
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, ‘উপজেলার ১৪ ইউনিয়নে মোট ৯৭ জন চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও বৈধতা পেয়েছে ৯৩ জন। সদস্য পদে ৪৯৩ জনের মধ্যে বাদ পড়েছেন ১৫ জন, আর সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১৭৯ জনের মধ্যে বাদ পড়েন ৮ জন।’
তিনি বলেন, ‘প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে ১২ নভেম্বর এবং ২৮ নভেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।