ডিজেলের দাম বাড়ানোর কারণে বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি শুক্রবার কেন্দ্রীয়ভাবে পরিবহন মালিক সমিতিও বাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে বাস না চললেও শুক্রবারে থাকা অন্তত ২৬টি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হচ্ছে।
ভোগান্তি নিয়েই হাজার হাজার পরীক্ষার্থী কেন্দ্রে ছুটেছেন সকাল থেকেই। হঠাৎ করে বাস ধর্মঘটের ঘোষণা আসায় নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করা সম্ভব নয় বলে বৃহস্পতিবারই জানায় একাধিক নিয়োগ কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি নিয়ে নিউজবাংলা বৃহস্পতিবারই জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে। তবে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
পরে জনপ্রশাসনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবদুল্লাহ শিবলী সাদিক বলেন, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। নতুন কোনো সিদ্ধান্ত এলে জানানো হবে।
তবে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়নি। ফলে সকালে যেসব নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কথা সেগুলো এরই মধ্যে শুরুও হয়েছে। পরীক্ষার্থীরা নানা উপায়েই কেন্দ্রে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।
হেঁটে, রিকশা, আবার কেউ পিকআপ ভ্যানে করে কেন্দ্রে পৌঁছান।
ধর্মঘটের মধ্যেই পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির সদস্য সচিব আজিজুর রহমান বলেন, ‘অনেক আগেই পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের করার কিছু নেই। পূর্ব নির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।’
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমানের বক্তব্যও তা-ই। তিনি বলেন, ‘অনেক আগেই পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। হঠাৎ করে ধর্মঘটের ঘোষণা এলো। পরীক্ষা বাতিল চাইলেই সম্ভব নয়। এর সঙ্গে অনেক বিষয় জড়িত।’
চাকরিপ্রার্থীদের ক্ষোভ
চাকরিপ্রত্যাশীরা বলছেন, বেকার জীবনে তারা এমনিতেই পরিবারে এক ধরনের বোঝা হয়ে আছেন। তার ওপর চাকরির জন্য আবেদন করা ও পরীক্ষা কেন্দ্রে যাতায়াতের টাকাটাও পরিবার থেকেই নিতে হয়।
অনেকেই জানিয়েছেন, করোনা মহামারি শেষে নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হলেও একাধিক পরীক্ষা একই সময়ে অনুষ্ঠিত হওয়ায় তারা কোনো একটিকে বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। শুক্রবারও এমন বেশ কিছু পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এর মধ্যে পরিবহন ধর্মঘট, কেন্দ্রে যাতায়াত করতে গিয়ে তাদের বিপাকে পড়তে হয়েছে।
এ নিয়ে অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ক্ষোভ প্রকাশ করে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
শুক্রবার যেসব নিয়োগ পরীক্ষা
শুক্রবার সকালের পালায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, কর কমিশনারের কার্যালয়, কর অঞ্চল-১৪, স্থানীয় সরকার বিভাগ, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, শ্রম আদালত, সিলেট; বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট, খাদ্য অধিদপ্তর, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তর, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এবং ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বিকেলে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে সমন্বিত সাত ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পল্লী উন্নয়ন অ্যাকাডেমি, শ্রম আদালত, সিলেট (দ্বিতীয় শিফট), বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন, বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তর (দ্বিতীয় শিফট) এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ (দ্বিতীয় শিফট)-এর পরীক্ষা।