মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ঘরের উঠান থেকে একটি শঙ্খিনী সাপ উদ্ধার করেছে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ। সাপটি লম্বায় প্রায় ৫ ফুট।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার তিলকপুরের মণিপুরী সম্প্রদায়ের মুকন্দ সিংহের বাড়ির উঠানের এক ফুলগাছের ঝোপে সাপটিকে দেখেন স্থানীয়রা। পরে বন বিভাগকে খবর দিলে তারা গিয়ে সেটি উদ্ধার করে।
বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ মৌলভীবাজারের সহকারী বন সংরক্ষক শ্যামল কুমার মিত্র বলেন, ‘সাপটি উদ্ধার করা হয়েছে। সাপটি সম্পূর্ণ সুস্থ আছে। এটিকে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করা হবে।’
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘সাপটি আমাদের কাছে আছে। সুস্থ মনে হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে একে বনে ফিরিয়ে দেয়া হবে।’
নিউরো টক্সিন বিষসংবলিত শঙ্খিনী সাপকে এলাকা বিশেষে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। যেমন: শাখামুটি, সানি সাপ (খুলনা অঞ্চলে), দুইমাথা সাপ ইত্যাদি।
এর ইংরেজি নাম Banded Krait, বৈজ্ঞানিক নাম Bungarus fasciatus। এই সাপদের সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য হতে পারে ৬ থেকে ৭ ফুট।
এই সাপকে বাংলাদেশের আবাসিক সাপও বলা হয়। সারা দেশেই এদের দেখা যায়, তবে পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় এদের অবস্থান বেশি। দেশের বাইরে ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, চীন, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, কম্বোডিয়া, লাওস, ম্যাকাও, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ব্রুনেই অংশেও এদের দেখা যায়।
শঙ্খিনী বর্ষায় ডিম দেয় ও বাচ্চা তোলে। স্ত্রী সাপ এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে ৪ থেকে ১৪টি ডিম দেয় এবং ডিম ফোটা পর্যন্ত অপেক্ষা করে। ডিম ফুটতে ৬১ দিন সময় লাগে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও প্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. মনিরুল এইচ খান নিউজবাংলাকে জানান, অনান্য সাপের মতো এই সাপও কমছে মূলত দুটি কারণে। মানুষ নির্বিচারে সাপ হত্যা করছে আর অন্য কারণ হচ্ছে মানুষের কারণে সাপের বাসস্থান বিপন্ন হচ্ছে দ্রুত। যেহেতু এই সাপ অন্য সাপকে খেয়ে ফেলে, তাই প্রাকৃতিকভাবেই এই সাপ পরিবেশে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা রাখে।