বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নারায়ণগঞ্জে বাসভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে দিনভর ক্ষোভ

  •    
  • ৪ নভেম্বর, ২০২১ ২১:০৫

বৃহস্পতিবার দিনভর নগরীর চাষাঢ়া ও ২ নম্বর গেট এলাকায় বাস টার্মিনাল থেকে রাজধানীর পথে বাড়তি ভাড়া নিয়ে ছেড়ে গেছে সিটি বন্ধন, উৎসব, হিমাচল, মৌমিতা, শীতলের বাস। এসব বাসে জনপ্রতি ১০-১৪ টাকা বেশি ভাড়া নেয়া হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ১৪ টাকা বাড়িয়েছে সিটি বন্ধন ও উৎসব পরিবহন।

ডিজেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা আসার পরদিনই নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা রুটের অন্তত পাঁচটি পরিবহন বাসের ভাড়া বাড়িয়েছে। এ নিয়ে দিনভর ফেসবুকে ক্ষোভ জানিয়েছেন যাত্রীরা।

এই রুটে প্রতিদিন অন্তত ১০টি পরিবহনের বাস চলাচল করে। বৃহস্পতিবার দিনভর নগরীর চাষাঢ়া ও ২ নম্বর গেট এলাকায় বাস টার্মিনাল থেকে রাজধানীর পথে বাড়তি ভাড়া নিয়ে ছেড়ে গেছে সিটি বন্ধন, উৎসব, হিমাচল, মৌমিতা, শীতলের বাস।

কাউন্টারগুলো ঘুরে দেখা যায়, এসব বাসে জনপ্রতি ১০-১৪ টাকা বেশি ভাড়া নেয়া হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ১৪ টাকা বাড়িয়েছে সিটি বন্ধন ও উৎসব পরিবহন।

বুধবার পর্যন্ত এসব বাস নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকার দিকে জনপ্রতি ৩৬ টাকা ভাড়ায় চলেছে। বুধবার রাত ১২টা থেকে সরকার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেয়ার পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এসব টিকিট বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা পর্যন্ত।

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) শীতল পরিবহন জনপ্রতি ৫৫ থেকে ভাড়া বাড়িয়ে ৬৫ টাকা আদায় করেছে। হিমাচলের ভাড়া বেড়েছে জনপ্রতি ৫ টাকা। অন্য পরিবহনগুলোর বাসভাড়াও ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। তবে সরকারি পরিবহন বিআরটিসির নন-এসি বাসের ভাড়া আগের মতো ৩০ টাকাই রয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের নয়ামাটি থেকে প্রতিদিন রাজধানীতে যান ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সিটি বন্ধন পরিবহনের বাসে আমি ঢাকায় যাতায়াত করি। গতকালও ৩৬ টাকা ভাড়া দিয়ে ঢাকা গিয়েছি। কোনো নোটিশ না দিয়ে ভাড়া বাড়িয়ে দিল ১৪ টাকা। তারা যাত্রীদের জুলুম করা শুরু করে দিয়েছে।’

কাপড় বিক্রেতা আব্দুর রহমান বলেন, ‘ডিজেলের দাম বাড়ার কারণে বাসভাড়া বাড়ানোটা স্বাভাবিক, কিন্তু জনপ্রতি ১৪ টাকা বাড়ানো তো মানুষের ওপর জুলুম করা। এমনিতেই তারা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পথে বাড়তি ভাড়া নিচ্ছে।’

রাতারাতি ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় কাউন্টারে টিকিট কিনতে আসা যাত্রীদের সঙ্গে কর্মীদের বাগ্‌বিতণ্ডাও হয়েছে।

বেসরকারি চাকরিজীবী মো. শাহরিয়ার বলেন, ‘দুধ, চিনি, ভোজ্যতেল, ডাল সবকিছুর দাম তো আগে থেকেই বাড়তি। এখন ডিজেলের দামের সঙ্গে বাসভাড়াও বাড়ল। যে যার মতো করে সবকিছুর দাম বাড়িয়ে দিতেছে। কোনো শৃঙ্খলা নেই। এইভাবে চলতে থাকলে না খেয়ে থাকতে হবে।’

বাড়তি বাসভাড়া প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের সভাপতি রফিউর রাব্বি। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে বাসের ভাড়া বৃদ্ধির কোনো নিয়ম-পদ্ধতি না থাকায় পরিবহনমালিকরা নিজেদের খেয়ালখুশিমতো ভাড়া বাড়িয়ে নিচ্ছেন।

‘ইতোপূর্বে বহুবার তারা এই কাজ করেছেন। এখানে প্রশাসন বিভিন্ন সময় কার্যকরী ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় জনগণকে বারবার এই পরিবহনমালিকদের মুখোমুখি হতে হয়েছে। জ্বালানি তেলে সরকারের বর্ধিত দাম অনুপাতেও যদি ভাড়া বৃদ্ধি করে, তা হলে ৩৬ টাকার ২৩ শতাংশ বর্ধিত মূল্য ৮ টাকা। যেখানে মোট ভাড়া দাঁড়ায় ৪৪ টাকায়। অথচ সুযোগ পেয়ে যাত্রীদের টাকা লুট করতে দ্বিগুণ ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।’

তিনি এই বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারে বিআরটিএ ও স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি দিদারুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বাস ভাড়া বাড়াইনি। তবে কিছু কিছু পরিবহনের মালিকরা নিজেরাই বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন যাত্রীদের কাছ থেকে। যারা বাড়তি ভাড়া নিচ্ছে, তাদের বিষয়ে দেখবে প্রশাসন। তবে যদি সরকারি নির্দেশনা আসে তাহলে আমরাও ভাড়া বাড়াব।’

সিটি বন্ধন পরিবহনের চেয়ারম্যান নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জুয়েল হোসেন জানান, বাসে ভাড়া কেবল ডিজেলের দামের জন্যই বাড়ানো হয়নি। বাস পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যান্য খরচও বেড়েছে বলে তারা বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন।

মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করা হলে অন্যান্য পরিবহনের মালিকরা ফোন ধরেননি।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) নারায়ণগঞ্জের উপপরিচালক সৈয়দ আইনুল হুদা চৌধুরী নিউজবাংলাকে জানান, সরকারি নির্দেশনা ছাড়া যারা যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া নিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে নেমেছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা আগামীকাল সকাল থেকে বাস কাউন্টারগুলোর সামনে নজরদারি চালাব, যেন কোনো পরিবহন বাড়তি ভাড়া নিতে না পারে।’

জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিকেলের পর থেকে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। অবৈধভাবে যেসব পরিবহন বাড়তি ভাড়া নেয়ার চেষ্টা করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর