বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মোকিম ও ঝড়ুর ফাঁসি: দুই মন্ত্রীর ব্যাখ্যা

  •    
  • ৪ নভেম্বর, ২০২১ ২০:১৭

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘আমি জানি না, এই যে আপিলটা কবে দাখিল হয়েছিল বা কেন জেল আপিল এটার সঙ্গে এক হলো না। কথাটা হচ্ছে, আপিল শুনানির আগে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে এই কথাটা সঠিক নয়।’

যশোর কারাগারে চার বছর আগে আব্দুল মোকিম ও গোলাম রসুল ঝড়ু নামে দুজনের ফাঁসি কার্যকর নিয়ে সমালোচনার মধ্যে বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার নিজ নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তারা। তারা বলছেন, দণ্ড কার্যকরের প্রতিটি ধাপ সুচারুভাবেই সম্পন্ন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোনো ব্যত্য়য় ঘটেনি।

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর রাতে আসামি দুজনের ফাঁসি হয়। মোকিম ও ঝড়ু চরমপন্থি দল পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য ছিলেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. হুমায়ন কবির বুধবার সংবাদমাধ্যমকে জানান, হাইকোর্ট ফাঁসির আদেশ দিলে এর বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে আপিল করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন পর সেটি আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় এসেছে। তবে এর চার বছর আগে দুজনের ফাঁসি কার্যকর হয়ে গেছে।

আসামিপক্ষের আইনজীবীর এ বক্তব্যের পর আলোড়ন তৈরি হয়। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর কখনোই আপিল শুনানি নিষ্পত্তির আগে সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে সেটি কীভাবে হলো, তা নিয়ে সৃষ্টি হয় বিস্ময়।

তবে বিভিন্ন নথি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই বন্দি মোকিম ও ঝড়ুর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে। তাদের জেল আপিল সর্বোচ্চ আদালতে খারিজ হওয়ার পরেই জারি হয় মৃত্যু পরোয়ানা। ওই পরোয়ানা কারাগারে গেলে দুই আসামি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষা চান। তবে সেটিও নাকচ হয়।

এর পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশের জেল কোড অনুযায়ী দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর হয় ২০১৭ সালে। তবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জেল আপিল খারিজ হলেও হাইকোর্টের ফাঁসি বহালের রায়ের বিরুদ্ধে দুই আসামির করা নিয়মিত আপিল অনিষ্পন্নই থেকে যায়। যেটি শুনানির জন্য এখন আপিল বিভাগের তালিকায় এসেছে।

সচিবালয়ে আইনমন্ত্রীর কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি গতকালই এ বিষয়টি জানতে পেরেছি। কিন্তু আমার কাছে যে তথ্য আছে তার সঙ্গে প্রকাশিত খবরের কোনো মিল নেই।

হত্যা মামলায় আপিল নিষ্পত্তির আগেই ফাঁসির দড়িতে ঝোলা গোলাম রসুল ঝড়ু (বাঁয়ে) ও আব্দুল মোকিম। ছবি: সংগৃহীত

‘বিষয়টি এ রকম, যাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে বিচারিক আদালত তাদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল। তারপর হাইকোর্টে এ মৃত্যুদণ্ড কনফার্ম করা হয়েছিল। তারা (আসামিরা) একটা জেল আপিল করেছিল। এটির শুনানি শেষে বিচারিক আদালত ও হাইকোর্টের যে রায় তা বহাল রাখা হয়। তারপরে আসামিরা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চান। সেই আবেদন নাকচের পরে তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।’

এ সময় মামলাটির বিভিন্ন নথির তথ্য সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন মন্ত্রী। পাশাপাশি ব্যাখ্যা করেন মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়াও।

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘যে ঘটনাটা হয়েছে, আমি যেহেতু একজন আইনজীবী, এটা আমি বলতে পারি। ঘটনা হচ্ছে জেল আপিল যখন শুনানি হয় তখন কিন্তু আদালতে কোনো আইনজীবী থাকেন না। এটা হচ্ছে যারা সাজাপ্রাপ্ত, তারা নিজস্ব একটা ফরমেটে বিষয়টি লেখেন। সেটি পরে বিচারপতিদের সামনে উপস্থাপন করা হয়।

‘তারা (বিচারপতি) এটা পড়েন, যদি এটির সঙ্গে কোনো কাগজপত্র থাকে সেগুলো তারা দেখেন। অবশ্যই হাইকোর্ট ডিভিশনের রেকর্ডটা তাদের সামনে থাকে, সেটাও তারা দেখেন। এভাবে তারা শুনানি করে মামলাটি নিষ্পত্তি করেন।’

এ ঘটনায় কোনো ভুল হয়নি তবে বিভ্রান্তি হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, এখানে ভুল বলতে, মামলার প্রক্রিয়ায় কোনো ভুল হয়নি। বিভ্রান্তি যেটা নিয়ে হয়েছে সেটা হচ্ছে, হয়তো কোনো এক সময় কোনো একটা আপিল কেউ দাখিল করেছিল। এটা আমি আমার ওকালতি জীবনে যেটা দেখেছি, এ রকম আপিল দাখিল হলে কোনো উকিলের মাধ্যমে, তাহলে জেল আপিলও থাকে। তখন দুটো একসঙ্গে হয়ে যায়।

‘আমি জানি না, এই যে আপিলটা কবে দাখিল হয়েছিল বা কেন জেল আপিল এটার সঙ্গে এক হলো না। কথাটা হচ্ছে, আপিল শুনানির আগে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে এই কথাটা সঠিক নয়।’

সব প্রক্রিয়া মেনে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবি করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি বলেন, ভুলের কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ‘আপনারা নিশ্চই জানেন, ফাঁসির একটি প্রক্রিয়া আছে। ফাঁসির আগে যিনি দণ্ডপ্রাপ্ত হন তিনি আপিল করতে পারেন। তারা (সাজাপ্রাপ্ত) আপিল করেছিলেন। এরপর নাকচ হওয়ার পরে তিনি সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছিলেন, যেটাকে জেল আপিল বলা হয়। এটাই হয়ে থাকে।

‘জেল আপিল নাকচ হওয়ার পরে রাষ্ট্রপতির কাছেও প্রাণভিক্ষা চেয়েছেন। সেটিও নাকচ হয়েছে। তারপর প্রক্রিয়া অনুযায়ী ফাঁসি দেয়া হয়। এখানে কোনো আপিল যদি আমাদের কাছে খবর থাকত, তাহলে অবশ্যই বিবেচনা করা হতো। আমরা যেটুকু দেখেছি, সবকিছুই নিয়মানুযায়ী ধাপের পর ধাপ এসেছে। আমাদের জানা মতে তাদের নামে কোনো আপিল পেন্ডিং ছিল, এটা জানা নেই। আমাদের কাছে কোনো নোটিশ আসেনি। নিয়মের কোনো ব্যত্যয় হয়নি।’

এ বিভাগের আরো খবর