ডিজেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে পণ্যবাহী গাড়ি বন্ধ রাখার ঘোষণায় সমর্থন জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে এই ইস্যুতে তার দল কোনো কর্মসূচি দেবে কি না, সে সিদ্ধান্ত নিতে তিনি আরও সময় নিতে চান।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও শহরের কালিবাড়ী এলাকায় নিজ বাসভবন থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার সময় সাংবাদিকদের এ কথা বলেন বিএনপি নেতা।
আগের দিন সরকার ডিজেল ও কেরসিনের দাম এক দিনে লিটারে ১৫ টাকা করে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়, যা এরই মধ্যে কার্যকর হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় শুক্রবার থেকে পণ্যবাহী গাড়ি চালানো বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন পরিবহন মালিকরা। চট্টগ্রামে বাস চালানো বন্ধের ঘোষণাও এসেছে।
বাস মালিক সমিতি ভাড়া বাড়ানোর ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে বসতে চাইছে। তবে এখন বৈঠকের দিন তারিখ চূড়ান্ত হয়নি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে ট্রাক শ্রমিকদের কর্মসূচিকে আমরা সমর্থন করি। এই ইস্যুতে আমরা কোনো কর্মসূচি দেবো কি না তা ঢাকায় গিয়ে জানাতে পারব।’
এরই মধ্যে বিভিন্ন জেলায় বাস ভাড়া বেশি আদায়ের খবর আসছে। ট্রাক ভাড়া বেড়ে গেলে পণ্যমূল্যও বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কার কথা বলাবলি হচ্ছে।
মির্জা ফখরুলও একই শঙ্কার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে দেশের মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। সেই সময়ে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করায় তা দ্রব্যমূল্য আরও বাড়াবে। এটা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করবে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পাবে। তাতে দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে।’
জ্বালানি তেলের পাশাপাশি এলপিজির দামও এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো বাড়ানোর ঘোষণা এসেছে।
১০ অক্টোবর ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ভোক্তা পর্যায়ে বাড়ানো হয়েছিল ২২৬ টাকা। সেটি আরও ৫৪ টাকা বাড়ানোয় এখন থেকে গ্রাহক পর্যায়ে ১২ কেজি এলপিজির দাম পড়বে ১ হাজার ৩১৩ টাকা।
জ্বালানি তেলের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে এলপিজির দাম বৃদ্ধির কারণে দেশেও এই সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানানো হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
তবে ফখরুল বলেন, ‘আমরা জানি যে এলপিজি কারা আমদানি করে, ফুয়েল কারা আমদানি করে। সবকিছু মিলে এমন একটি অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যেখানে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। সরকার দমনমূলক আচরণ করছে।
‘বিনা ভোটের এই সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই। তারা জনগণের কাছে জবাবদিহি করে না, পার্লামেন্ট জবাবদিহি করে না। তারা নিজেদের ইচ্ছা-খুশিমতো যা করার করে চলেছে।’
বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ, টিসিবিও ডাল ও ভোজ্য তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারও সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল। বলেন, ‘টিসিবির পণ্য তো সাধারণ মানুষের জন্য। এটার দাম বৃদ্ধি করে সাধারণ মানুষকে নির্যাতন করা হচ্ছে। সরকার বিদ্যুতের দাম প্রতি বছর বৃদ্ধি করে মানুষকে প্রায় শেষ করে দিয়েছে।’
ঠাকুরগাঁও বিএনপির সহ-সভাপতি আল মামুন আলম, সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আমিন, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফসহ বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।