ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক বলছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি ভর্তুকি দিয়ে হলেও দাম সহনীয় রাখার তাগিদ দিয়েছেন। বলেছেন, করোনার সময় তেলের দাম কমে যাওয়ার কারণে সরকার মুনাফায় ছিল। এখন সে টাকা দিয়ে ভর্তুকি দেয়া যায়।
তেলের দাম বাড়ায় পণ্যের উৎপাদন ও পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাবে বলে শঙ্কিত জাপা নেতা বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের জীবন এমনিতেই অতিষ্ঠ। তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় সে জীবন আরও কঠিন হয়ে পড়বে।
রাজধানীর বনানীতে দলীয় কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে এক যোগদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় এই উপনেতা।
আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে আগের রাত থেকে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এরই মধ্যে বাড়তি দাম কার্যকর হয়েছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগ জানিয়েছে, বাড়তি দামে তেল বিক্রি করায় দিনে ২০ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছিল। তবে নতুন দামে ডিজেলে লিটারে ২ টাকার মতো মুনাফা থাকবে।
জি এম কাদের বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়েছে, এই অজুহাতে তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু করোনাকালে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম অনেক কম ছিল, তখন তো দাম কমানো হয়নি। তখন যে পরিমাণ টাকা লাভ হয়েছে, সেই টাকা কোথায় গেল? ভর্তুকি দিয়ে হলেও তেলের দাম সহনীয় রাখতে হবে।’
অনুষ্ঠানে জি এম কাদেরের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব নূরুন্নবী মৃধা।
তাকে স্বাগত জানিয়ে জি এম কাদের বলেন, ‘দেশের মানুষ আবার জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্রক্ষমতায় দেখতে চায়। তাই প্রতিদিন নতুন নতুন মানুষ জাতীয় পার্টির পতাকাতলে যোগ দিচ্ছে।
‘আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে জাতীয় পার্টি হচ্ছে সম্ভাবনাময় রাজনৈতিক শক্তি। তাই বিএনপি ও আওয়ামী লীগ বারবার জাতীয় পার্টিকে ধংস করতে অপচেষ্টা করেও সফল হয়নি।’
অন্যায়ের প্রায়শ্চিত্ত করছে বিএনপি
জাতীয় পার্টির নেতা বলেন, ‘৯১ সালের পর জাতীয় পার্টি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে হামলা-মামলা দিয়ে বিএনপি অন্যায় করেছিল। বর্তমানে তার প্রায়শ্চিত্ত করছে বিএনপি।
‘বিএনপির আমলে জাতীয় পার্টির ওপর যে অত্যাচার করা হয়েছিল, বিএনপি তার কিছুটা স্বাদ পাচ্ছে এখন।’
বিএনপির শাসনামলে দলের প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে চিকিৎসার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেন তার প্রয়াণে দলের হাল ধরা ছোট ভাই।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির আপসহীন নেত্রী মুচলেকা দিয়ে চিকিৎসার জন্য জেলখানার বাইরে আছেন। চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে বারবার সরকারের কাছে আবেদন করছেন। সে ব্যাপারে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই।
‘কিন্তু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জেলখানায় থাকা অবস্থায় জন্ডিসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তখন চিকিৎসকরা জেলখানার বাইরে তার চিকিৎসার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছিলেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও তখন তার চিকিৎসার জন্য দলীয়ভাবে স্টেটমেন্ট দিয়েছিলেন। কিন্তু তখন খালেদা জিয়ার সরকার চিকিৎসার জন্য এরশাদকে জেলখানার বাইরে চিকিৎসা নেয়ার অনুমতি দেয়নি।’
যোগদান অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মনিরুল ইসলাম মিলনসহ দলের কেন্দ্রীয় ও নাটোর জেলার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।