বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শেষ বাচ্চাটিকে বাঁচানোর আকুতি মায়ের

  •    
  • ৪ নভেম্বর, ২০২১ ১৬:২৫

নবজাতকদের বাবা সোহেল রানা বলেন, ‘কত খুশি হয়েছিলাম পাঁচ বছর পর আমাদের সন্তান হলো। আল্লাহ একসঙ্গে পাঁচটি সন্তান দিল। এদের ঘিরে স্বপ্ন দেখছিলাম। এখন আর কিছুই থাকল না।’

এতগুলো সন্তান দিয়ে আল্লাহ আবার কেড়ে নিল। বাচ্চাদের ভিডিও দেখলাম, কেমন শ্বাস নেয়ার চেষ্টা করে করে মারা গেল। শেষ বাচ্চাটি যেন আল্লাহ না নিয়ে যায়।

কান্না জড়ানো কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন কুষ্টিয়ায় একসঙ্গে পাঁচ সন্তানের জন্ম দেয়া মা সাদিয়া খাতুন।

মঙ্গলবার কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ওই পাঁচ সন্তানের জন্ম হয়। তবে মাত্র পাঁচ মাসে জন্ম নেয়া এক ছেলে ও চার মেয়ের মধ্যে বুধবার চারটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শেষ নবজাতকের অবস্থাও সংকটাপন্ন।

যেই সন্তানদের জন্মে হাসি ফুটেছিল কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পান্টি বাজারের সোহেল রানা ও সাদিয়া দম্পতির মুখে, একে একে তাদের মৃত্যুতে যেন শোকে পাথর হয়ে গেছেন তারা।

নবজাতকদের বাবা সোহেল রানা বলেন, ‘কত খুশি হয়েছিলাম পাঁচ বছর পর আমাদের সন্তান হলো। আল্লাহ একসঙ্গে পাঁচটি সন্তান দিল। এদের ঘিরে স্বপ্ন দেখছিলাম। এখন আর কিছুই থাকল না।’

বেলা ৩টার দিকে সোহেল বলেন, ‘দেখে আসলাম বাচ্চাটি (শেষ শিশু) মুখ নড়াচ্ছে। পা নাড়ছে। অন্যগুলোর চেয়ে এটার ভাবসাব ভালো মনে হচ্ছে।’

আল্লাহ যেন শেষ সন্তানটি বাঁচিয়ে দেন তার জন্য সবার কাছে দোয়া চান তিনি।

পান্টি বাজারের দোকানি চঞ্চল হোসেন বলেন, ‘খবরটি শুনলাম মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। সোহেলের একসঙ্গে পাঁচটি বাচ্চা হয়েছে। একটা ছেলে, চারটা মেয়ে। খুব খুশি হয়েছিলাম। পান্টি বাজারে সবার মুখে মুখে ছিল এ কথা।’

‘টিভিতেও এই বাচ্চাদের দেখলাম। পরদিন থেকে দেখছি একে একে মরদেহ আসছে, আর দাফন করছে। এখন তো সবার মুখই মলিন। এলাকার সবাই কষ্ট পেয়েছে। মসজিদে দোয়াও করা হয়েছে একটি হলেও যেন বেঁচে থাকে।’

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের স্ক্যানু ওয়ার্ডের দুটি বেডে ছিল পাঁচ ভাইবোন। এখন সেখানে আছে একজন।

বেলা ১১টার দিকে এই ওয়ার্ডের সামনে কথা হয় চিকিৎসক ওবায়দুল ইসলামের সঙ্গে। শিশু বিশেষজ্ঞ ওবায়দুল কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক।

তিনি জানান, মাতৃগর্ভে জায়গা কম পাওয়ায় বাচ্চাগুলো বাড়তে পারেনি। এ কারণে মাত্র পাঁচ মাসেই তাদের জন্ম হয়। অপরিণত ও কম ওজনের হওয়ায় শিশুগুলো বাঁচতে পারছে না।

তিনি বলেন, ‘এখন যে বেঁচে আছে সেও এত ছোট হয়েছে যে, ঠিকমতো শ্বাস নিতেও পারছে না। সারভাইব করার ক্ষমতাও তার নেই। আমরা সব রকমের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু কী হবে বলতে পারছি না। বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম।’

পান্টির কলেজপাড়ার শ্রমিক সোহেল রানার সঙ্গে ২০১৬ সালের ৩০ জুলাই বহলবাড়িয়া গ্রামের সাদিয়া খাতুনের বিয়ে হয়। পাঁচ বছরের দাম্পত্যজীবনে তাদের কোনো সন্তান হয়নি। অনেক স্থানে চিকিৎসা শেষে মঙ্গলবার কুষ্টিয়া হাসপাতালে একসঙ্গে পাঁচ সন্তানের জন্ম দেন সাদিয়া। তবে বুধবার সকালে, দুপুরে, বিকেলে ও রাতে একটি করে শিশুর মৃত্যু হয়।

এ বিভাগের আরো খবর