বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পতন থামলেও ফেরেনি আস্থা, লেনদেন ছয় মাসের সর্বনিম্ন

  •    
  • ৪ নভেম্বর, ২০২১ ১৫:০৪

গত ২৮ এপ্রিল লেনদেন ছিল ৯৪০ কোটি ৩২ লাখ টাকা। ছয় মাসের বেশি সময় পর ১২২তম কর্মদিবসে বৃহস্পতিবার লেনদেন হলো ১ হাজার ৬৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা।

পুঁজিবাজারে দরপতনের মধ্যে হতাশার আরও একটি দিন পার হলো।

চার কর্মদিবস পর সূচকের সামান্য উত্থান হলেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বস্তিতে ফেরার মতো কিছুই ঘটেনি। যতগুলো কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে, কমেছে তার দেড় গুণের বেশি।

লেনদেনের চিত্র ছিল একেবারেই হতাশাজনক। ছয় মাসের বেশি সময়ে সবচেয়ে কমসংখ্যক শেয়ারের হাতবদল হয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে।

গত ২৮ এপ্রিল লেনদেন ছিল ৯৪০ কোটি ৩২ লাখ টাকা। ছয় মাসের বেশি সময় পর ১২২তম কর্মদিবসে বৃহস্পতিবার লেনদেন হলো ১ হাজার ৬৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা।

একপর্যায়ে মনে হচ্ছিল লেনদেন বুঝি ১ হাজার কোটি টাকার নিচে নেমে যাবে। কিন্তু শেষ সময়ের ক্রয়াদেশে তা আর হয়নি।

দিন শেষে দর বেড়েছে ১৩১টি কোম্পানির, কমেছে ১৯৫টির।

বেলা পৌনে একটার পর ক্রয় চাপে শেষ পর্যন্ত সূচক সামান্য বাড়ে

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা দেবব্রত কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পুঁজিবাজার যখন উত্থানে ছিল, তখন দুর্বল ও লোকসানি কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীরা যে বিনিয়োগ করেছিলেন, তা লোকসানে পরিণত হয়েছে। শেয়ার দর কমে যাওয়ায় সেসব কোম্পানি থেকে এখনও বের হতে পারেননি তারা। বিএসইসি যেসব কোম্পানির বোর্ড পুনর্গঠন করেছে, সেগুলোর শেয়ার দরও ব্যাপকভাবে বেড়ে গিয়েছিল। ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে আসার পর বেশ কিছু কোম্পানিতে উচ্চমূল্যে শেয়ার কিনে আটকা আছেন অনেকে।

‘এখন দেখা যাচ্ছে দর সংশোধনে বিনিয়োগকারীরা আগের মতো লোকসানে শেয়ার বিক্রি করছেন না। তারা অপেক্ষা করছেন দাম বাড়ার। এটা লেনদেন কমার একটি কারণ।’

নতুন করে বিনিয়োগ থেকেও বিনিয়োগকারীরা বিরত আছেন বলে মনে করেন এই পুঁজিবাজার বিশ্লেষক। তিনি বলেন, ‘সূচক ও লেনদেন যখন কমতে থাকে বা বাজার যখন সংশোধনে থাকে, তখন বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ নতুন বিনিয়োগ থেকে সরে এসে বাজার পর্যবেক্ষণে মনোযোগ দিয়ে থাকেন। মূলত এতে আতঙ্কের কিছু নেই। বাজার যখন আবার উত্থানে ফিরবে, তখন স্বাভাবিকভাবেই আবার লেনদেন বাড়বে।’

দিন শেষে সূচক বাড়লেও দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ইঙ্গিত ছিল উল্টো। সে সময় সূচক কম ছিল আগের দিনের চেয়ে ৩৪ পয়েন্ট। অন্যান্য দিনে এই সময়ের পর সূচক আরও কমেছে।

তবে সেখান থেকে বেলা ১টা ৫২ মিনিট পর্যন্ত সূচকের ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। সে সময় সূচকের অবস্থান ছিল আগের দিনের চেয়ে ৩৪ পয়েন্ট বেশি। শেষ ৪০ মিনিটে সেখান থেকে কিছুটা কমে।

সূচক বাড়ায় প্রধান ভূমিকায় ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। আর সূচক ঘুরে দাঁড়ানোয় প্রধান ভূমিকায় ছিল ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি।

চার কর্মদিবস পর সূচক বাড়ায় প্রধান ভূমিকায় ছিল এই ১০টি কোম্পানি

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কোম্পানিটির কাছ থেকে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা কর হিসেবে দাবি করেছে- নিরীক্ষকের এই মত প্রকাশের পর আগের চার কর্মদিবস সূচক পতনে প্রধান ভূমিকায় ছিল এই কোম্পানিটি। আজও শেয়ার দর কমে একপর্যায়ে ৫৮৮ টাকা ১০ পয়সায় নেমে আসে। কিন্তু পরে সেখান থেকে লেনদেন শেষ হয়েছে ৬১৬ টাকা ৪০ পয়সায়।

কোম্পানিটি একাই একসময় ১২ পয়েন্টেরও বেশি সূচক ফেলে দিয়েছিল। দিন শেষে সেটিই আবার সূচক বাড়িয়েছে ৫.০৪ পয়েন্ট।

এই দুটি কোম্পানি ছাড়াও লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট, এনআরবিসি, ওয়ালটন, বেক্সিমকো ফার্মা, রেনাটা, গ্রামীণফোন, ইস্টার্ন ব্যাংক ও হাইডেলবার্গ সিমেন্টের শেয়ার দর বৃদ্ধি সূচক বাড়াতে প্রধান ভূমিকায় ছিল।

এই ১০টি কোম্পানিই সূচকে যোগ করেছে ২২.৮৮ পয়েন্ট।

অপরদিকে সূচক টেনে নামিয়েছে স্কয়ার ফার্মা, ব্র্যাক ব্যাংক, রবি, বাংলাদেশ সাবমেরিন কোম্পানি, ন্যাশনাল লাইফ, বিকন ফার্মা, সিটি ব্যাংক, ওরিয়ন ফার্মা, আইডিএলসি ও মেরিকো।

এই ১০টি কোম্পানির শেয়ারের দর কমায় সূচক থেকে হারিয়ে গেছে ১০.১৪ পয়েন্ট।

বেশিরভাগ শেয়ারের দরপতনের দিন সূচক টেনে নামানোর চেষ্টায় প্রধান ভূমিকায় ছিল এই কোম্পানিগুলো

গত কয়েক দিনের মতোই লেনেদেনে সেরা বস্ত্র খাত। এরপর আছে ব্যাংক, ওষুধ ও রসায়ন, বিবিধ খাত, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, প্রকৌশল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, সিমেন্ট, আর্থিক খাত। বেশির ভাগ খাতেই বেশির ভাগ শেয়ারের দাম কমেছে, সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেন।

দর বৃদ্ধিতে এগিয়ে স্বল্প মূলধনি

বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারের স্বল্পমূলধনি কোম্পানিগুলোর শেয়ার দরেও বেশ আগ্রহ দেখা গেছে। তবে এ খাতের দুর্বল খাতের কোম্পানিগুলোকে দেখা গেছে দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায়। ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে মিথুন নিটিংয়ের ৪.৯৯ শতাংশ। এদিন কোম্পানিটির শেয়অর দর ১৪ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৪ টাকা ৭০ পয়সা।

একই ক্যাটাগরির বিচ হ্যাচারির শেয়ার দর বেড়েছে ৪.৮৪ শতাংশ। শেয়ার দর ২০ টাকা ৬০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ২১ টাকা ৬০ পয়সা।

দর বৃদ্ধির তৃতীয় স্থানে ছিল ‘বি’ ক্যাটাগরির আলহাজ্ব টেক্সটাইল, যার শেয়ারদর বেড়েছে ৪.৭২ শতাংশ। চতুর্থ স্থানে ছিল জেড ক্যাটাগরির মেঘনা পেট, যার শেয়ারদর বেড়েছে ৪.৫৬ শতাংশ।

স্বল্পমূলধনি কোম্পানিগুলোর মধ্যে শেয়ার প্রতি দর ১৬ টাকা দর বেড়েছে আনোয়ার গ্যালভালাইজিংয়ের। কোম্পানিটির শেয়ার দর ৩৮৬ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪০২ টাকা ৫০ পয়সা।

তবে সবচেয়ে বেশি শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে রেকিট বেনকিনজারের, ৭০ টাকা ১০ পয়সা। কোম্পানিটির শেয়ার দর ৫ হাজার ১২ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫ হাজার ৮৩ টাকা।

দর বৃদ্ধির পাশাপাশি দর পতনেও ছিল স্বল্প মূলধনি বেশ কিছু কোম্পানি। দর পতনের দিক দিয়ে শীর্ষে ছিল ‘বি‘ ক্যাটাগরির প্রাইম টেক্স, যার শেয়ার দর কমেছে ৬.৭৮ শতাংশ।

চলতি সপ্তাহে কোম্পানিটি তার শেয়ারধারীদের ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল। এ সংক্রান্ত বোর্ড সভার পর দিন কোম্পানিটির শেয়ার দরে কোনো প্রান্তসীমা ছিল না। সেদিন শেয়ার দর বেড়েছিল ২৬ শতাংশ পর্যন্ত। এরপর টানা দুই দিন কমল।

দর পতনে থাকা জেড ক্যাটাগরির মনোস্পুল পেপারের শেয়ারেদর কমেছে ৪.৪৭ শতাংশ। লোকসানি সাভার রিফ্যাক্টরিজের শেয়ার দর কমেছে ৪.২৩ শতাংশ।

প্রায় সব খাতেই দরপতন

গত সপ্তাহ থেকেই লেনদেনের শীর্ষে বস্ত্র খাত। এদিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে আগের দিনের তুলনায় কমেছে অনেকটাই।

বুধবার এই খাতে লেনদেন ছিল ১৯৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা। সেটি কমে হয়েছে ১৫৫ কোটি ২৩ রাখ টাকা। সবচেয়ে বেশি লেনদেনের খাত হলেও শেয়ারদর বেড়েছে যতগুলোর, কমেছে তার চেয়ে বেশি।

এই খাতের কোম্পানির মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে আলিফ ম্যানুফেকচারিংয়ের দর; ৫.১২ শতাংশ। এছাড়া মিথুন নিটিংয়ের দর ৫ শতাংশ, আলহাজ্ব টেক্সটাইলের দর ৪.৭৩ শতাংশ, ঢাকা ডায়িংয়ের দর বেড়েছে ৪.৩৬ শতাংশ।

দরপতনের শীর্ষ তালিকায় প্রাইম টেক্স ছাড়াও আছে জাহিন স্পিনিংয়ের ৬.২৫ শতাংশ। এছাড়া দুলামিয়া কটনের দর ২.৪৮ শতাংশ, নুরানী টেক্সটাইলের দর ২.৪৬ শতাংশ, রিজেন্ট টেক্সটাইলের দর ২.৪৫ শতাংশ কমেছে।

লেনদেনের শীর্ষে থাকা খাতগুলোর মধ্যে ব্যাংকে আগ্রহ বেড়েছে, কমেছে বাকি প্রায় সবগুলোতে

লেনদেনে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ব্যাংক খাতেও একই দৃশ্য। এই খাতের ৩২টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১১টির, কমেছে ১২টির। ৯টি কোম্পানি দর ধরে রাখতে পেরেছে।

আগের দিনের তুলনায় এই খাতে লেনদেন হয়েছে বেশি। হাতবদল হয়েছে ১৪৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১১৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

এই খাতে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে এনআরবিসির দর, ৭.৩৪ শতাংশ। একক লেনদেন হিসেবেও ব্যাংকটি ছিল শীর্ষে। কোম্পানিটির ৬৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে।

তারপরই আছে আইএফআইসি ব্যাংক। ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি দর ৩০ পয়সা বা ১.৬৫ শতাংশ বেড়েছে। হাতবদল হয়েছে ৩৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা।

তিন কোটি টাকা পর্যন্ত হাতবদল হয়েছে এমন ব্যাংকের সংখ্যা ছিল সাতটি। এরমধ্যে ছয় কোটি ৮ লাখ টাকা হাতবদল হয়েছে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের। শেয়ার দর বেড়েছে দশমিক ৫৮ শতাংশ। চার কোটি ৪৯ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংকের। এদিন ব্যাংকটির শেয়ার দর আগের দিনের মতোই অপরিবর্তিত ছিল ৭ টাকা ৮০ পয়সায়।

এছাড়া তিন কোটি টাকা পর্যন্ত হাতবদল হয়েছে সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংক, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক।

তৃতীয় অবস্থানে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতে ১২টি কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ১৭টির দর। লেনদেন সামান্য বেড়েছে।

আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ১৩৭ কোটি ২৯ লাখ টাকার। সেটি বেড়ে হয়েছে ১৩৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।

এই খাতে সবচেয়ে বেশি দর হারিয়েছে ওয়াটা কেমিক্যাল, যার শেয়ার দর ১০ টাকা ২০ পয়সা বা ৩.৪২ শতাংশ কমেছে। দাম সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে স্যালভো কেমিক্যালের, ৬.১৩ শতাংশ।

লেনদেনের চতর্থ অবস্থানে বিবিধ খাতের অবস্থানের প্রধান কারণ বেক্সিমকো লিমিটেড। এই খাতে মোট লেনদেন হয়েছে ১১২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এর মধ্যে বেক্সিমকোর একা লেনদেন ছিল প্রায় একশ টাকা।

খাতটির ১৪টি কোম্পানির মধ্যে বেড়েছে কেবল দুটির দর। এর মধ্যে বেক্সিমকোর বেড়েছে ৭ টাকা ৪০ পয়সা, আর সিনোবাংলার ৪০ পয়সা। বাকিগুলোর মধ্যে একটি কোম্পানি দর ধরে রাখতে পেরেছে, বেড়েছে বাকি ১১টিরই দর।

এই চারটি খাতেই কেবল ১০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।

খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত লেনদেনের পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে খাদ্য ও আনুষঙ্গিত খাত। এই খাতে মোট লেনদেন হয়েছে ৬৯ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ৬৫ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

এই লেনদেনের মধ্যে খাতের সবচেয়ে আলোচিত কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকোরই শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

সব মিলিয়ে ২০টি কোম্পানির মধ্যে বেড়েছে বেড়েছে ৯টির দর, কমেছে ১০টির। একটির দর ছিল অপরিবর্তিত।

যে খাতগুলোতে কিছুদিন আগেও দিনে দুই থেকে তিনশ কোটি টাকা লেনদেন হতো, সেগুলোতে লেনদেন কমে এসেছে ১০০ কোটির নিচে

উচ্চমূল্যে শেয়ার কিনে আটকে যাওয়া বিমা খাতের বিনিয়োগকারীদের আরও একট বাজে দিন গেল। এপ্রিল-মে মাসে নিয়মিত ছয়শ থেকে সাতশ কোটি টাকা হাতবদল হওয়া খাতটির লেনদেন নেমেছে এসেছে ৬৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকায়।

আগের দিন এই খাতে লেনদেন ছিল ৭৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

এই খাতের ৫১টি কোম্পানির মধ্যে বেড়েছে ২১টির দর, কমেছে ২৬টির, অপরিবর্তিত ছিল বাকি ৪টির।

সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানিটি ছিল সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্স, যার শেয়ারদর বেড়েছে ৩.৯০ শতাংশ। আর সবচেয়ে বেশি দর পতন হওয়া কোম্পানিটি ছিল ঢাকা ইন্স্যুরেন্স, যার শেয়ারদর কমেছে ২.৯৫ শতাংশ।

জীবন বিমা খাতে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৩.০৮ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি দর হারিয়েছে মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ২.৯৫ শতাংশ।

মাস খানেক আগে নিয়মিত আড়াইশ থেকে তিনশ কোটি টাকা লেনদেন হতে থাকা প্রকৌশল খাতে লেনদেন নেমে এসেছে ৬০ কোটি ৭১ লাখ টাকায়। আগের দিন খাতটিতে লেনদেন ছিল ৬৯ কোটি ২৯ রাখ টাকা।

এই খাতের ১৮টি কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ১৯টির দর।

জ্বালানি খাতে কেপিসিএলের দুটি ও সামিট পাওয়ারের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে চুক্তি আটকে থাকার প্রভাবে দুটি কোম্পানির শেয়ারদর কমছেই। সঙ্গে কমছে অন্যগুলোরও।

লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৮টির, কমেছে ১৩টির। দুটির দর ছিল অপরিবর্তিত।

এ খাতের সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানি ছিল জিবিবি পাওয়ার, যার শেয়ার প্রতি দর ১ টাকা ৬০ পয়সা বা ৩.৯৭ শতাংশ বেড়েছে।

আর দর পতন হওয়া কোম্পানির তালিকায় ছিল ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস, যার শেয়ার দর হারিয়েছে ৮২ টাকা বা ৩.২৯ শতাংশ।

এ খাতের মোট লেনদেন হয়েছে ৪৭ কোটি ২৬ লাখ টাকা। আগের দিন হাতবদল হয় ৪৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার।

সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে লাফার্জ হোলসিম সিমেন্টের দর যখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল, সে সময় সিমেন্ট খাতের লেনদেন বেড়ে পৌনে তিনশ কোটি টাকা হয়ে যায়। সেটি এবার নেমে এসেছে ৪৭ কোটি ২৬ লাখ টাকায়।

এই লেনদেন অবশ্য আগের দিনের চেয়ে বেশি। সেদিন লেনদেন ছিল ৩৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

লাফার্জের দর ১১০ টাকা ছাড়িয়ে পরে ৭০ টাকার ঘরে নেমে আসার পর আবার টানা দুই দিন বেড়ে ৮০ টাকার ঘর ছাড়িয়ে গেছে।

আর্থিক খাতেও লেনদেন ক্রমেই কমছে। এই খাতে হাতবদল হয়েছে মোট ৪৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। মাস দুয়েক আগে দিনে আড়াইশ, কোনো কোনো দিন তিনশ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায় লেনদেন।

এই খাতে কেবল ৩টি কোম্পানির দর বেড়েছে, কমেছে ১৭টির। একটির লেনদেন স্থগিত, অপরিবর্তিত ছিল বাকি দুটির দর।

তবে দরপতনের দিনে দুটি খাতে বেশিরভাগ কোম্পানি বা ইউনিটের দাম বেড়েছে।

তথ্য প্রযুক্তি খাতের ১১টি কোম্পানির মধ্যে বেড়েছে ৮টির দর, কমেছে ৩টির। লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ২১ কোটি ১২ লাখ টাকা।

আগের দিন মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে এলআর গ্লোবাল ওয়ান ইউনিটপ্রতি ১ টাকা ৫১ পয়সা লভ্যাংশ ঘোষণার পর গোটা খাতে লেনদেন বেড়ে ২৫ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। পরের দিনেই তা কমে ১০ কোটি ৭০ লাখে নেমে এসেছে।

এই খাতে ১৪টির ইউনিটমুল্য ১০ থেকে ২০ পয়সা করে বেড়েছে, কমেছে ১৩টির ইউনিটমূল্য। অপরিবর্তিত ছিল ৯টির।

সূচক ও লেনদেন

ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৮ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৯০৬ পয়েন্টে।

শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ১ দশমিক ০২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৬২ পয়েন্টে।

বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ ‍সূচক ১৫ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬০১ পয়েন্টে।

ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৬৮ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা।

এ বিভাগের আরো খবর