কাঠের উঁচু মঞ্চে রাখা হয়েছে কয়েকটি সাপ। এদের ফণা তুলে রাখতে হবে। যার সাপ বেশি সময় ধরে ফণা তুলে থাকবে, তিনি হবেন বিজয়ী। এমন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে।
স্থানীয়দের কাছে এটি ‘ঝাপান খেলা’ নামে পরচিত। উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চাঁপাইগাছি বাজারে হয়ে গেল এই প্রতিযোগিতা।
গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ সাপ খেলা দেখতে ভিড় করেন উৎসুক মানুষ।
প্রতিযোগিতায় ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, পাবনা, মাগুরাসহ বিভিন্ন জেলার সাপুড়েদের ১২টি দল অংশ নেয়।
চাঁপাইগাছি বাউল ক্লাবের আয়োজনে লিটন প্রামাণিকের সভাপতিত্বে এ সাপ খেলার প্রধান অতিথি ছিলেন জগন্নাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবদুল্লাহ আল বাকী বাদশা।
বিভিন্ন এলাকা থেকে সাপুড়েরা আগেই আসেন বাজারে। একেক জনের কাছে ছিল ৮-১০টি করে সাপের বক্স। কেউ আবার সাপ আনেন মাটির পাত্রে করে। ১২টি সাপুড়ে দলে ছিল শতাধিক গোখরা সাপ।
প্রতিযোগিতা শুরুর পর এক এক জন সাপুড়ে বাদ্য বাজিয়ে, নেচে-গেয়ে সাপকে উত্তেজিত করে রাখার চেষ্টা করেন। অন্যদিকে বাকি প্রতিযোগীরা মন্ত্র পড়তে থাকন, যাতে সেটি ফণা নামিয়ে ফেলে।
প্রথম পর্ব শেষে দ্বিতীয় পর্বে যান তিনজন সাপুড়ে। চূড়ান্ত পর্বে ২৪ ইঞ্চি উঁচু ফণা তুলে প্রথম পুরস্কার একটি এলইডি টেলিভিশন জিতে নেন রাজবাড়ীর পাঁচু সাপুড়ে। আর দ্বিতীয় পুরস্কার হিসেবে তিন হাজার টাকা পান দুলু সাপুড়ে।
দর্শকরা করতালি দিয়ে উৎসাহ বাড়ান প্রতিযোগীদের। এ আয়োজনে দর্শক সারিতে বাদ ছিলেন না নারীরাও।
ঝাপান খেলার আয়োজক লিটন প্রামাণিক বলেন, ‘গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যকে বর্তমান প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতেই এ আয়োজন। কালের বিবর্তনে লোকাচারের অনেক কিছুই এখন হারিয়ে গেছে। কিন্তু সেই মধ্যযুগ হয়ে একবিংশ শতাব্দীর মানুষের কাছে এখনও সমান জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে এটি।’
আগামীতেও এই খেলার আয়োজন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন জগন্নাথপুরের ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল বাকী বাদশা।