বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আইসিটি অ্যাক্টে মামলা হলেই সাংবাদিক গ্রেপ্তার নয়: আইনমন্ত্রী

  •    
  • ৪ নভেম্বর, ২০২১ ১৩:৩২

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি আইন। এটি বাক্‌স্বাধীনতা বা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করার জন্য এ আইন করা হয়নি, এটা বারবার বলব। এটাকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করার জন্য যারা অপব্যবহার করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমি এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি।’

ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে (আইসিটি অ্যাক্ট) মামলা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যাতে সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করা না হয় সে বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বললেন, এতে সায় দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

সচিবালয়ে দুপুরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের বিষয়ে একটি কথা আমি পরিষ্কার বলতে চাই। আমরা বড় কঠোর হবো এই অ্যাক্টের অপব্যবহারের বিষয়ে। আমি এটা পরিষ্কার করতে চাই, যেই এটার অপব্যবহার করবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও আমরা ব্যবস্থা করছি।

‘এর কারণ হচ্ছে, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি আইন। এটি বাক্‌স্বাধীনতা বা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করার জন্য এ আইন করা হয়নি, এটা বারবার বলব। এটাকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করার জন্য যারা অপব্যবহার করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমি এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি।’

আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এই অ্যাক্টে মামলা করলেই যে মামলা নিয়ে নেবে তা হবে না। এটা আইসিটি অ্যাক্টের একটি ধারা আছে সেই অনুযায়ী একটি সেল আছে সেই সেলকে সন্তুষ্ট হতে হবে যে এটা মামলা হয়। তারপরেই মামলা হবে।

‘এই মামলা যখন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে করা হবে, তাৎক্ষণিক যেন তাদের গ্রেপ্তার করা না হয় সে ব্যাপারেও আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাকে বলেছেন যে এভাবে হবে না।’

তথ্য যোগাযোগপ্রযুক্তি আইন-২০০৬-এর বিতর্কিত ৫৭ ধারাসহ কয়েকটি ধারা বিলুপ্ত করে ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সংসদে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হয়।

মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন আর্টিকেল-১৯-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, এ আইনে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ১৯৮টি মামলায় ৪৫৭ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার মধ্যে সংবাদকর্মীর সংখ্যা ৭৫।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগের অভিযোগে আইনটির চারটি ধারা (২৫, ২৮, ২৯, ৩১) বাতিল চেয়ে আসছেন সাংবাদিক, আইনজীবী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘আমাদের যখনই ডিজিটাল অ্যাক্টে মামলা হয়, আমাদের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে পরামর্শ করেন। যখন এটি প্রমাণিত হয় যে এই অ্যাক্টে মামলা আসতে পারে তখনই এটি আমলে নেয়া হয়। নজরদারি বাড়ানোর জন্য আইনমন্ত্রী যেটা বলেছেন, আমি এটা সংশ্লিষ্টদের বলে দিয়েছি।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যেই সংক্ষুব্ধ হয় সেই মামলা করতে পারেন। পুলিশ একটি প্রাথমিক এনকোয়েরি করে সেটি আমলে নেয়। এটাই নিয়ম।’

কী আছে ২৫, ২৮, ২৯, ৩১ ধারায়

ডিজিটাল নিরাপত্তার আইনের ২৫ ধারায় ‘আক্রমণাত্মক, মিথ্যা বা ভীতি প্রদর্শক, তথ্য উপাত্ত প্রেরণ, প্রকাশ ইত্যাদি’ অপরাধ ও দণ্ড প্রসঙ্গে বলা হয়েছে-

২৫। (১) যদি কোনো ব্যক্তি ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ডিজিটাল মাধ্যমে-

(ক). ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে, এমন কোনো তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ করেন, যাহা আক্রমণাত্মক বা ভীতি প্রদর্শক অথবা মিথ্যা বলিয়া জ্ঞাত থাকা সত্ত্বেও কোনো ব্যক্তিকে বিরক্ত, অপমান, অপদস্থ বা হেয় প্রতিপন্ন করিবার অভিপ্রায়ে কোনো তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ, প্রকাশ বা প্রচার করেন, বা

(খ). রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুণ্ন করিবার, বা বিভ্রান্তি ছড়াইবার বা তদুদ্দেশ্যে, অপপ্রচার বা মিথ্যা বলিয়া জ্ঞাত থাকা সত্ত্বেও, কোনো তথ্য সম্পূর্ণ বা আংশিক বিকৃত আকারে প্রকাশ বা প্রচার করেন বা করিতে সহায়তা করেন,

তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।

(২). যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৩ (তিন) বৎসর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ৩ (তিন) লাখ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

(৩). যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অপরাধ দ্বিতীয় বার বা পুনঃপুন সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ডে বা অনধিক ১০ (দশ) লাখ টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

এই আইনের ২৮ ধারায় ‘ওয়েবসাইট বা কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে ধর্মীয় মূল্যবোধ বা অনুভূতিতে আঘাত করে এমন কোনো তথ্য প্রকাশ, সম্প্রচার ইত্যাদি’ অপরাধ ও দণ্ড প্রসঙ্গে বলা হয়েছে,

২৮। (১). যদি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে ধর্মীয় মূল্যবোধ বা অনুভূতিতে আঘাত করিবার বা উসকানি প্রদানের অভিপ্রায়ে ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা প্রচার করেন বা করান, যাহা ধর্মীয় অনুভূতি বা ধর্মীয় মূল্যবোধের উপর আঘাত করে, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।

(২). যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বছর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ১০ (দশ) লাখ টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

(৩). যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অপরাধ দ্বিতীয় বার বা পুনঃপুন সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ১০ (দশ) বছর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ২০ (বিশ) লাখ টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

আইনের ২৯ ধারায় ‘মানহানিকর তথ্য প্রকাশ, প্রচার, ইত্যাদি’ অপরাধ ও দণ্ড প্রসঙ্গে বলা হয়েছে,

২৯। (১). যদি কোনো ব্যক্তি ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে Penal Code (Act XLV of 1860) এর section 499 এ বর্ণিত মানহানিকর তথ্য প্রকাশ বা প্রচার করেন, তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩ (তিন) বৎসর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

(২). যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অপরাধ দ্বিতীয় বার বা পুনঃপুন সংঘটন করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি অনধিক ৫ (পাঁচ) বছর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ১০ (দশ) লাখ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩১ ধারায় ‘আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো, ইত্যাদির অপরাধ ও দণ্ড’ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে,

৩১। (১). যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইট বা ডিজিটাল বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন বা করান, যাহা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শ্রেণি বা সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা বা বিদ্বেষ সৃষ্টি করে বা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে বা অস্থিরতা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে অথবা আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটায় বা ঘটিবার উপক্রম হয়, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।

(২). যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৭ (সাত) বছর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লাখ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

(৩). যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অপরাধ দ্বিতীয় বার বা পুনঃপুন সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ১০ (দশ) বছর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ১০ (দশ) লাখ টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

এ বিভাগের আরো খবর