বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জাহাজের ঢেউয়ে গ্রাম বিলীনের শঙ্কা

  •    
  • ৪ নভেম্বর, ২০২১ ১৪:৩০

নলছিটি উপজেলার কুলকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আখতারুজ্জামান বাচ্চু বলেন, ‘এলপি গ্যাসবাহী জাহাজের গতি নিয়ন্ত্রণে না থাকায় ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে, তবে সুগন্ধা নদীর সরই অঞ্চলটি ভাঙন রোধে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে একটি প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’

নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের কাছে আতঙ্কের নাম ভাঙন। বর্ষাকালে স্রোতের তোড়ে নদীভাঙন হলেও শীত শুরুর সময়েও ভাঙছে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার কুলকাঠি ইউনিয়নের সরই গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা।

বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে সরই গ্রামের শতাধিক পরিবার। কেউ কেউ অন্য জায়গায় জমি কিনে বাড়ি বানিয়ে থাকলেও নিম্নবিত্তরা অসহায় হয়ে পড়েছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বরিশাল-খুলনা নৌপথের ঝালকাঠি অংশে এলপি গ্যাস বহনকারী জাহাজের ঢেউয়ের কারণেই সুগন্ধার শাখা নদীপাড়ের সরই গ্রামের ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ফসলের ক্ষেত নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। এ বছর তা ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে।

সরই গ্রামের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক আব্দুল জব্বার তালুকদার বলেন, ‘প্রতি বছর সুগন্ধা নদীর দক্ষিণ পাড় ভাঙতেছে। নদীর পাড় থেকে গত কয়েক বছরে প্রায় ৬০টি পরিবার স্থানান্তরিত হয়েছে।’

একই এলাকার নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘অনেকে নিজেদের সবটুকু ভিটে মাটি হরিয়ে রাস্তার পাশে সরকারি জমিতে ঘর তুলে বসবাস করতেছে। এমনভাবে ভাঙতে থাকলে আমার নিজের যতটুকু জমি আছে, তা আগামী এক-দুই মাসের মধ্য নদীগর্ভে চলে যাবে।’

অবসরপ্রাপ্ত তহসিলদার হাজি আব্দুল হক তালুকদার বলেন, ‘যে জায়গাটায় এককালে আমি অনেক বসতঘর দেখেছি সেখানে এখন কচুরিপানা নদীতে ভাসে। নদী এখন আমার বাড়ির নিকটে চলে আসছে। আমি হয়তো ভবিষ্যতে নিজ ভিটায় থাকতে পারব না।’

নিপা নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘নদী এখন আমার ঘরের পাশে। এলপি গ্যাস কোম্পানির জাহাজ এত গতিতে চালায় মনে হয় তুফানের মতো। জাহাজগুলো যখন যায় আমাগো ঘর কেঁপে ওঠে। এতে ভাঙনের তীব্রতা দিন দিন বাড়তেছে।’

শীত শুরুর সময়েও ভাঙছে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার কুলকাঠি ইউনিয়নের সরই গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা। ছবি: নিউজবাংলা

নদীপাড়ের আরেক বাসিন্দা সুখী বেগম বলেন, ‘ছোট বাচ্চা দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখি, যাতে নদী পাড়ে না যায়। রাতেও ঘুম আসে না। কখন যেন নদীতে বাড়িঘর ভেসে যায়।’

কুলকাঠি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য বেল্লাল হোসেন মোল্লা বলেন, ‘সুগন্ধা নদী পাড়ে থাকা সরাই গ্রামের ভাঙনের কারণে আমার অনেক স্বজনই তাদের বাপ-দাদার বাড়ির চিহ্নটুকু রাখতে পারেনি। আমরা ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে এবং আমাদের সংসদ সদস্যকে অবগত করেছি। কিন্তু হচ্ছে, হবে বলে আজ পর্যন্ত ভাঙন রোধে কোনো সুরাহা পাইনি।’

নলছিটি উপজেলার কুলকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আখতারুজ্জামান বাচ্চু বলেন, ‘এলপি গ্যাসবাহী জাহাজের গতি নিয়ন্ত্রণে না থাকায় ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে, তবে সুগন্ধা নদীর সরই অঞ্চলটি ভাঙন রোধে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কাছে একটি প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’

ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিব হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরই গ্রামটি আমরা ইতোমধ্যে পরিদর্শন করেছি। ওখানে আমাদের প্রাথমিক জরিপ সম্পাদনা করা হয়েছে। জরিপ শেষে একটি ডিজাইন ডাটা করা হবে।

‘ডিজাইন ডাটা পেলে ওখানে ডিপিপি কার্যক্রম শুরু করা হবে। ডিপিপি কার্যক্রম অনুমোদন পেলে আমরা ওখানে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারব।’

এ বিভাগের আরো খবর