বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রপ্তানিতে নতুন আশা সেবা খাত

  •    
  • ৩ নভেম্বর, ২০২১ ২৩:১১

১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া চলতি অর্থবছরে সেবা খাত থেকে ৭৫০ কোটি (৭.৫ বিলিয়ন) ডলার বিদেশি মুদ্রা আয়ের লক্ষ্য ধরেছে সরকার। এর মধ্যে প্রথম দুই মাস জুলাই-আগস্টে আয়ের লক্ষ্য ছিল ১১১ কোটি ৩৬ লাখ ৬০ হাজার ডলার। আয় হয়েছে ১১৩ কোটি ৬ লাখ ৭০ হাজার ডলার। গত বছরের একই সময়ে আয় হয়েছিল ৮৭ কোটি ৮৫ লাখ ৮০ হাজার ডলার।

পণ্য রপ্তানির মতো বাংলাদেশে সেবা রপ্তানির পালেও হাওয়া লেগেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) সেবা রপ্তানি থেকে ১১৩ কোটি ৬ লাখ ৭০ হাজার ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ। বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ৭০ পয়সা) টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ৯ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা।

এই আয় গত বছরের জুলাই-আগস্টের চেয়ে প্রায় ২৯ শতাংশ বেশি। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ বেশি।

দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ-এর সভাপতি ফারুক হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পণ্য রপ্তানির ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে সেবা খাতের রপ্তানিতে। পণ্য রপ্তানি বাড়লে সেবা খাতের রপ্তানি বাড়বে-এটাই স্বাভাবিক। কেননা, এক খাত অন্য খাতের সঙ্গে পুরোপুরি সম্পর্কিত এবং পরস্পর নির্ভরশীল।’

আগামী দিনগুলোতেও পণ্য রপ্তানির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সেবা খাতের রপ্তানি বাড়বে এমন আশার কথা শোনান তিনি।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের চার মাসের (জুলাই-অক্টোবর) পণ্য রপ্তানির তথ্য প্রকাশ করলেও সেবা খাতের তথ্য প্রকাশ করেছে দুই মাসের। ইপিবি অবশ্য বরাবরই সেবা খাতের রপ্তানির তথ্য পরে প্রকাশ করে থাকে।

গত ২০২০-২১ অর্থবছরে পণ্য ও সেবা রপ্তানি থেকে মোট চার হাজার ৫৩৬ কোটি ৭২ লাখ (৪৫.৩৭ বিলিয়ন) ডলার আয় করে বাংলাদেশ। এর মধ্যে পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয় ৩৮.৭৬ বিলিয়ন ডলার; প্রবৃদ্ধি হয় ১৫ দশমিক ১০ শতাংশ। সেবা খাত থেকে আসে ৬.৬০ বিলিয়ন ডলার; বেড়েছিল ২৫ শতাংশের মতো।

চলতি অর্থবছরে সেবা খাত থেকে ৭৫০ কোটি (৭.৫ বিলিয়ন) ডলার বিদেশি মুদ্রা আয়ের লক্ষ্য ধরেছে সরকার। এর মধ্যে প্রথম দুই মাস জুলাই-আগস্টে আয়ের লক্ষ্য ছিল ১১১ কোটি ৩৬ লাখ ৬০ হাজার ডলার। আয় হয়েছে ১১৩ কোটি ৬ লাখ ৭০ হাজার ডলার। গত বছরের একই সময়ে আয় হয়েছিল ৮৭ কোটি ৮৫ লাখ ৮০ হাজার ডলার। এ হিসাবে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে দেড় শতাংশের বেশি।

ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, জুলাই-আগস্টে মোট রপ্তানি আয়ের মধ্যে ১১১ কোটি ২৩ লাখ ৫০ হাজার ডলারই এসেছে সরাসরি সেবা খাত থেকে। অর্থাৎ মোট রপ্তানি আয়ের ৯৮ দশমিক ৩৮ শতাংশই এসেছে সরাসরি সেবা খাত থেকে। বাকিটা দেশের বন্দরগুলোতে পণ্যবাহী জাহাজগুলোর কেনা পণ্য ও সেবা এবং মার্চেন্টিংয়ের অধীনে পণ্য বিক্রির আয়।

কোনো অনাবাসীর কাছ থেকে পণ্য কিনে একই পণ্য কোনো অনাবাসীর কাছে বিক্রি করাকে মার্চেন্টিং বলে। এই প্রক্রিয়ায় মোট বিক্রি থেকে মোট ক্রয় বাদ দিয়ে নিট মার্চেন্টিং রপ্তানি আয় হিসাব করা হয়।

দেশের স্থল, সমুদ্র বা বিমানবন্দরে বিদেশি পরিবহনগুলো যেসব পণ্য ও সেবা- যেমন জ্বালানি তেল ও মেরামত সেবা- কিনে থাকে সেগুলোকে সেবা খাতের আওতায় ধরা হয়েছে।

জুলাই-আগস্টে সেবা খাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আয় হয়েছে সরকারি পণ্য ও সেবা রপ্তানি থেকে। এই উপখাত থেকে এসেছে ৩৭ কোটি ১৪ লাখ ডলার।

অন্য উপখাতগুলোর মধ্যে ‘অন্যান্য ব্যবসায় সেবা’ থেকে এসেছে ১৬ কোটি ২৯ লাখ ডলার। টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি থেকে আয় হয়েছে ৯ কোটি ৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার।

বিভিন্ন ধরনের পরিবহন সেবা (সমুদ্র, বিমান, রেল ও সড়ক) থেকে ২০ কোটি ৪২ লাখ ৪০ হাজার ডলার আয় হয়েছে।

আর্থিক সেবা খাত থেকে ১ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার এবং ভ্রমণ সেবা উপখাত থেকে ৩ কোটি ৪২ লাখ ২০ হাজার ডলার আয় হয়েছে।

২০১৯-২০ অর্থবছরে বিদেশে বিভিন্ন সেবা বিক্রি করে ৬১৩ কোটি ১৯ লাখ ডলার আয় করেছিল বাংলাদেশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এই খাত থেকে আসে ৬৩৫ কোটি ডলারের বিদেশি মুদ্রা। আর ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এসেছিল ৪৩৪ কোটি ডলার।

সেবা খাতের রপ্তানি আয় বাড়াতে সেবা রপ্তানি ও ফ্রিল্যান্সারদের আয় দেশে আনা আরও সহজ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন সেবা রপ্তানিকারকরা আন্তর্জাতিক মার্কেট প্লাটফর্মের সঙ্গে মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট খুলতে পারছেন। আবার অন্য দেশের লাইসেন্সপ্রাপ্ত পেমেন্ট গেটওয়েতে অনানুষ্ঠানিক হিসাব (নোশনাল অ্যাকাউন্ট) খোলার সুযোগ পাচ্ছেন।

সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক মার্কেট প্লাটফর্ম কিংবা বিদেশি পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে পাওয়া আয় প্রথমে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকের ‘নস্ট্রো’ হিসাবে জমা হবে। এরপর ব্যাংক সেবা প্রদানকারী গ্রাহকের হিসাবে তা জমা করবে। গ্রাহকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের পাশাপাশি স্থানীয় ডিজিটাল ওয়ালেটেও অর্থ জমা করা যাবে।

গ্রাহক চাইলে প্রযোজ্য অংশ ইআরকিউ হিসাবে জমা করতে পারবেন। সব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কর পরিশোধের বিধান মেনে চলতে হবে। আর সেবা রপ্তানির চার মাসের মধ্যে আয় দেশে আনার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

এ বিভাগের আরো খবর